ডেঙ্গু জ্বর হলে যেসব লক্ষণ প্রকাশ পায়, চিকিৎসকের সতর্কতা
০৯ নভেম্বর, ২০২৫, 2:40 PM
NL24 News
০৯ নভেম্বর, ২০২৫, 2:40 PM
ডেঙ্গু জ্বর হলে যেসব লক্ষণ প্রকাশ পায়, চিকিৎসকের সতর্কতা
দেশে বর্তমানে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েই চলেছে। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা, ফলে সামান্য জ্বর হলেও অনেকেই আতঙ্কিত হচ্ছেন। তবে প্রতিটি জ্বরই ডেঙ্গু নয় তাই সঠিক ধারণা ও সচেতনতা এখন অত্যন্ত জরুরি। চিকিৎসকেরা বলছেন, ডেঙ্গুকে অবহেলা বা ভুল ব্যবস্থাপনা অনেক সময় বড় বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
জ্বর মানেই ডেঙ্গু নয়
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহর মতে, ডেঙ্গুর মৌসুমে জ্বর হলে তা গুরুত্ব সহকারে দেখা উচিত। অনেক ক্ষেত্রে প্রাথমিক পর্যায়ে জ্বরকে গুরুত্ব না দেওয়ায় রোগীর অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। যদি জ্বরের সঙ্গে সর্দি-কাশি, প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া বা অন্য কোনো উপসর্গ থাকে, তা অন্য অসুখও হতে পারে তবুও সতর্ক থাকা জরুরি।
ডেঙ্গুর সাধারণ উপসর্গ : ডেঙ্গু জ্বরে সাধারণত যেসব লক্ষণ দেখা যায় এগুলো হলো:
উচ্চমাত্রার জ্বর (১০১–১০২ ডিগ্রি ফারেনহাইট)
মাথাব্যথা ও চোখের পেছনে ব্যথা
সারা শরীরে পেশি ও জয়েন্টে ব্যথা
গ্ল্যান্ড ফুলে যাওয়া
ত্বকে লালচে দাগ বা র্যাশ
সব উপসর্গ একসঙ্গে নাও দেখা দিতে পারে, তবে যেকোনো একটি থাকলেও সতর্ক হওয়া উচিত।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ বিভাগের পরিচালক ডা. সানিয়া তাহমিনার মতে, ডেঙ্গুর সময় শরীরে অতিরিক্ত চাপ দেয়া সম্পূর্ণ নিষেধ। পর্যাপ্ত বিশ্রামই রোগীকে দ্রুত সুস্থ হতে সাহায্য করে। ডেঙ্গুতে পানিশূন্যতা হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। তাই ডাবের পানি, লেবুর শরবত, ফলের রস, স্যালাইনসহ বিভিন্ন তরল খাবার খাওয়া উচিত। এগুলো শরীরের হারানো পানি ও ইলেকট্রোলাইটের ঘাটতি পূরণে সহায়তা করে।
যেসব ওষুধ খাওয়া যাবে না
ডেঙ্গু রোগীর ক্ষেত্রে—
অ্যাসপিরিন
আইবুপ্রোফেন
অন্য ব্যথানাশক জাতীয় NSAID ওষুধ
এসব ওষুধ রক্তপাতের ঝুঁকি বাড়ায়।
শুধুমাত্র প্যারাসিটামল খাওয়া নিরাপদ তাও দিনে চারটির বেশি নয়। কারও যদি লিভার, কিডনি বা হৃদরোগ থাকে, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
কখন হাসপাতালে যেতে হবে: ডেঙ্গু রোগীকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়—
ক্যাটাগরি A : হালকা অবস্থা
শুধু জ্বর
কোনো জটিলতা নেই
বাসায় থেকেই বিশ্রাম ও পর্যাপ্ত পানি পানে সুস্থ হওয়া যায়।
ক্যাটাগরি B : মাঝারি জটিলতা
পেটে ব্যথা
বমি
খাবারে অরুচি
হাসপাতালে ভর্তি হওয়া জরুরি।
ক্যাটাগরি C : গুরুতর অবস্থা
রক্তক্ষরণ
অঙ্গপ্রত্যঙ্গের কার্যকারিতা কমে যাওয়া
শক সিনড্রোম
তৎক্ষণাৎ হাসপাতাল ও আইসিইউ সাপোর্ট প্রয়োজন হতে পারে।
জ্বরকে অবহেলা করা যাবে না। এমনকি এই সময় কোনও জ্বর আসলেই চিকিৎসকের পরমর্শ নেয়া উচিত। ডেঙ্গু হলে দ্রুত চিকিৎসা নিতে হবে।অবস্থা বুঝে হাসপাতালে যেতে হবে। ডেঙ্গু হলে পর্যাপ্ত বিশ্রাম করুণ। ভয় না পেয়ে প্রচুর তরল গ্রহণ এবং ওষুধ ব্যবহারে সতর্কতা এই কয়েকটি নিয়ম মেনে চললে ডেঙ্গুর ঝুঁকি অনেকটাই কমে।
সূত্র : বিবিসি