ভোজ্যতেলের সংকট নিরসনের আশ্বাস ব্যবসায়ী সংগঠনের
নিজস্ব প্রতিবেদক
১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, 10:51 AM

নিজস্ব প্রতিবেদক
১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, 10:51 AM

ভোজ্যতেলের সংকট নিরসনের আশ্বাস ব্যবসায়ী সংগঠনের
আতঙ্কিত হয়ে প্রয়োজনের অতিরিক্ত ভোজ্যতেল না কেনার আহবান ►দেশের শীর্ষ প্রতিষ্ঠানগুলোর আমদানি করা ভোজ্যতেল আগামী ৭-১০ দিনের মধ্যে বাজারে আসবে
কয়েক দিনের মধ্যেই বাজারে সয়াবিন তেলের সংকট কেটে যাবে বলে আশ্বস্ত করেছে ভোজ্যতেল সরবরাহকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স ও বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন।
রবিবার তেল সরবরাহকারী সংগঠনটির পক্ষ থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি জানায়, পবিত্র রমজান মাস সামনে রেখে বাজারে ভোজ্যতেলের বাড়তি চাহিদা রয়েছে। বিষয়টি বিবেচনায় এনে অ্যাসোসিয়েশনভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বেশি পরিমাণ ভোজ্যতেল সরবরাহ করছে।
ভোজ্যতেলের সরবরাহের পরিমাণ বিবেচনায় সংকটের কোনো সুযোগ নেই। কিছু ব্যবসায়ীর মজুদের প্রবণতা থেকে যদি সংকট হয়ে থাকে তবে তা অচিরেই কেটে যাবে।
সংগঠনটি আরো জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত সয়াবিন ও পাম তেলের মূল্য স্থিতিশীল থাকায় অস্বাভাবিক মুনাফার সুযোগ নেই। এ ছাড়া দেশের শীর্ষস্থানীয় ভোজ্যতেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি ভোজ্যতেল আমদানি করেছে, যা আগামী ৭ থেকে ১০ দিনের ভেতরে বাজারে প্রবেশ করবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, সম্প্রতি ভোজ্যতেলের সরবরাহে ঘাটতির সংবাদে সাধারণ ভোক্তাদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। তাই ভোক্তা ও ভোজ্যতেলের ব্যবসায়ীদের উদ্দেশে আমরা অনুরোধ করছি যে তাঁরা যেন আতঙ্কিত হয়ে প্রয়োজনের অতিরিক্ত পরিমাণে ভোজ্যতেল না কেনেন। এ সংকট মোকাবেলায় সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও দপ্তরগুলোর সঙ্গে সমিতি নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করছে, যাতে এ সংকট দ্রুত নিরসন করা যায়।
এমতাবস্থায় বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স ও বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের আশ্বস্ত করতে চায় যে আমরা এই সংকট কাটিয়ে উঠতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
এ ছাড়া এই সংকটে যেন ভোজ্যতেলের সরবরাহ ও মূল্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে তা নিশ্চিতে সরকারিভাবে বাজার তদারকি বাড়ানো, ভোক্তাদের সহযোগিতা ও ধৈর্য একান্ত কাম্য।
শর্ত জুড়ে তেল বিক্রি করলে শাস্তি
এদিকে ভোজ্যতেলের সঙ্গে অন্য পণ্য কেনার শর্ত জুড়ে দিলে কঠোর শাস্তির মুখে পড়তে হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মোহাম্মদ আলীম আখতার খান।
রবিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে টিসিবি ভবনে এক মতবিনিময়সভায় তিনি এ কথা বলেন। পবিত্র রমজান উপলক্ষে ভোজ্যতেলের হালনাগাদ তথ্য সম্পর্কে অবহিত, মূল্য স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার উদ্যোগ হিসেবে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মোহাম্মদ আলীম আখতার খান বলেন, ‘বাজারে তেলের সঙ্গে চাল, আটা, চা-পাতাসহ বিভিন্ন পণ্য কিনতে ভোক্তাদের শর্ত দেওয়া হচ্ছে। এসবের প্রমাণও পাওয়া গেছে। কিন্তু তেল রিফাইনারিকারী কম্পানিগুলো তা অস্বীকার করছে। আমরা বাজারে কোথাও এমনটা দেখলে কম্পানি ও ডিলারদের জরিমানা করব।’
মহাপরিচালক আরো বলেন, ‘বাজারে বর্তমানে সয়াবিন তেল নিয়ে নাজুক অবস্থা বিরাজ করছে। তেলের ক্ষেত্রে আমরা ছয়টি রিফাইন প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভরশীল। গত তিন-চার মাস যাবৎ তেল নিয়ে বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে।’
সভায় ভোক্তার পরিচালক ফকির মোহাম্মদ মনোয়ার হোসেন জানান, রাজধানীর বিভিন্ন বাজার পর্যবেক্ষণ করে তেলের সঙ্গে শর্ত জুড়ে দেওয়ার বিষয়টির সত্যতা মিলেছে।
সভায় ভোজ্যতেল মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মওলা বলেন, ‘কাদা ছোড়াছুড়ি বাদ দিতে হবে। কম্পানিগুলো তেল এনে পরিশোধন করে, আর আমরা তা বিক্রি করি। কয়েক বছর ধরে ট্যারিফ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় মিলে দাম ঠিক করে দিচ্ছে। প্রয়োজনে আবার দাম ঠিক করে নিন, এর পরও বাজার ঠিক রাখুন।’ সূত্র : বাংলাদেশ প্রতিদিন