ঢাকা ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম
সাতক্ষীরায় শিশু সন্তানকে পুড়িয়ে মারার পর মাকে পিটিয়ে হত্যা নবীনগরে সুফিয়াবাদ ফাজিল মাদ্রাসায় পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের আমন্ত্রণে ঢাকা সফরে রাজি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে আমরা এখন বেশি শক্তিশালী: ড. ইউনূস কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা নেই : ডিএমপি কমিশনার ৪০৮ আরোহী নিয়ে ভারতে জরুরি অবতরণ করল বিমান বাংলাদেশের ফ্লাইট সুন্দর অভিজ্ঞতা নিয়ে ফিরেছি: মিম সাফজয়ী নারী ফুটবল দলসহ ১৮ ব্যক্তিকে একুশে পদক তুলে দিলেন প্রধান উপদেষ্টা যুক্তরাজ্যে ইসলামবিদ্বেষী ঘৃণার রেকর্ডসংখ্যক অভিযোগ মা হচ্ছেন অভিনেত্রী স্বাগতা

গ্রাম পুলিশদের বেতন বাড়ানোর প্রস্তাব

#

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫,  2:09 PM

news image

গ্রাম পুলিশের বেতন-ভাতা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছেন চার জেলার ডিসি। প্রস্তাবের পক্ষে তারা বলেছেন, বাজারমূল্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তাদের বেতন-ভাতা বাড়ানো দরকার। বেতন-ভাতা সম্মানজনক পর্যায়ে উন্নীত করা হলে তাদের জীবনমানের উন্নয়ন হবে। গ্রাম পুলিশের বেতন নিয়ে অনেক বৈষম্য রয়েছে। গ্রাম পুলিশ বাংলাদেশের গ্রামীণ সমাজ এবং একটি গ্রামকে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা প্রদান করে থাকে। বর্তমানে বাংলাদেশের ৪ হাজার ৫৭৬টি ইউনিয়ন পরিষদে ১০ জন করে গ্রাম পুলিশ রয়েছে। বাংলাদেশের প্রতিটি ইউনিয়নে ১ জন দফাদার এবং সর্বমোট ৯ জন মহল্লাদার রয়েছে।বাংলাদেশ গ্রাম পুলিশের বেতন ভাতা খুবই সীমিত। বাংলাদেশের প্রত্যেকটি সরকারি চাকরিতে বেতন স্কেলের ভিত্তিতে মাসিক বেতন ভাতা প্রদান করা হয়। তবে বাংলাদেশ গ্রাম পুলিশের কোনো বেতন স্কেল নেই। জানা গেছে, বর্তমানে বাংলাদেশ গ্রাম পুলিশের একজন দফাদার প্রতি মাসে ৭ হাজার টাকা এবং একজন মহল্লাদার প্রতি মাসে ৬ হাজার ৫০০ টাকা বেতন পেয়ে থাকেন। গ্রাম পুলিশের প্রত্যেক সদস্যদের যে নাম বা উপাধিতে সম্ভোধন করা হোক না কেন তারা স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) অধ্যাদেশ ১৯৮৩ এর তপশিল-১ এর ২ অংশে বর্ণিত ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন এবং কর্তব্য পালন করবেন।

গ্রাম পুলিশের দায়িত্ব ও কর্তব্য

১। দিনে-রাতে ইউনিয়নের পাহারা ও টহলদারী করা।

২। অপরাধের সংগে সংশ্লিষ্ট সকল বিষয় অনুসন্ধান ও দমন করা এবং অপরাধীদের গ্রেপ্তার করতে সাধ্যমত পুলিশকে সহায়তা করা।

৩। চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন পরিষদকে সরকারি দায়িত্ব পালনে সহায়তা করা।

৪। অন্য নির্দেশ না থাকলে প্রতি ১৫ দিন অন্তর এলাকার অবস্থা সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে সহায়তা করা।

৫। ইউনিয়নের খারাপ চরিত্রের লোকদের গতিবিধি লক্ষ্য করা এবং মাঝে মাঝে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অবহিত করা। পার্শ্ববর্তী এলাকা হতে আগত কোনো সন্দেহভাজন ব্যক্তির উপস্থিতি সম্পর্কে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অবহিত করা।

৬। ইউনিয়নে লুকিয়ে থাকা কোনো ব্যক্তি, যার জীবন ধারণের জন্য প্রকাশ্য কোনো আয় নেই বা তার নিজের পরিচয় সম্পর্কে সন্তোষজনক কোনো জবাব দিতে পারে না, এমন লোক সম্পর্কে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নিকট রিপোর্ট প্রধান করা।

৭। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে সে সকল বিষয়ে অবহিত করা, যা বিরোধ, দাঙ্গা-হাঙ্গামা বা তুমূল কলহ সৃষ্টি করতে এবং জনগণের শান্তি বিঘ্নিত করতে পারে।

৮।ইউনিয়নে নিম্নলিখিত অপরাধ সংগঠন বা সম্পাদনের অভিপ্রায় সম্পর্কে কোনো তথ্য অবহিত হলে তা অনতিবিলম্বে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অবহিত করা যেমন- দাঙ্গা-হাঙ্গামা, গোপনে মৃতদেহ সরিয়ে তথ্য গোপন করা, কোনো শিশুকে বাড়ি হতে বের করে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিলে, আগুনের কারণ সংগঠিত ক্ষতি, বিষ প্রয়োগে গবাদি পশুর অনিষ্ট বা ক্ষতি করা, হত্যা বা আত্মহত্যার প্রচেষ্টা এবং উল্লিখিত অপরাধ সংগঠন বা সংগঠনের প্রচেষ্টা করা।

৯। উল্লিখিত অনুচ্ছেদে বর্ণিত অপরাধ অথবা আদালতে গ্রহণযোগ্য যেকোনো অপরাধ রোধে বা বন্ধ করার উদ্দেশে মধ্যস্থতা করার ক্ষেত্রে যথাসাধ্য চেষ্টা করা। জন্ম ও মৃত্যু রেজিষ্টার সংরক্ষণ এবং এলাকার সব জন্ম ও মৃত্যু সম্পর্কে ইউনিয়ন পরিষদকে অবহিত করা।

১০। মানুষ, পশু বা ফসলের মধ্যে কোনো মহামারি বা সংক্রামক রোগ বা পোকার আক্রমণ ব্যাপক আকারে দেখা দিলে তাৎক্ষণিক ইউনিয়ন পরিষদকে অবহিত করা।

১১। কোনো বাঁধে বা সেচ কাজে ক্ষতি বা ত্রুটি দেখা দিলে অনতিবিলম্বে ইউনিয়ন পরিষদকে অবহিত করা।

১২। সরকারি কাজের উদ্দেশে যেকোনো স্থানীয় তথ্য সরবরাহ করা।

১৩। খাজনা অথবা ভূমি কর, ফি বা অন্য পাওনা সংগ্রহ বা আদায়ে রাজস্ব কর্মচারীদের সহায়তা করা।

১৪। অধ্যাদেশের অধীনে কোনো অপরাধ সংগঠন বা সংগঠনের অভিপ্রায় সম্পর্কে জ্ঞাত হলে তা ইউনিয়ন পরিষদকে অবহিত করা। ইউনিয়ন পরিষদের বা ইউনিয়ন পরিষদের অধিকারে ন্যস্ত কোনো স্থাবর বা অস্থাবর সম্পত্তির ক্ষতিসাধন বা প্রতিবন্ধকতা বা অন্যায় দখল রোধ করার জন্য মধ্যস্থতা করা।

১৫। ইউনিয়ন পরিষদের নির্দেশে কোনো বাসিন্দার আবাসস্থল ও সম্পত্তির ওপর পরোয়ানা জারি করা।

১৬। গ্রাম পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশ ও ওয়ারেন্ট বা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়াই নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে গ্রেপ্তার করতে পারবেন-

ক) অপরাধের সঙ্গে জড়িত কোনো ব্যক্তি বা যার বিরুদ্ধে যার বিরুদ্ধে যথার্থ অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে বা বিশ্বাসযোগ্য তথ্য পাওয়া গেছে বা কোনো অপরাধমূলক কাজের সংগে থাকার যুক্তিসংগত কারণ রয়েছে।

(খ) বৈধ কারণ ছাড়াই কোনো ব্যক্তির কাছে ঘর ভাঙার সরঞ্জামাদি পাওয়া গেলে।

(গ) সরকারের কোনো আদেশ বলে বা ১৯৯৮ সালের ফৌজদারী কার্যবিধি (১৯৯৮ সালের ৫নং আইন) অনুযায়ী কোনো ব্যক্তিকে যদি অপরাধী ঘোষণা করা হয়।

(ঘ) যেকোনো ব্যক্তি যার অধিকারে এমন সকল দ্রব্য বা মালামাল রয়েছে যা চোরাই মাল বলে সন্দেহ করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে বা এ মালামাল দেখে সে কোনো অপরাধ সংগঠনের সঙ্গে জড়িত আছে বলে যথার্থভাবে সন্দেহ হলে।

(ঙ) বৈধ হেফাজত বা তত্ত্বাবধান হতে কোনো ব্যক্তি পালিয়ে গেলে বা পালাবার চেষ্টা করলে।

(চ) কোনো ব্যক্তি কোনো সরকারি কর্মচারীকে তার সরকারি দায়িত্বে বাধা দিলে।

(ছ) এমন কোনো ব্যক্তি যাকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌ-বাহিনী বা বিমান বাহিনীর পলাতক সৈনিক বলে যথার্থ সন্দেহ হলে।

(জ) মুক্তিপ্রাপ্ত কোনো অপরাধী ১৯৯৮ সালের ফোজধারী কার্যবিধির (১৯৯৮ সালের ৫নং আইনের ৫৬৫ ধারায়) উপধারায় কোনো বিধান ভঙ্গ করলে।

১৭। সাধারণ লোক কোনো ব্যক্তিকে অবৈধ কাজের জন্য ধরলে তাদের সাহায্য করা এবং বিলম্ব না করে সে সম্পর্কে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অবহিত করা।

১৮। গ্রামে কর্মরত সরকারি বা কোনো সাধারণ লোক সাময়িকভাবে বলবৎ কোনো আইন বলে কোনো ব্যক্তিকে ধরলে তার দায়িত্ব গ্রহণ করা এবং যে ব্যক্তির বা ব্যক্তিবর্গের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন বা নিজেই যে ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছেন তাদেরকে অনতিবিলম্বে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে হাজির করা। তবে শর্ত থাকে যে, রাতের অন্ধকারে কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা হলে তাকে বা তাদেরকে গ্রামে বৈধ তত্ত্বাবধানে রাখা যেতে পারে। কিন্তু পরদিন সকালে সম্ভাব্য তাড়াতাড়ি সময়ে তাদেরকে থানায় হাজির করতে হবে।

১৯। বিভিন্ন সময়ে আইন অনুযায়ী তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করা। উপরোক্ত কার্যাবলী ছাড়াও গ্রাম পুলিশকে এলাকার ধর্মীয়, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের সদস্য হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।

logo

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. নজরুল ইসলাম