ফেসবুকে চটকদার বিজ্ঞাপনে প্রতারণা
১৯ এপ্রিল, ২০২২, 10:10 AM
NL24 News
১৯ এপ্রিল, ২০২২, 10:10 AM
ফেসবুকে চটকদার বিজ্ঞাপনে প্রতারণা
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ২০ থেকে ৩০টি ফেসবুক পেজ খুলেছে। বিভিন্ন পণ্যসহ শাড়ি ও থ্রি-পিসের চটকদার বিজ্ঞাপনও দেয়। পাশাপাশি এসব বিজ্ঞাপনে বিশাল মূল্যছাড়ের ঘোষণাও করে। অন্যান্য পেজের তুলনায় দামও সেখানে অনেকটা কম। তা দেখে অর্ডার করার পর ঠিক সময়ে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ডেলিভারিও পেয়ে যান ক্রেতারা। কিন্তু প্যাকেট খুলতেই চকচকে নতুন পোশাকের বদলে বেরিয়ে আসে পুরনো ও ছেঁড়া পোশাক। আর অনলাইনে বিভিন্ন পেজ খুলে বেশ কিছুদিন ধরে এমন প্রতারণা করে আসছে একটি চক্র। এদিকে অর্ডার করা পণ্য না পেয়ে বাজে পণ্য পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চক্রটির সঙ্গে যোগাযোগ করতেন ক্রেতারা। তখন ক্রেতাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ শুরু করত চক্রের সদস্যরা।
পরে ক্রেতাদের ফোন নম্বর ও ফেসবুক আইডি ব্লক করে দিত তারা। রবিবার রাজধানীর শঙ্কর এলাকার চার তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে এ চক্রের পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এর আগে পল্টন থানায় এক ভুক্তভোগী এ-সংক্রান্ত একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। জিডির পর থেকে এ বিষয়ে ছায়াতদন্ত শুরু করে ডিবির লালবাগ বিভাগ। গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন- বাপ্পি হাসান, আরিফুল ওরফে হারিসুল, সোহাগ হোসেন, বিপ্লব শেখ ও নুর মোহাম্মদ। এদের মধ্যে বাপ্পি চক্রের হোতা। গতকাল রাজধানীর মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান ডিবি লালবাগ বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) রাজীব আল মাসুদ। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চক্রটির গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদের সবার বাড়ি নড়াইল জেলায়। তাদের আরও একটি গ্রুপ নড়াইলে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। চক্রটি প্রতিদিন ১০০-১৫০টি প্রতারণামূলক পার্সেল পাঠাত। এভাবে চক্রটি মাসে ২০-৩০ লাখ টাকা আয় করত। পাঁচ-ছয় বছর ধরে চক্রটি এই প্রতারণার ব্যবসা করে আসছে। চক্রটির সঙ্গে এসএ পরিবহনের লোকজনও জড়িত। রাজীব আল মাসুদ বলেন, ‘চক্রটি ফেসবুকে বিভিন্ন পেজ খুলে আকর্ষণীয় পণ্য, বিশেষ করে মেয়েদের পোশাকের চটকদার বিজ্ঞাপন দিত। স্বাভাবিক মূল্যের অনেক কম মূল্য লিখে তারা এসব পোশাকের বিজ্ঞাপন দিত। পাঁচ-ছয় বছর ধরে তারা এই প্রতারণার ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। এরা কুরিয়ার সার্ভিস প্রতিষ্ঠান এসএ পরিবহনকে ব্যবহার করে উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় প্রতারণা করেছে। আমরা এসএ পরিবহনের কয়েকজনের নাম পেয়েছি, যারা এ প্রতারণার বিষয়টি জানেন। আমরা তাদেরও আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করছি।’ তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের ২১টি ফেসবুক পেজের সন্ধান পেয়েছি, যার মাধ্যমে তারা প্রতারণা করত। ১৭৭টি খারাপ শাড়ি, থ্রি পিস জব্দ করেছি। এসব কাপড় সাধারণত বাসাবাড়িতে ব্যবহারের পর পুরনো হয়ে গেলে অনেকে বিক্রি করে দেন, আবার অনেকে মানুষজনকে দিয়ে দেন। চক্রটি এসব কাপড় কিনে ডেলিভারি দিত ভালো পণ্যের নামে। এক প্রশ্নের জবাবে রাজীব আল মাসুদ বলেন, ‘এসএ পরিবহনের সঙ্গে চক্রটির একটি চুক্তি আছে। সেই অনুযায়ী চক্রটির পার্সেল তারা পাঠাত। এ ছাড়া এসএ পরিবহনের লোকজন জানত চক্রটি এসব খারাপ মালামাল ক্রেতাদের পাঠায়। চুক্তি অনুযায়ী পার্সেল ৫০ টাকা করে নিত তারা। আর ঈদ সামনে রেখে আমাদের একার পক্ষে এই চক্রগুলোকে মনিটরিং করা সম্ভব নয়। সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ বিষয়ে মনিটরিং করতে হবে।’