ঢাকা ১৭ এপ্রিল, ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম
অবশেষে রাজধানীতে প্রশান্তির বৃষ্টি মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা, জাতিসংঘের সতর্কবার্তা উপজেলা নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত বিএনপির উপজেলা নির্বাচনে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ থাকবে না: কাদের প্রতি লিটারে ১০ টাকা বাড়লো সয়াবিন তেলের দাম পণ্যের দাম ঠিক রাখতে বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে: প্রতিমন্ত্রী মার্চে ৬২৪ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫৫০ আইপিএল: ছুটি বাড়ল মোস্তাফিজের বিরাজমান তাপপ্রবাহ নিয়ে স্বস্তির খবর দিল আবহাওয়া অফিস শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় জামিন পেলেন ড. ইউনূস

“মার্কিন ভিসা নীতি ও বাস্তবতা”

#

নিজস্ব প্রতিনিধি

২৭ মে, ২০২৩,  3:30 PM

news image

অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া


অবাধ, সুষ্ঠ ও শান্তিপূর্ণ জাতিয় নির্বাচনের লক্ষে নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি বি-ঙ্কেন এক বিবৃতিতে এ ভিসা নীতির ঘোষণা দিয়েছেন। অ্যান্টনি বি-ঙ্কেন বলেন, “আজ আমি অবাধ, সুষ্ঠ ও শাস্তিপূর্ণজাতিয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের লক্ষকে সমর্থন করার জন্য ইমিগ্রেশন এন্ড ন্যাশনালিটি অ্যাক্টের ধারা ২১২(এ)(৩)(সি)(“৩সি”) এর অধীনে একটি নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করছি। “এই নীতির অধীনে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্তকরার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে মনে করা যে কোনো বাংলাদেশি নাগরিকের ভিসা প্রদানে বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে। তাদের মধ্যে বর্তমান ও সাবেক বাংলাদেশি কর্মকর্তা, সরকারপন্থী ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্য এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, বিচার বিভাগ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা অন্তর্ভুক্ত।

এই ভিসা নীতি কার্যত বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক চর্চাকে গতিশীল করতে অনেক বেশি ভুমিকা রাখবে। বর্তমান সরকার বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক চর্চা অব্যাহত রাখতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছেন যেমন ফেইক ভোট যেন না হয়, সেজন্য ভোটারের ফটো আইডি করে দিয়েছেন বর্তমান সরকার। বাংলাদেশ সরকার শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন, স্বচ্ছ ট্রান্সপারেন্ট ব্যালট বাক্স তৈরি এবং তার মাধ্যমে সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের ব্যবস্থা করে আসছে বছরের পর বছর। বর্তমান আওয়ামিলীগ সরকার মূলত জনগণের সরকার এবং জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৩০টি আসন লাভ করে বর্তমান গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জনগণের সমর্থন নিয়ে এবং জনগণের ভোটে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে সরকার গঠন করে।

জনগণ তাদের সমর্থন এবং ভোট দিয়ে স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি বিএনপিকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিয়েছিল যারা রাতের আঁধারে ভোট চুরি করে ক্ষমতায় এসেছিল এবং বাংলাদেশের জনসাধারণের জীবনকে মারামারি, জ্বালাও পোড়াও, চুরি, ডাকাতি,দুর্নীতি,লুটপাট এসবের মাধ্যমে বিষিয়ে তুলেছিল। অপরদিকে স্বাধীনতার পক্ষে শক্তি বর্তমান সরকার সেই ১৪ বছর ধরে বাংলাদেশের জনসাধারণের সমর্থন এবং ভালোবাসায় বাংলাদেশকে এবং বাংলাদেশের মানুষকে বছরের পর বছর উন্নয়নের সর্বোচ্চ পর্যায়ে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান আওয়ামিলীগ সরকার সবসময়ই জনগণের উপর বিশ্বাস রাখে এবং জনগণের ভোটের মাধ্যমেই তারা ক্ষমতায় পরপর একটানা ৩ বার ক্ষমতায় এসেছে এবং সামনেও আসবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত ভিসা নীতিতে বলা হয়েছে যে, গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্তকরে এমন কাজের মধ্যে রয়েছে ভোট কারচুপি , ভোটারদের ভয় দেখানো,

সহিংসতার মাধ্যমে জনগণকে সংগঠিত হওয়ার স্বাধীনতা এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকারে বাধা দেওয়া এবং নানা প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক দল, ভোটার, সুশীল সমাজ বা গণমাধ্যমকে তাদের মতামত প্রচার করা থেকে বিরত রাখা।এসবের সব কয়টি বিষয় ছিলো স্বাধীনতার বিপক্ষের শক্তি এবং গণতন্ত্রে অবিশ্বাসী বিএনপি সরকারের নিত্য নৈমিত্তিক বিষয়।এখনো তারা গণতন্ত্রের চর্চাকে বিনষ্ট করতে বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের জনসাধারণকে নিয়ে প্রতিনিয়ত অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক বিভিন্ন চক্রান্ত লিপ্ত আছে।কিন্তু তারা বুঝতেই চাচ্ছে না যে বর্তমান সরকার বাংলাদেশের জনগণের গণতান্ত্রিক চর্চাকে এমন এক পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছে যেখানে বিনএনপির গনতন্ত্রের চর্চাকে বিনষ্ট এবং ব্যাহত করার সব ধরনের চক্রান্তের অপপ্রচেষ্টা করা নিত্যান্তই বোকামি ছাড়া আর কিছুই না।

বর্তমান মার্কিন ভিসা নীতি বিএনপির গণতন্ত্র চর্চাকে ব্যাহত করে অগণতান্ত্রিক উপায়ে আবার তাদের ক্ষমতায় আসার সব ধরনের পথই বন্ধ করে দিয়েছে। তারা পূর্বের মতো এখন আর ভোট কারচুপি করে, ভোটারদের ভয় দেখিয়ে, সহিংসতার মাধ্যমে এবং সংবাদ মাধ্যমের উপর চাপ প্রয়োগ করে সুষ্ঠু গনতান্ত্রিক নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করার সুযোগ। অপরদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সবসময়ই আমাদের স্বাধীনতার বিপক্ষের রাষ্ট্রসমুহের মধ্যে অন্যতম। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের তাদের ভুমিকা ছিলো বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিপক্ষে। সেইক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই তারা কখনো আমাদের স্বাধীনতার পক্ষে ছিলোনা এবং স্বাধীনতার পক্ষের বর্তমান সরকারের পক্ষে তারা কথা বলবেনা এটাই স্বাভাবিক। সেইজন্য স্বাধীনতার পক্ষের বর্তমান সরকারকে এবং সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ লোকের উপর বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে বারংবার।

কিন্তু বর্তমান মার্কিন ভিসা নীতি উনাদের অনিচ্ছা সত্ত্বেও বর্তমান সরকারের গণতান্ত্রিক চর্চাকে আরো গতিশীল করবে বলে মনে করছি। গণতন্ত্র চর্চায় এবং স্বাধীনতার শক্তিতে বিশ্বাসী বর্তমান আওয়ামিলীগ সরকার এসব অযুক্তিক এবং ভিত্তিহীন বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ চক্রান্তএবং আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার ধার ধারেনা।বর্তমান সরকার জনগণের ভোটে ও সমর্থনে নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকার। কোনো ধরনের চক্রান্তএবং নিষেধাজ্ঞা স্বাধীনতার পক্ষের, গণতান্ত্রিক চর্চায় বিশ্বাসী, জনগণের সমর্থনে বিশ্বাসী এবং সুষ্ঠু রাজনৈতিক ধারায় বিশ্বাসী আওয়ামী সরকারের পথ রদ করতে পারবেনা।বিএনপি যতই অপপ্রচেষ্টা চালায় ততই বর্তমান বাংলাদেশ সরকার এবং জনগণের গণতান্ত্রিক চর্চা গতিশীল হবে।সর্বোপরি আশা ব্যক্ত করছি যে, অবাধ, সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ জাতিয় নির্বাচনের লক্ষে ঘোষিত মার্কিন ভিসা নীতি বিএনপি এবং জামাতের সুষ্ঠু রাজনৈতিক এবং গণতান্ত্রিক চর্চাকে ব্যাহত করার সকল অপপ্রচেষ্টাকে নস্যাৎ করে অবাধ, সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক নির্বাচনের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার পক্ষে এবং জনগণের সমর্থন এবং ক্ষমতায় বিশ্বাসী আওয়ামিলীগ সরকারের গণতান্ত্রিক চর্চা, বাংলাদেশে এবং বাংলাদেশের মানুষের উন্নয়নের যাত্রা অব্যাহত রাখবে।

লেখক: অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া
ট্রেজারার
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়
সাবেক চেয়ারম্যান
ট্যুরিজম অ্যান্ড হস্পিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

logo

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. নজরুল ইসলাম