সারাদেশে মাসব্যাপী টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচি শুরু
নিজস্ব প্রতিবেদক
১২ অক্টোবর, ২০২৫, 3:51 PM
নিজস্ব প্রতিবেদক
১২ অক্টোবর, ২০২৫, 3:51 PM
সারাদেশে মাসব্যাপী টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচি শুরু
দেশে প্রথমবারের মতো চলছে টাইফয়েডের টিকা প্রদান কর্মসূচি। রোববার (১২ অক্টোবর) থেকে শুরু হওয়া মাসব্যাপী এ কর্মসূচি চলবে আগামী ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত। কর্মসূচির আওতায় ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী প্রায় ৫ কোটি শিশুকে বিনামূল্যে এক ডোজ ইনজেকটেবল টাইফয়েড টিকা দেয়া হবে।
প্রতিনিধিদের পাঠানো তথ্যে প্রতিবেদন:
মাগুরা:
মাগুরায় টাইয়ফয়েড টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়েছে। রোববার সকাল ৯টায় মাগুরা পিটিআই স্কুল প্রাঙ্গণে সিভিল সার্জন ডা. মো. শামীম কবির কার্যালয়ের আয়োজনে এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
জানা যায়, এ বছর মাগুরা জেলার চারটি উপজেলায় মোট ২ লাখ ৪৭ হাজার ৮৭৬ জন শিশুকে টিকা দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে ২ হাজার ৩টি কেন্দ্রে একযোগে টিকাদান কর্মসূচি পরিচালিত হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাগুরার জেলা প্রশাসক মো. অহিদুল ইসলাম, বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার মিনা মাহমুদা প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, টাইফয়েড প্রতিরোধে টিকা গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সরকারের এই উদ্যোগের মাধ্যমে জেলার সব শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের সুরক্ষার আওতায় আনা হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিনামূল্যে টাইয়ফয়েড টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়েছে। রোববার সকালে নিয়াজ মুহাম্মদ উচ্চ বিদ্যালয়ে এ টিকাদান কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন জেলার সিভিল সার্জন ডা. মো. নোমান মিয়া।
জানা যায়, কর্মসূচির প্রথম পর্যায়ে জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ১৫ বছরের কম বয়সী ছেলে-মেয়েদের টিকা দেয়া হচ্ছে। পরে পর্যায়ক্রমে টিকাদান কেন্দ্রগুলোর মাধ্যমে টিকা দেয়া হবে।
জেলা সিভিল সার্জন জানান, এ কর্মসূচির আওতায় জেলায় প্রায় ১২ লাখ শিশু, কিশোর ও কিশোরীকে টিকা দেয়া হবে। কেউ যাতে টিকাদান থেকে বাদ না যায় সেজন্য জন্মসনদ নেই এমন শিশুরাও টিকা পাবে।
গোপালগঞ্জ:
সারা দেশের মত গোপালগঞ্জে শুরু হয়েছে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন কর্মসূচি। রোববার জেলা প্রশাসন স্কুল এন্ড কলেজে সিভিল সার্জন ডা. আবু সাইদ মো. ফারুকের সভাপতিত্বে জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।
এ সময় জেলা প্রশাসক বলেন, এ ক্যাম্পেইনে জেলার ৩ লাখ ৪৪ হাজার ৭৬ জন শিশুকে টিকা দেয়া হবে। প্রত্যেকটি ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, পৌরসভা, থানা ও উপজেলাভিত্তিক টিকার শিডিউল ঠিক করা হয়েছে। এই টিকাদান কর্মসূচী সফল করতে কয়েকটি সভা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এই টিকাদান নিয়ে কোন পেনিক সৃষ্টি করা যাবে না। বাচ্চারা যেন ভয় না পায়। বাচ্চাদের টিকাদানের সময় ও টিকাদানের পরে তারা যে মানসিকতার মধ্যে ছিলো সেভাবেই যেন থাকে, সব সময় যেন হাস্যোজ্জ্বল থাকে। আমরা চাই প্রত্যেকটি শিশু সুস্থ হয়ে বেড়ে উঠুক, সুন্দর আগামীর ভবিষ্যতে নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে আজকের টিকাদান কার্যক্রম সফল হোক।
নোয়াখালী
সারাদেশের ন্যায় নোয়াখালীতেও শুরু হয়েছে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন। রোববার সকাল ৯ টায় জেলার সদর উপজেলার নোয়ান্নই উচ্চ বিদ্যালয়ে টিকাদান কার্যক্রমের উদ্ভোদন করেন সিভিল সার্জন ডা. মরিয়ম সিমি।
জানা যায়, জেলাটিতে এবার ১২ লাখ ৬ হাজার ৬১৩ জনকে টাইফয়েড টিকাদানের আওতায় আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। জেলার ৯টি উপজেলা ও ৮টি পৌর এলাকায় ৪ হাজার ৮১০ টি কেন্দ্রে একযোগে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে, যা টানা ১৮ দিন চলবে। প্রথম ১০ দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এবং পরবর্তী ৮ দিন স্থায়ী ও অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রে টিকা প্রদান করা হবে।
এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক তাসলিমুন নেছা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইব্রাহীম, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নুর উদ্দিন মো. জাহাঙ্গীর, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হোমায়রা ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কুমিল্লা
কুমিল্লায় টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়েছে। রোববার সকালে কুমিল্লা সদর উপজেলার উত্তর দূর্গাপুর এলাকায় আলেকজান মেমোরিয়াল হাইস্কুল এন্ড কলেজে টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. আলী নুর মোহাম্মদ বশীর আহমেদ।
জেলা সিভিল সার্জন বলেন, বাংলাদেশে টাইফয়েড সংক্রমণের ঝুঁকিতে সবচেয়ে বেশি থাকে ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী শিশু-কিশোররা। প্রতিবছর ৮ হাজার শিশু এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করছে। এ বয়সী সবাইকে এক ডোজ টিসিভি টিকা প্রদান করা হলে দীর্ঘমেয়াদি সুরক্ষা নিশ্চিত হবে। এ ক্যাম্পেইনে স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকেই এবং স্কুলের বাইরে থাকা শিশুরা ইপিআই এর স্থায়ী-অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রে এ টিকা পাবে।