সাতছড়ি ত্রিপুরা পল্লীতে ভাঙন আতঙ্ক
নিজস্ব প্রতিনিধি
৩০ জুলাই, ২০২২, 1:08 PM
নিজস্ব প্রতিনিধি
৩০ জুলাই, ২০২২, 1:08 PM
সাতছড়ি ত্রিপুরা পল্লীতে ভাঙন আতঙ্ক
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট সাতছড়ি ত্রিপুরা পল্লীতে টানা বর্ষণে ভূমিধ্বসের শঙ্কা থাকায় ত্রিপুরা পল্লীতে বসবাসকারী আদিবাসীদের মনে ভর করছে আতঙ্ক। তবুও থেমে নেই পাহাড়কোলে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস। উপজেলা প্রশাসনের তথ্য বলছে, সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের পাহাড়ের ঢাল ও চূড়ায় ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে ২৪টি ত্রিপুরা পরিবার। ঝুঁকিপূর্ণ স্থান থেকে চারটি পরিবারকে অন্যত্র সরানো হয়েছে। চূড়ায় পাহাড়ের বসবাসকারীদের দাবি, নিরুপায় হয়েই এমন ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছেন তারা। কয়েকব দিনের টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে ত্রিপুরা পল্লীতে ব্যাপক ধ্বস দেখা দিয়েছে। এতে একশো বছরের ঐতিহ্য সাতছড়ি ত্রিপুরা পল্লীর ভাঙনে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে । ভেঙে গেছে ত্রিপুরা পল্লীতে যাতায়াতের একমাত্র সেতু। তিন-চার বছর ধরে পাহাড় নভাঙনের কারণে অনেকেই এখান থেকে অন্যত্র গিয়ে বসতবাড়ি নির্মাণ করেছেন। সর্বশেষ ২৪টি পরিবারের মধ্যে ইদানীং পাহাড়ি ঢলে চারটি বসতবাড়ি পাহাড়ি ছড়ায় বিলীন হয়ে গেছে। তাদের উপজেলা প্রশাসন অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছেন। এ বছর প্রবল বর্ষণ আসলেই ভেঙে যেতে পারে আরো তিনটি বসতবাড়ি। এছাড়া এখানে প্রতি বছরই পাহাড় ধ্বসে মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। এখনই জরুরি ভিত্তিতে গাইডওয়াল নির্মাণ না করলে ত্রিপুরারা তাদের বাপ-দাদার ভিটেবাড়ি হারিয়ে পথে বসতে হবে। প্রকৃতি থেকে বিলীন হয়ে যাবে একটি নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী। পল্লীর বাসিন্দা চিত্ত রঞ্জন দেববর্মণ বলেন, ভাঙা অংশটি গত বছর কিছু দূরে ছিল। এবারের বৃষ্টিতে ভাঙন বাড়ির উঠানে চলে এসেছে। যে অবস্থা দুই-এক দিনের মধ্যে আরো তিনটি বাড়ি পাহাড়ি ছড়ায় বিলীন হয়ে যাবে। আমরা গাইডওয়াল নির্মাণের জন্য অনুরোধ করছি কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। বছর বছর ত্রিপুরা পল্লী বিলীন হয়ে যাচ্ছে পাহাড়ি ছড়ায় পানি প্রবাহের রাস্তা। সাতছড়ি ফরেস্টের রেঞ্জ কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম বলেন, ত্রিপুরা পল্লীর পাশাপাশি সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানের বিভিন্ন পাহাড়ি টিলার অংশ ভেঙে পড়ছে। উদ্যানের ভেতর ব্রীজ ভেঙে পড়ারও উপক্রম হয়েছে। এছাড়া ওয়াচ টাওয়ার ঝুঁকি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ আব্দুল কাদির লস্কর বলেন, এখানে বসবাসকারীদের পক্ষে নিজ উদ্যোগে নিরাপদে সরে যাওয়া সম্ভব নয় । তাই পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারী লোকদের পুনর্বাসন করা প্রয়োজন । আবার অনেকেই নিজের বাপ-দাদার ভিটে ছেড়ে অন্যত্র যেতে চাচ্ছে না। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিদ্ধার্থ ভৌমিক বলেন, ত্রিপুরা পল্লী আমি সরেজমিন পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসকের নজরে এনেছি। হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন এলাকায় জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করছে । আশাকরি এর একটি স্থায়ী সমাধান হবে।