ঢাকা ২৯ মার্চ, ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম
রংপুর স্নেহা নার্সিং কলেজে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত কাল ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে বিএনপি মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না: ওবায়দুল কাদের পতেঙ্গায় নোঙ্গররত ফিশিং বোটে আগুন, দগ্ধ ৪ সরকার সারাদেশে ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করেছে : মির্জা ফখরুল জিম্মি জাহাজ উদ্ধার প্রসঙ্গে যা জানালেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী দি মারিয়াকে হত্যার হুমকিদাতা গ্রেপ্তার বিশ্বের সবচেয়ে বড় সাপকে গুলি করে হত্যা বরিশালে মসজিদে আগুন ত্রিশালে বাস চাপায় অটোরিকশার ৩ যাত্রী নিহত

“নির্বাচন আন্দোলন ও উকিল মডেল বিএনপিকে বেকায়দায় ফেলবে”

#

০৬ মে, ২০২৩,  1:53 PM

news image

অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া


বিএনপি ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করে, তাদের অবৈধ অর্থ লবিস্ট ফার্মে লগ্নি করে, তারা দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করার জন্য, রপ্তানি বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত করার জন্য, দেশের সমৃদ্ধি-প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত করার জন্য দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। প্রকৃতপক্ষে জনগণের ওপর বিএনপির কোন আস্থা নাই, তাই তারা ষড়যন্ত্রের পথটাই বেছে নিয়েছে। সেই ষড়যন্ত্রের মধ্যে অন্যতম প্রধান হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ। একটি রাজনৈতিক দল দেশের বিরুদ্ধে যখন এ ধরণের ষড়যন্ত্র করে, তারা দেশে রাজনীতি করার অধিকার রাখে কিনা সেই প্রশ্নই এসে দাঁড়ায়। বিএনপি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে প্রচারণায় ৩.৭৫ মিলিয়ন ডলার অর্থ ব্যয় করেছে।  বিএনপি দেশ থেকে অবৈধভাবে অর্থ পাচার করে, বিদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে অর্থ পাঠিয়ে বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করা, দেশের রপ্তানি বাণিজ্যকে বাধাগ্রস্ত  এবং বাংলাদেশকে বিদেশের সামনে ভুলভাবে তুলে ধরার জন্য, সার্বিকভাবে বাংলাদেশের মানুষ এবং রাষ্ট্রকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য তারা যে লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করেছে।  শুধু তাই নয় বিএনপি যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত তাদের নেতাদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়কে হত্যা করার জন্য এফবিআই-এর এজেন্ট ভাড়া করেছিল। এফবিআই’র সেই এজেন্টকে পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, তাকে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করানো হয়েছে। বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরী ইসরায়েলি এজেন্টের সাথে বৈঠক করেছিলেন, সে বৈঠকের খবর ছবিসহ পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করানোর জন্য বিএনপি-জামাত লবিস্ট নিয়োগ করেছিল। বিএনপি কি এগুলো অস্বীকার করতে পারবে না।  তাদের অপকর্ম যখন আজকে বেরিয়ে এসেছে তখন তারা শাক দিয়ে মাছ ঢাকার জন্য আবোল-তাবোল বকছে, এর বেশি কিছু নয়। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকার এটি একটি রাজনৈতিক সরকার। এ দেশের ক্ষমতার মালিক হচ্ছে জনগণ। জনগণ যাদেরকে মনে করবে তাদেরকেই ক্ষমতায় বসাবে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জনগণের রায় ও জনগণের শক্তির ওপর ভর করেই দেশ পরিচালনা করেছে। আর বিএনপি বিশ্বাস করে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের ওপর এবং সন্ত্রাস, নৈরাজ্যের ওপর। বিএনপি জনগণের ওপর, জনগণের রায়ের ওপর বিশ্বাস করে না। তারা মনে করছে এ ধরনের প্রোপাগান্ডা চালালে তাদেরকে কেউ কোলে করে এনে ক্ষমতায় বসিয়ে দেবে। দেশের উন্নয়ন-অগ্রগতি রুখে দেওয়ার জন্য, দেশের রপ্তানি বাণিজ্যে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির জন্য বিএনপি রীতিমতো অর্থ ব্যয় করে লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন জায়গায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করছে। বিএনপির লবিস্টরা দেশবিরোধী এমন সব তথ্য দিয়েছে আমেরিকার কাছে যা জানলে দেশবাসী তাদের ধিক্কার জানাবে। সরকারের কাছে প্রমাণ আছে যে বিএনপির লবিস্টরা র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং র‌্যাবকে শান্তিরক্ষা মিশনে না নেওয়ার অপচেষ্টায় জড়িত। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রাকে নস্যাৎ করার ভাবাদর্শগত রাজনৈতিক উত্তরাধিকার ধারণ করে চলেছে স্বৈরাচার জিয়ার হাতে প্রতিষ্ঠিত বিএনপি যারা একাত্তরে পরাজিত হওয়া শক্তির মূল নেতৃত্বে রয়েছে। বিএনপি যতই গণতন্ত্রের কথা বলুক, মুক্তিযুদ্ধের কথা বলুক আসল সত্যি তো এটাই যে তারাই মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তিকে পৃষ্ঠপোষকতা করছে আর জঙ্গিবাদকে মদদ দিচ্ছে। অসাংবিধানিক ও অবৈধভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে মিলিটারি ডিক্টেটরের সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠত হওয়া দল যাদের অভ্যন্ত্ররেই গণতন্ত্র নেই তারা আর যাই হোক দেশের জনগণকে গণতন্ত্র  দিতে পারে না। দ্বিধা ও সিদ্ধান্তহীনতার ঘুর্ণাবর্তে নিমজ্জিত বিএনপি অতীতের চার দশকে ক্ষমতার স্বাদ অনেক পেলেও রাজনৈতিক দক্ষতা অর্জনের সক্ষমতা দেখাতে পেরেছে খুবই কম। দলের ইতিহাস বলছে যে, রাজনৈতিক সংগ্রাম ও মতাদর্শের লড়াই করে নয়, ক্ষমতার অংশীদার হওয়ার জন্যই দলটির সৃষ্টি। ফলে ক্ষমতার বাইরের বিএনপি দৃশ্যত অকার্যকর রাজনৈতিক দলের বেশি আর কিছু হতে পারছে না। ১৯৭১ সালে জামায়াতের দেশবিরোধী অপকর্মগুলো ভুলে স্রেফ ক্ষমতার লোভে ঘৃণিত জামায়াতকে জোটসঙ্গী করতে দ্বিধা করেনি বিএনপি। অবশ্য বেঈমানি আর প্রতারণার ইতিহাস বিএনপির জন্য বেশ পুরানো। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেসব চিহ্নিত রাজাকার-যুদ্ধাপরাধীদের বন্দি করে বিচারের আওতায় এনেছিলেন, জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসেই তাদের মুক্ত করেন। পাশাপাশি রাজাকার-যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করতে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়। জন্মের শুরু থেকেই দেশবিরোধী ও পাকিপ্রেমীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া বিএনপি তাই জামায়াতকে সঙ্গী করেই দেশব্যাপী প্রচারণা চালাতে থাকে। যে নিজামী-মুজাহিদ-সাঈদী আজীবন বাংলাদেশের বিরোধীতা করে এসেছে, পাকিস্তানের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে এসেছে নির্দ্বিধায়, মুক্তিযোদ্ধাদের রক্তে রাঙানো তাদের সেই হাতেই তুলে দেওয়া হলো স্বাধীন বাংলাদেশের স্বার্বভৌমত্ব রক্ষার দায়িত্ব। অর্থাৎ রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। যে রাজনৈতিক দল দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত সে দলের দেশে রাজনীতি করার অধিকার নেই।

লেখক: অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া
ট্রেজারার
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়
সাবেক চেয়ারম্যান
ট্যুরিজম অ্যান্ড হস্পিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

logo

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. নজরুল ইসলাম