ঢাকা ১৮ অক্টোবর, ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম
ঈদ ও পূজার ছুটি বাড়ল আশুলিয়ায় পুলিশের অভিযানে ১ ট্রাক পলিথিনসহ ২ জন আটক আশুলিয়ায় সড়ক অবরোধ করে শ্রমিকদের কর্মবিরতি ৪৩তম বিসিএসের নিয়োগ প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবি বিএনপির ৪৬ রানে অলআউট, দেশের মাঠে সর্বনিম্ন রানের লজ্জায় ভারত মানুষের মাঝে কোনো বৈষম্য থাকবে না: জামায়াত আমির সিরাজগঞ্জে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩ সেপ্টেম্বরে সড়কে ঝরেছে ৪৯৮ প্রাণ: যাত্রী কল্যাণ সমিতি শেখ হাসিনা-ওবায়দুল কাদেরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি বিমানবন্দর থেকে শমসের মবিনকে ফেরত

ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠাবে

#

২৩ অক্টোবর, ২০২৩,  9:11 PM

news image

-অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া-


আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে পর্যবেক্ষক না পাঠানোর সিদ্ধান্ত থেকে সরে এলো ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইন বাংলাদেশ সংবিধানের আলোকে গঠিত স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে একটি সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সংঘটনের নিশ্চয়তা পেয়ে অবশেষে পর্যবেক্ষক পাঠাবে বলে আনুষ্ঠানিক এক চিঠিতে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) জানিয়েছে তারা। নির্বাচন কমিশনের একাধিক সূত্র থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। সূত্র বলছে, নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য আগামী ২১ নভেম্বর থেকে ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত দুই মাস ইইউ প্রতিনিধিরা বাংলাদেশে অবস্থান করবেন। এ সময় তাদের চার সদস্যের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে টেকনিক্যাল টিমের দুই সদস্যও থাকবেন বলে ইসিকে জানানো হয়েছে। গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ সরকার ইইউ এর পর্যবেক্ষক দলকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত। 

উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচনের পরিবেশসহ নির্বাচন–পূর্ব রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনায় ইইউর প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলটি গত জুলাই মাসে বাংলাদেশ সফর করেছিল। বাংলাদেশ সফরকালে তারা নির্বাচন কমিশনসহ বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে বৈঠক করে। প্রাক-নির্বাচন পর্যবেক্ষক দলের ঢাকা সফরের সময়ই বলা হয়েছিল, তারা যে প্রতিবেদন দেবে, তার ওপর ভিত্তি করে আগামী জাতীয় নির্বাচনে ইইউর পূর্ণাঙ্গ পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানোর কথা ছিলো। পূর্ব কথানুযায়ী এখন উক্ত পর্যবেক্ষক দলের রিপোর্ট অনুসারে গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছোট একটি দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত জানিয়ে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি পাঠাল।

পৃথিবীর মানচিত্রে সফল কয়েকটা গণতান্ত্রিক দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম একটি গণতান্ত্রিক দেশ। বছরের পর বছর সফলতার সাথে গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে যাচ্ছে আমাদের এই বাংলাদেশ। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে জনগণের গণতান্ত্রিক চর্চা অব্যাহত রাখতে বাংলাদেশের সংবিধানের আলোকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গড়ে তুলা হয়েছে একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন। বাংলাদেশে শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন ও নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করণে যা কিছু হয়েছে তা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই অর্জিত হয়েছে। সংবিধানের আলোকে সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় দেশের জনগণের ভোটাধিকার রক্ষার জন্য স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী এবং সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনে বাংলাদেশ আওয়ামিলীগ অত্যন্ত কার্যকরী ভূমিকা করছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ থেকে টানা তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব সামলে আসছেন। এর আগে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে। আগামী নির্বাচনে সামনে রেখে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার জরিপে দেখা যাচ্ছে, শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তা আগের থেকে আরও বেড়েছে। বাংলাদেশ বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দীর্ঘ ১৪ বছরেরও অধিক সময়ে বাংলাদেশের যে উন্নয়ন এবং অর্জন তা বাংলাদেশের ইতিহাসে অন্য কোনো সরকারের আমলে সম্ভব হয়নি। গণতন্ত্রে বিশ্বাসী জননেত্রী শেখ হাসিনা বিএনপি-জামায়াতের দুঃশাসনে পদদলিত গণতন্ত্র পূনরায় রক্ষা ও প্রতিষ্ঠা করতে এবং তা অব্যাহত রাখতে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা মানুষের ভাত ও ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে আন্দোলন শুরু করে আজ বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের মানুষের জীবনকে উন্নয়নের সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছে দিয়েছেন। উন্নয়নের এমন কোনো দিক নেই যে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের পদচারণা হয়নি। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিত। পুরো বিশ্ব আজ প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসায় পঞ্চমুখ। মার্কিন কংগ্রেসম্যানসহ বিশ্বের অন্যান্য নেতা ও নেত্রীরাও মনে করে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার এই ধারা শেখ হাসিনার হাত ধরে অব্যাহত থাকা উচিত।

অন্যদিকে স্বাধীনতার শক্তি , জনসমর্থন ও গণতন্ত্রে এবং বাংলাদেশের উন্নয়নে বিশ্বাসী বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সরকার বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইন বাংলাদেশ সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সংঘটনের লক্ষ্যে বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী গঠিত নিরপেক্ষ ও শক্তিশালী নির্বাচন কমিশন গঠন, ভোট কারচুপি বন্ধ করতে ভোটার আইডি লিষ্টে ভোটারদের ছবি সংযুক্তকরণসহ নির্বাচনে ডিজিটাল ইবিএম প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করেন। আওয়ামীলীগ সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত বাংলাদেশের উন্নয়নের সরকার। দীর্ঘ সাড়ে ১৪ বছর যাবৎ বাঙালি জনগণের পূর্ণ সমর্থনে বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য বদলে কঠোর প্রচেষ্ঠা চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সরকার। 

বিপরীতপাশে দূর্নীতি, লুটপাট, জঙ্গিবাদের মদদ দাতা বিএনপি-জামায়াত জোট স্বাধীনতার সময় থেকে বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের মানুষের বিরোধিতা করে আসছে। দুর্নীতি, লুটপাট, সন্ত্রাসী কর্মকা-ের মাধ্যমে তারা সবসময়ই দেশের মানুষের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করতে চেয়েছে এবং বর্তমানেও চাচ্ছে। বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলন মানেই জ্বালাও-পোড়াও আন্দোলন।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে সামাজিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক সব দিকেই সমান তালে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। অভূতপূর্ব সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি বাংলাদেশের রাজনৈতিক উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ভুমিকা প্রশংসনীয়। তাঁর সুযোগ্য নেতৃত্বে বিশ্ব মানচিত্রে সফল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বাংলাদেশ। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে রাজনৈতিক অস্থিরতাসম্পন্ন্য এই বাংলাদেশে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থায় বহুদলীয় রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে  গণতান্ত্রিক নির্বাচন ব্যবস্থা যুগ যুগ ধরে চলমান রয়েছে। গণতন্ত্রের এই ধারা অব্যাহত রাখতে আওয়ামীলীগ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দীর্ঘ ১৪ বছর যাবৎ কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশের জনসাধারণের গণতান্ত্রিক চর্চাকে অব্যাহত রাখতে সুষ্ঠু নির্বাচনের গুরত্ব উপলব্ধি করে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সরকার বরাবরের মতো সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক একটি নির্বাচন সংঘটনের লক্ষ্যে সংবিধান অনুযায়ী গঠন করেছে একটি শক্তিশালী ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন। দেশের রাজনীতিতে সকল দলের সমান সুযোগ নিশ্চিত করণে সকল দলকে স্বাধীনভাবে রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা তথা সভা-সমাবেশ করার সুযোগ করে দিয়েছেন। জাল ভোট যেন কেউ না দিতে পারে সেই জন্য ভোটার আইডি লিষ্টে ভোটারদের ছবি যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও রাতের আঁধারে যেন কেউ ব্যালট চুরি করে ক্ষমতায় আসতে না পারে তার জন্য নির্বাচনে ডিজিটাল ইভিএম প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ সরকার। এর সবই করা হয়েছে একমাত্র সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সংঘটনের মাধ্যমে সকল দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে বাংলাদেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ধরে রাখার জন্য। আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধে প্রাণ উৎসর্গকারী শহীদদের রক্তে লিখিত পবিত্র সংবিধানের আলোকেই আওয়ামীলীগ সরকার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সংঘটনের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।

সুতরাং গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে সংবিধান অনুযায়ী গঠিত স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে একটি সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব বলেই ইউরোপীয় ইউনিউন আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাদের পর্যবেক্ষক দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের গণতন্ত্রমনা নাগরিক হিসেবে আমরাও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ সরকারের পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিউনের পর্যবেক্ষক দলকে স্বাগত জানাই। গণতন্ত্র ও মানবাধিকারে বিশ্বাসী আওয়ামী লীগ সরকার এবং বাংলাদেশের জনগণ সবসময় সত্য, সুন্দর এবং গণতন্ত্রের পক্ষে ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের নামে জণগণের আবেগ নিয়ে খেলা করে জ্বালাও-পোড়াও করে জনদূর্ভোগ সৃষ্টি করা বিএনপি-জামায়াতের পক্ষে এদেশের জনগণ আর নেই। গণতন্ত্রে বিশ্বাসী বাঙালি জনগণ তাদের ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। আমরা আশা করছি ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রেরিত পর্যবেক্ষক দলের উপস্থিতিতে স্বাধীন, সার্বভৌম এবং গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের সংবিধানের আলোকে গঠিত স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে প্রতিবারের ন্যায় বাংলাদেশের জণগণ আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও ভোটদানের মাধ্যমে তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চা অব্যাহত রাখবে। বিএনপি-জামায়াতের শাসনামলে পদদলিত গণতন্ত্রের উদ্ধার এবং তার এই চর্চা অব্যাহত রাখতে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাঙালি জনগণ ইউরোপীয় ইউনিউনের পর্যবেক্ষক দলের উপস্থিতিতে অতীতের ন্যায় ভোটের বিপ্লবে বিএনপি-জামায়াতকে পরাজিত করে আওয়ামী লীগ সরকারের ধারাবাহিকতা রক্ষা করবে বলে প্রত্যাশা করছি।

লেখক: অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া
ট্রেজারার
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়
সাবেক চেয়ারম্যান
ট্যুরিজম অ্যান্ড হস্পিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

logo

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. নজরুল ইসলাম