ঢাকা ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম
চার পদ্ধতিতে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা: আলী রীয়াজ একনেকে ৮ হাজার ৩৩৩ কোটি টাকার ১৩ প্রকল্প অনুমোদন ৮ দিন ব্যাহত হতে পারে দেশের স্যাটেলাইট সেবা কঠিন ও অস্বস্তিকর প্রশ্ন করা সাংবাদিকদের অধিকার নয়, দায়িত্ব: প্রেস সচিব নেপালে 'জেন জি' আন্দোলনে নিহতরা রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সমাহিত মেট্রোরেল স্টেশনে দোকান ভাড়ার বিষয়ে নতুন বার্তা ছয় মাসের মধ্যে সুষ্ঠু নির্বাচন করে দায়িত্ব থেকে মুক্তি চাই নতুন মামলায় আনিসুল-আমুসহ ৮ জন গ্রেফতার পরিবহন পুলের ৪০৬ জন গাড়ি চালকের নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত একযোগে ৫৫৫ সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তাকে বদলি করল এনবিআর

ভরা মৌসুমেও মেঘনা ও তেঁতুলিয়ায় মিলছে না ইলিশ

#

নিজস্ব প্রতিনিধি

০৯ জানুয়ারি, ২০২৩,  3:17 PM

news image

জানুয়ারি মাসে মেঘনা, তেঁতুলিয়ায় প্রচুর ইলিশ পাওয়ার কথা থাকলেও কাঙ্ক্ষিত ইলিশের দেখা মিলছে না ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে। দিন-রাত খেটে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে জেলেদের। এতে পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন তারা। জেলেরা বলছেন, নদীতে অসংখ্য খুঁটা ও মেহেন্দি জাল এবং নাব্য-সংকটের কারণে ইলিশের এই সংকট দেখা দিয়েছে। মৎস্য বিভাগ বলছে, খুব দ্রুত নদী খননের মাধ্যমে ইলিশ চলাচলের রুটগুলো উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। ইলিশের প্রজনন মৌসুমে গত ৭ থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন সারা দেশের সব নদ-নদীতে ইলিশ ধরা ও সর্বত্র কেনাবেচা নিষিদ্ধের পর ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে মেঘনা-তেঁতুলিয়ায় প্রচুর ইলিশ পাওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে মিলছে না কাঙ্ক্ষিত ইলিশ। ফলে ভোলার মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদী তীরের মাছের ঘাটগুলোয় এখন নেই আগের মতো হাঁকডাক। চলছে সুনসান নীরবতা। শুয়ে-বসে দিন কাটাচ্ছেন ঘাটের আড়ৎদার ও শ্রমিকরা। তারা আরও বলেন, তীব্র শীত আর ঘন কুয়াশা উপেক্ষা করে নদীতে গিয়েও জ্বালানি তেলের খরচ উঠছে না। তাই পরিবার-পরিজন নিয়ে বেশ কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন তারা। একই অবস্থা আড়তদার ও ব্যাপারীদের। ইলিশের সংকট থাকায় অলস সময় কাটাচ্ছেন তারা। গুনতে হচ্ছে লোকসান। দাদনের টাকা ফেরত পাওয়া নিয়েও শঙ্কায় আছেন তারা। তাই দ্রুত এ সংকট দূর করতে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তারা। সরেজমিনে দেখা যায়, নদীতে ইলিশ নেই। তাই এখন অনেক ট্রলার মালিক ট্রলার মেরামত করছেন নদীর পাড়ে। আর জেলেরা নদীর পাড়ে বসে ছেঁড়া জাল বুনন করে সময় পার করছেন। কথা হয় ভোলার ইলিশা ঘাট এলাকার জেলে আকতার মাঝির সঙ্গে। তিনি জানান, গত শুক্রবার রাতে ২০ লিটার ডিজেল নিয়ে সাত জেলেসহ তিনি মেঘনায় ইলিশ শিকারে যান। শনিবার মাত্র চার হাজার টাকার ইলিশ নিয়ে ফেরেন। ২ হাজার ৩০০ টাকা তেলের দাম পরিশোধ করে জনপ্রতি পেয়েছেন ২০০ টাকা করে। আকতার আরও জানান, এর চার দিন আগে ২ হাজার ৩০০ টাকার তেল নিয়ে মাছ ধরতে গিয়ে মাত্র ৩ হাজার টাকার মাছ পেয়েছিলেন। স্থানীয় জেলে কাসেম মাঝি, আবুল বাশার, হাবিব মাঝির সঙ্গে কথা হলে তারাও একই কথা বলেন। এই সংকটে তারা এখন পেশা পরিবর্তনের কথাও ভাবছেন। ইলিশা মৎস্য ঘাটের আড়তদার মো. আবু তাহের, মো. আরিফ, মো. সাহাবুদ্দিন ও আবদুর রহমান জানান, প্রতিবছর এ সময় ইলিশ ঘাটগুলো থাকতো জমজমাট। এখন ব্যবসায়ীরা শুয়ে-বসে দিন কাটাচ্ছেন। তারা আরও জানান, জেলেদের যে দাদন দেওয়া হয়েছে, তা ফেরত পাওয়া নিয়ে তারা শঙ্কায় আছেন। কারণ জেলেরা যে ডিজেল নিয়ে নদীতে যান এবং যে মাছ পান, তা বিক্রি করলে তেলের দাম দিয়ে কখনো ২০০ টাকা, কখনো ৩০০ টাকা ভাগে পান। আবার কখনো তেলের দামও ওঠে না। এ অবস্থায় তাদের থেকে দাদনের টাকা রাখা মানবিক কারণেও সম্ভব হয় না। আড়তদারদের হিসাবমতে, জেলার দুই লাখ জেলের মধ্যে কমপক্ষে এক লাখ জেলের দাদন নেওয়া আছে। এর পরিমাণ প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্যাহ জানান, ইলিশ গভীর পানির মাছ। মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে অনেক ডুবচরের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ইলিশের চলাচলে বাধার সৃষ্টি হওয়ায় ইলিশ এখন এখানে কম আসে। তাই জেলেরা কাঙ্ক্ষিত ইলিশ পাচ্ছেন না। তিনি আরও জানান, এ সমস্যা সমাধানে কাজ করছে মৎস্য অধিদফতর। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে সেগুলো খননের আওতায় এনে ইলিশ চলাচলের রুটগুলো উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। উল্লেখ্য, ভোলা জেলার দুই লাখেরও বেশি মানুষ মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করে। প্রতিবছর এ সময় মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীতে কাঙ্ক্ষিত ইলিশের দেখা মিললেও এ বছর তা মিলছে না। দিন দিন এ সমস্যা আরও প্রকট হচ্ছে। এ বিষয়ে দ্রুত উদ্যোগ নেওয়া সময়ের দাবি বলে মনে করেন সচেতন ব্যক্তিরা।

logo

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. নজরুল ইসলাম