ঢাকা ২৭ জুলাই, ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম
শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে চাকরি ছাড়লেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ গ্রেপ্তার ভিটামিন ‘সি’ সমৃদ্ধ পেয়ারার স্বাস্থ্য উপকারিতা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫ শক্তিশালী পাসপোর্ট সূচকে বাংলাদেশের উন্নতি রাজধানীতে সহিংসতা-নাশকতার অভিযোগে ২০১ মামলা, গ্রেপ্তার ২২০৯ স্থগিত এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ১১ আগস্টের পর ইন্টারনেট ছাড়াই ফাইল পাঠানো যাবে হোয়াটসঅ্যাপে একুশে পদকপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মাহবুবুল হক মারা গেছেন মির্জা ফখরুল মিথ্যা তথ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের আবারও উসকানি দিচ্ছেন: ওবায়দুল কাদের

“আমেরিকা নির্ভর বিএনপি জনগণ নির্ভর হবে কবে”

#

১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪,  3:35 PM

news image

-অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া-

যেকোন গণতান্ত্রিক দেশে মূল সকল শক্তির উৎস সেদেশের জনগণ। এ চিরন্তন সত্যটা গণতান্ত্রিক কোনো দেশের সাধারণ নাগরিক থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত সকলেই অবগত। গণতন্ত্রে বহুদলীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থায় প্রতিটি রাজনৈতিক দলকেও এই সম্পর্কে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল থেকে জনগণকে নিয়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে হয়। জনগণের সমর্থন আছে এমন রাজনৈতিক দলই জনগণের সমর্থন নিয়ে ভোটযুদ্ধে জয়লাভ করার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সরকার গঠনের সুযোগ লাভ করে। জনগণের সমর্থনহীন রাজনৈতিক দলগুলো জনগণকে বাদ দিয়ে বিদেশি বিভিন্ন অপশক্তির সহায়তায় অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করার স্বপ্নে বিভোর থাকে যার ফল কখনোই তাদের জন্য শুভকর হয়না। বিশ্ব রাজনৈতিক ইতিহাস এমন অনেক দল ছিলো যারা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে জনগণের বিপরীতে কাজ করতে গিয়ে ইতিহাসের অতল গহব্বরে হারিয়ে গিয়েছে। গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের বহুদলীয় রাজনীতিতে বিএনপিও এমন একটি রাজনৈতিক সংগঠন যারা বাঙালি জনগণের বিপরীতে গিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্ভর হয়ে সবসময় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছে। ফলাফলস্বরূপ বিএনপি ধীরে ধীরে জনগণের সমর্থন হারিয়ে এখন প্রায় জনবিচ্ছিন্ন একটি দলে পরিণত হয়ে অস্তিত্ব সংকটের শেষ পর্যায়ে অবস্থান করছে। এখন প্রশ্ন হলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নির্ভর বিএনপি আর জনগণ নির্ভর হবে কিনা! হলে, কখন হবে?উল্লেখ্য, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হওয়া দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিএনপি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আঁতাত করে তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে এসেছে। এ নির্বাচনকে বানচাল করার লক্ষ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতির অপব্যবহার করে মানুষকে ভয়—ভীতি দেখিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপপ্রচেষ্টা চালিয়ে এসেছে প্রতিনিয়ত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি বিএনপির অনুকূলে কাজে লাগিয়ে অবৈধভাবে ক্ষমতায় আসীন হতে পারবে মনে করে 

বিএনপি—জামায়াত প্রথমে অনেক খুশি হয়েছিল। কিন্তু যখনই তারা অনুধাবন করতে পারল যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি বাংলাদেশের শক্তিশালী নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সংঘটনে অনেক গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে তখন থেকে বিএনপি—জামায়াত জ্বালাও—পোড়াও এর মাধ্যমে তাদের আসল রুপ দেখানো শুরু করে। কারণ তারা বুঝতে পারল যে ভিসা নীতি তাদের উদ্দেশ্য হাসিল করতে কোনভাবেই সহায়ক হবেনা। তারা পূণরায় তাদের পূর্ববর্তী কায়দায় আন্দোলনের নামে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে জ্বালাও—পোড়াও শুরু করলো। দেশের অভ্যন্তরে অচলাবস্থা সৃষ্টির জন্য সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা ছিলো সন্ত্রাসী সংগঠন বিএনপির। তারই অংশ হিসেবে দলটি দেশের বিভিন্ন অংশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করার অপপ্রচেষ্টা চালিয়ে এসেছে এমনকি এখনো চালাচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন কর্মসূচিতে জনসম্পৃক্ত গড়ে তুলতে না পারা এবং আন্দোলনের জন্য নতুন ইস্যু সৃষ্টির ব্যর্থতায় সহিংসতার পথ বেছে নিয়েছে দলটি। এখনও এই দলের বিভিন্ন কর্মসূচিও আসে অজ্ঞাত স্থান থেকে।বিচক্ষণতা ও দূরদর্শিতার অভাব বিএনপি দলটি মনে করেছিল যে, হরতাল—অবরোধ তথা জ্বালাও—পোড়াও করা গেলেই সরকার উল্টে পড়ে যাবে। সরকার উল্টে পড়ে গেলেই তারা পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসীন হবে। সেক্ষেত্রে জনসমর্থনের কোনো প্রয়োজনীয় তারা কখনো বোধ করেনি। কিন্তু তারা এটা লক্ষ করেননি যে আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস পরিচালনার জন্য এদের জনপ্রিয়তা বাংলাদেশের মানুষের নিকট কমে গিয়ে বাড়ছে জনবিচ্ছিন্নতা। দেশে—বিদেশে তাদের ভাবমূর্তির দিকেও লক্ষ করেনি। দলটিকে কেবল দেখেছে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টিতে কার্যকর হাতিয়ার হিসেবে। এ দলটিকে যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বারবার 'সন্ত্রাসী সংগঠন' বলে সাব্যস্ত হচ্ছে— রাষ্ট্রক্ষমতায় ফিরে যাওয়ার মোহে সেদিকেও তাকাননি বিএনপি নেতৃত্ব। জামায়াতকে সঙ্গে নিয়ে বিএনপি সন্ত্রাসময় আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যে বিএনপিকে জঙ্গি উত্থানের দায়ে অভিযুক্ত করেছে এবং আরোও করতে পারে, সেটাও তাদের মাথায় কাজ করেনা। বিচক্ষণতা ও দূরদর্শিতার অভাবে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হওয়া দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি তারা। এভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করাটাই গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে বিএনপির রাজনৈতিক পরাজয় ইঙ্গিত নিশ্চিত করেছে।যেকোনো গণতান্ত্রিক দেশে রাজনৈতিক সফলতা আসে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে জনগণের সমর্থন নিয়ে ভোটযুদ্ধে নিজেদেরকে বিজয়ী করার মাধ্যমে। নির্বাচন অংশগ্রহণ না করে বা ভোটে অংশগ্রহণ না করে জ্বালাও—পোড়াও করে গণতান্ত্রিক কোনো দেশে রাজনৈতিক সফলতা অর্জন করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে বিএনপি জনগণের সমর্থন না নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভর করে নির্বাচন বানচালের লক্ষ্যে বিভিন্নভাবে ব্যর্থ প্রচেষ্টা 

চালিয়ে গিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইশারায় বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনসমর্থনহীন ও সন্ত্রাসী সংগঠন বিএনপি ভোটে অংশগ্রহণ করেনি। তারা জানতো যে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে ভোট যুদ্ধে তারা কখনো জয়লাভ করতে পারবেনা। কেননা ভোটযুদ্ধে জয়ী হয়ে রাজনৈতিকভাবে সফল হওয়ার জন্য যে পরিমাণ জনগণের সমর্থন থাকা দরকার তার সামান্যটুকুও নেই বিএনপির। এই সত্যটুকু তারা ভালো করেই জানে। কারণ গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের নামে জ্বালাও—পোড়াও করে জনদূর্ভোগ সৃষ্টি করে বিএনপি সম্পূর্ণ এখন একটি জনবিচ্ছিন্ন দলে পরিণত হয়েছে। তারা এটা উপলব্ধি করতে পেরেছে যে, বাংলাদেশের জনগণ তাদের এখন আর চান না। তারমানে জনগণের সমর্থন এখন বিএনপির পক্ষে নেই। এমতাবস্থায় তারা যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তাহলে তাদের পক্ষে তেমন জনমত গড় উঠবেনা এবং তারা জনগণের ভোটও পাবেনা। যার ফলে তারা বুঝতে পারল যে ভোটে অংশগ্রহণ করে নির্বাচিত হওয়ার প্রচেষ্টা হবে তাদের জন্য বৃথা প্রচেষ্টা। সেই লক্ষ্যেই নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে অতীতের ন্যায় নাশকতা করে পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসীন হওয়ার অপপ্রচেষ্টা চালিয়ে গিয়েছে তারা। কোন একটি গণতান্ত্রিক দেশে বিএনপির মতো জনসমর্থনের অভাবে রাজনৈতিকভাবে পরাজিত দলই কেবল নির্বাচন প্রত্যাখ্যানের মতো সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। রাজনৈতিকভাবে সফল কোন দল কোনদিনও নির্বাচন তথা ভোটে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে পারেনা। কারণ নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করে নাশকতার রাজনীতি বহুদলীয় গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে কখনো রাজনৈতিকভাবে সফল কোনো দলের রাজনৈতিক শিষ্টাচারের মধ্যে পড়েনা।সন্ত্রাসী সংগঠন বিএনপি বুঝতেই পারছেনা যে গণতন্ত্রের দোহাই দিয়ে মহাসমাবেশ, হরতাল এবং অবরোধ কর্মসূচির নামে তারা যত বেশি জ্বালাও—পোড়াও করেছে ততই তাদের জনবিচ্ছিন্নতা বেড়েছে এবং জনগণের শক্তি ও সমর্থনে বিশ্বাসী আওয়ামী লীগ তথা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার জনসমর্থন বেড়েছে। বিএনপির মানুষ হত্যার রাজনীতির কারণে দেশের জনগণ আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছে এবং দিবে। স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি, জনসমর্থন ও জনগণের শক্তিতে বিশ্বাসী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ লাশের রাজনীতি চায়না। স্বাধীন বাংলাদেশের শহীদদের রক্ত লিখিত বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইন বাংলাদেশ সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল আওয়ামী লীগ সংবিধানের আলোকে গঠিত স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে অন্যান্য গণতন্ত্রমনা দলগুলোর সাথে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে। জনগণের সমর্থন নিয়ে বরাবরের মতো জয়লাভও করে টানা চতুর্থ বারের মতো গণতান্ত্রিক সরকারও গঠন করেছে। বাংলাদেশের গণতন্ত্রমনা জনগণও তাই চেয়েছিলো যে বাংলাদেশে প্রতিযোগিতা হোক গণতান্ত্রিক নির্বাচনে ভোটের মাধ্যমে জ্বালাও—পোড়াও রাজনীতি দিয়ে নয়। আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের সফল শাসনামলে বাঙালি জনগণ উপলব্ধি করতে সক্ষম হয়েছে যে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা তথা বাংলাদেশের মা

লেখক: অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া
ট্রেজারার
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়

সাবেক চেয়ারম্যান
ট্যুরিজম অ্যান্ড হস্পিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

logo

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. নজরুল ইসলাম