৩য় টি-টোয়েন্টি আজ: বাংলাদেশের বিপক্ষে ‘ফাইনালে’ চাপে শ্রীলঙ্কা
১৬ জুলাই, ২০২৫, 4:44 PM

NL24 News
১৬ জুলাই, ২০২৫, 4:44 PM
৩য় টি-টোয়েন্টি আজ: বাংলাদেশের বিপক্ষে ‘ফাইনালে’ চাপে শ্রীলঙ্কা
সনাৎ জয়াসুরিয়াকেও এমন প্রশ্ন নিতে হলো! শেষ টি-টোয়েন্টির আগে চাপে নেই তো শ্রীলঙ্কা? সিরিজে ১-১ সমতা। কলম্বোর রানাসিংহে প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে আজ যে দল জিতবে, সিরিজ জিতবে তারাই। ঘরের মাঠ হোক আর পরের মাঠ, এমন ম্যাচে যে কারোরই চাপে থাকার কথা। রের মাঠ বলে শ্রীলঙ্কার ওপর প্রত্যাশার চাপ একটু বেশি থাকবে স্বাভাবিক। তবে বাংলাদেশের ওপরও কি কম! কলম্বোর দ্বিতীয় টেস্টে চতুর্থ দিন সকালেই হেরে যাওয়ার পর গলে প্রথম টেস্ট ড্রয়ের আনন্দটা আর থাকেনি। পাল্লেকেলের শেষ ওয়ানডেতে সিরিজ জয়ের হাতছানি পর্যবসিত হয়েছে বাজে ব্যাটিংয়ের হতাশায়। আজ কলম্বোয় আবারও এসেছে সিরিজ জয়ের সুযোগ। এবারও যদি বাংলাদেশ না পারে, কাল দেশে ফিরতে হবে অতৃপ্তি নিয়ে। একটি ড্র, দুটি জয়; তবু কোনো সিরিজই জিততে না পারাটা অন্তত সাফল্য হিসেবে বিবেচিত হবে না।
জয়াসুরিয়া অবশ্য চাপ-টাপের কথা উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, ‘আমরা টেস্ট এবং ওয়ানডে সিরিজ জিতেছি। টি-টোয়েন্টিও আমাদের জিতেই শেষ করতে হবে। খেলোয়াড়েরা ভালো খেলতে চায় এবং সে জন্য আমরা কঠোর পরিশ্রম করছি।’ দলের কাছে ভালো ব্যাটিং চান জয়াসুরিয়া, বিশেষ করে ওপরের দিকের তিন ব্যাটসম্যানের কাছে তাঁর আশা বড় ইনিংস। অভিজ্ঞ বোলিং লাইনআপের কাছে চান অভিজ্ঞতার ঝলকানি। প্রেমাদাসায় কাল বিকেল থেকে সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত পর্যন্ত গড়ানো শ্রীলঙ্কার অনুশীলনে বোলার-ব্যাটসম্যান সবার মধ্যেই দেখা গেছে শেষ মুহূর্তে নিজেদের ঝালিয়ে নেওয়ার চেষ্টা। শ্রীলঙ্কায় ম্যাচের আগের দিনও মাঝ উইকেটে অনুশীলনের সুযোগ পায় স্বাগতিক ও সফরকারী দুই দলই। ম্যাচের উইকেটের দুই পাশের দুই উইকেটে টানা চলছিল ব্যাটিং-বোলিং অনুশীলন। টি-টোয়েন্টির ব্যাটিং অনুশীলন মানে তো বুঝতেই পারছেন। একের পর এক বড় শট খেলে গেলেন ব্যাটসম্যানরা।
কখনো এই নেট, কখনো ওই নেটে দাঁড়িয়ে কোচ জয়াসুরিয়া তা দেখছিলেন দর্শক হয়ে। এর আগে দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত হওয়া বাংলাদেশের অনুশীলনও অনেকটা এ রকমই ছিল, তবে শ্রীলঙ্কার অনুশীলনের মতো মাত্রাটা এত বেশি ছিল না। বাংলাদেশ দলের ম্যাচের আগের দিনের অনুশীলন একটু হালকা হয়, কালও সে রকমই হয়েছে। তার মধ্যেও নেটে আলাদা করে বড় শট প্র্যাকটিস করেছেন লিটন দাস, পারভেজ হোসেনরা। প্রথম দুই টি-টোয়েন্টিতে না খেলা মেহেদী হাসান ব্যাটিং–বোলিং দুটোতেই বেশ সময় দিয়েছেন। তবে অনুশীলনে দেখা যায়নি ডাম্বুলার আগের ম্যাচে ব্যাটে ঝড় তোলা শামীম হোসেনকে। অসুস্থ বোধ করায় বিশ্রামে ছিলেন তিনি। তবে সে অসুস্থতা গুরুতর কিছু নয় বলে জানিয়েছে দলীয় সূত্র।
পাল্লেকেলে ও ডাম্বুলার প্রথম দুই টি-টোয়েন্টিতেই শামীমের মারকাটারি ব্যাটিং টি-টোয়েন্টির বিনোদন দিয়েছে। লিটনের ৫০ বলে ৭৬ রানের সঙ্গে শামীমের ব্যাট থেকে ২৭ বলে ৪৮ রানের ইনিংসটি না এলে তো ডাম্বুলায় শ্রীলঙ্কার সামনে বড় সংগ্রহ দেওয়াই যেত না। আজ শেষ ম্যাচেও তাঁর কাছে সেটারই ধারাবাহিকতার আশা দলের। এমনকি পরিস্থিতির প্রয়োজনে ব্যাটিং অর্ডারে যদি আজ শামীমকে আরেকটু ওপরেও দেখা যায়, তাতে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। আগের ম্যাচে জেতায় শেষ ম্যাচে উইনিং কম্বিনেশন না ভাঙারই কথা বাংলাদেশের। তবে কাল অনুশীলনের আগে দলের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসা সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাহউদ্দীনের কথায় যেন একটু অন্য সুর, ‘কোনো দলই চায় না উইনিং কম্বিনেশন ভাঙতে।
কিন্তু আমাদের অনেক সময় ছেলেদের দিকেও তাকাতে হয়। কারণ, অনেকে চোট কাটিয়ে আসে। অনেকের ওয়ার্কলোড আমাদের খেয়াল করতে হয়। পেস বোলারদের ফিট রাখাটা আমাদের জন্য খুব জরুরি।’ উদাহরণ হিসেবে তাসকিন আহমেদের নামও উল্লেখ করেছেন সালাহউদ্দীন, ‘তাসকিনকে যদি আপনি টানা খেলাতে থাকেন…ও একটা বড়সড় ইনজুরি থেকে এসেছে। সে যদি আবার খেলে, তার যদি আবার ইনজুরি হয়; তখন দেখা গেল একটা ম্যাচের জন্য হয়তো তাকে এক বছর বসে থাকতে হবে।
সুতরাং আমাদের সবদিকে ম্যানেজ করে চলতে হয়।’ স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার কোচ জয়াসুরিয়া যেমন আজ সিরিজ জয়ের আশা করছেন, আগের ম্যাচ জেতায় সে আশায় সমান ভাগ দেখেন বাংলাদেশ দলের সিনিয়র সহকারী কোচও, ‘আগের ম্যাচটা আমরা যেভাবে খেলেছি আমার মনে হয়, ছেলেরা ভালো মোমেন্টাম পেয়েছে এবং আত্মবিশ্বাসটাও আমাদের ফিরে এসেছে। আমি আশা করি, এখানে আমরা শেষটা ভালোভাবে করতে পারব এবং ইনশা আল্লাহ আমরা ভালো খেলার চেষ্টা করব।’ সেই চেষ্টার ফল মধুর হবে, সফরের শেষটা হবে জয়ের আনন্দে—এটাই আজ আশা বাংলাদেশের।