মনোহরদীতে খরতাপে চৌচির ধানের বীজতলা, দিশেহারা কৃষক
নিজস্ব প্রতিনিধি
১৯ জুলাই, ২০২২, 11:01 AM
নিজস্ব প্রতিনিধি
১৯ জুলাই, ২০২২, 11:01 AM
মনোহরদীতে খরতাপে চৌচির ধানের বীজতলা, দিশেহারা কৃষক
নীল নবঘনে আষাঢ়গগনে তিল ঠাঁই আর নাহি রে। ওগো, আজ তোরা যাস নে ঘরের বাহিরে॥ কালিমাখা মেঘে ও পারে আঁধার ঘনিয়েছে দেখ্ চাহি রে॥
রবীন্দ্রনাথের আষাঢ়ের কবিতা ও বাংলা সিনেমা গানের কথাগুলোকে পাল্টে দিয়ে বাংলাদেশের চীরচেনা প্রকৃতির রূপ আজ যেন নতুনভাবে সেঁজেছে। প্রকৃতির আচরণে বাংলাদেশ আষাঢ়-শ্রাবণ এই দুই মাস ছিল বর্ষাকাল। দিনভর বৃষ্টি হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু প্রকৃতি যেন সে তার চিরচেনা রূপে ফিরে যেতে বেঁকে বসেছে। বর্ষার এই মৌসুমেও বৃষ্টির দেখা নেই। পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের দেখা নেই নরসিংদীর মনোহরদীতে। অনাবৃষ্টির কারণে খরায় ফেটে চৌচির হয়েছে ফসলের মাঠসহ রোপা আমনের বীজতলা। আগামী সপ্তাহ থেকে জমিতে রোপা আমন চাষ করার কথা থাকলেও বৃষ্টি না হওয়ায় জমি চাষ করতে পারছেন না প্রান্তিক কৃষকরা। যার দরুন কৃষকের কপালে চিন্তার ভাঁজ।
সময়মতো ধান রোপণ করতে না পারলে চলতি মৌসুমে ভালো ফলন পাওয়া যাবে না। সে কথা মাথায় রেখে কৃষকরা বাধ্য হয়ে সেচের মাধ্যমে পানি দিয়ে বীজতলায় আমনের চারা তৈরির চেষ্টা করলেও পর্যাপ্ত পানির অভাবে জমি ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে। পানির অভাবে ধানের চারা শুকিয়ে বীজতলাতে নষ্ট হচ্ছে। প্রচন্ড খরতাপে পশুপাখিসহ মানুষজন দিশেহারা হয়ে পড়ছে। দেখা দিচ্ছে নানাবিধ রোগবালাই। প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে বের হচ্ছে না। একটু শীতল ছায়া বা এক পশলা বৃষ্টির অপেক্ষায় রয়েছে লোকজন । কাঙ্ক্ষিত বৃষ্টি না হলে একদিকে যেমন কৃষকের সেচ খরচ বৃদ্ধি পেয়ে ধানের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে, অন্যদিকে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ার আশঙ্কাও দেখা দিতে পারে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বীজতলা ঘুরে দেখা যায়, বৃষ্টির কারণে রোপা আমনের জন্য তৈরি বীজতলায় ধানের চারাগুলো সঠিকভাবে বেড়ে উঠতে পারছে না। পানির অভাবে বীজতলা ও ফসলি জমি ফেটে চৌচির হয়ে আছে। উপজেলার শুকুন্দী সুতালরীকান্দা গ্রামের কৃষক রফিক ও আহম্মদ আলী জানান, আষাঢ় মাস শেষ হয়ে শ্রাবণ মাস চলছে অথচ এখনো পর্যাপ্ত বৃষ্টি হয়নি। পানির অভাবে ধানের চারাগুলোও বড় হতে পারছে না। বীজতলাতে পানি খুবই দরকার। এদিকে মাঠে ধান রোপণের জন্য হাতে সপ্তাহ দুয়েক সময় আছে। এর মধ্যে যদি পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হয় তাহলে এ বছর রোপা আমন চাষ করে ভালো ফলন পাওয়া সম্ভব হবে না বলে জানান স্থানীয় কৃষকরা। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আয়েশা আক্তার বলেন, বর্ষার এই মৌসুমে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন বহু কৃষক। তবে কয়েক দিনের মধ্যে বৃষ্টি শুরু হলে চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে কোন প্রকার শঙ্কা থাকবেনা বলে মনে করছেন তিনি।