শ্রীমঙ্গলে বসতবাড়ি থেকে ১০ ফুট লম্বা অজগর উদ্ধার
নিজস্ব প্রতিনিধি
২১ এপ্রিল, ২০২৫, 6:07 PM

নিজস্ব প্রতিনিধি
২১ এপ্রিল, ২০২৫, 6:07 PM
শ্রীমঙ্গলে বসতবাড়ি থেকে ১০ ফুট লম্বা অজগর উদ্ধার
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বসতবাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে একটি বিশালাকৃতির অজগর সাপ। সোমবার (২১ এপ্রিল) সকালে উপজেলার সদর ইউনিয়নের নওয়াগাঁও দেবপাড়া গ্রামের জনৈক ধনাই মিয়ার বাড়ি থেকে সাপটির উদ্ধার করা হয়। ওই বাড়ির লোকজন জানায়, পুকুরে হাঁসের অস্বাভাবিক কাতরানের শব্দ শুনতে পেয়ে দেখতে যান তারা। এরপর পুকুরে গিয়ে বিশালাকৃতির সাপ একটি হাঁস গিলে খাচ্ছে দেখে আতঙ্কিত ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। এ সময় পরিবারের লোকজন স্থানীয় বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনে খবর দিলে ফাউন্ডেশনের পরিচালক স্বপন দেব সজল ঘটনাস্থলে এসে সাপটি উদ্ধার করে নিরাপদে তাদের সেবা আশ্রমে নিয়ে যান। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সাপটি বন বিভাগের কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করেন তিনি। এ বিষয়ে বন্যপ্রাণী সেবা ফাউন্ডেশনের পরিচালক স্বপন দেব সজল বলেন, সাপটির দৈর্ঘ্য দশ ফুট। আতঙ্কিত পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে খবর পেয়ে দ্রুত এসে সাপটিকে উৎসুক জনতার হাত থেকে রক্ষা করি। তারপর আমাদের সেবা আশ্রমে নিয়ে আসি। পরে বন বিভাগের কর্মকর্তাদের কাছে সাপটি হস্তান্তর করা হয়েছে। তিনি বলেন, বনে খাদ্য সংকট ও বনাঞ্চল কমে আসায় প্রায় সময় বন্যপ্রাণীরা খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে চলে আসছে। এটি অবশ্যই আমাদের নেতিবাচক কিছুই ইঙ্গিত করছে। বন্যপ্রাণীদের খাবারের সংকট দেখা দিলে এটি আমাদের পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করবে। বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা এবং তরুণ বন্যপ্রাণী গবেষক জোহরা মিলা বলেন, অজগর নির্বিষ একটি সাপ। এই সাপটি নিশাচর ও খুবই অলস প্রকৃতির, প্রয়োজন ছাড়া নড়াচড়াও করে না। এই প্রজাতিটি গাছে একাকী বাস করলেও শুধু প্রজননকালে জোড়া বাঁধে। সাধারণত মার্চ থেকে জুনের মধ্যে প্রজননকাল। দেশের ম্যানগ্রোভ বন, ঘাসযুক্ত জমি, চট্টগ্রাম ও সিলেটের চিরসবুজ পাহাড়ি বনে এদের দেখা পাওয়া যায়। সাপটি সাধারণত মানুষের ক্ষতি করে না। খাদ্য হিসেবে এরা ইঁদুর, মুরগি, সাপ-কচ্ছপের ডিম, ছোট বন্যপ্রাণী ইত্যাদি খায়। এটি তার আকারের চেয়েও অনেক বড় প্রাণী খুব সহজেই গিলে খেতে পারে। তিনি বলেন, চামড়ার জন্য সাপটি পাচারকারীদের লক্ষবস্তুতে পরিণত হয়েছে। ফলে আমাদের বনাঞ্চল থেকে এটি দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ এর তফসিল-২ অনুযায়ী এ বন্যপ্রাণীটি সংরক্ষিত, তাই এটি হত্যা বা এর যে কোনো ক্ষতি করা হবে দণ্ডনীয় অপরাধ।