
NL24 News
০৮ মে, ২০২৫, 12:54 PM

বিএনপি সাথে সম্পৃক্ত থাকার দায়ে মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয় বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম
শরীফ উল হক: বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ততার সত্যতা পাওয়ায় মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা : আব্দুল রউফ সরকার সহ অনেক মুক্তিযোদ্ধার নাম কেটে দেন তৎকালীন গাজীপুর-১ আসনের সাবেক সাংসদ ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক। খোঁজ নিয়ে জানাযায় গাজিপুরের পূবাইল এলাকার খিলগাঁও গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: আব্দুল রউফ সরকার (গেজেট নং-২৮৫৮) এই বীর মুক্তিযোদ্ধার সাথে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা সালাউদ্দিন সরকারের জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে শুরু হয় শত্রুতা। রাজনৈতিক সুবিধা নিতে স্থানীয় আওয়ামীলীগের নেতা সালাউদ্দিন তৎকালীন মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হকের সাথে যোগাযোগ করেন নানা রকম কুট কৌশল অবলম্বন করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সাবেক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক এর পরামর্শে ঐ আওয়ামীলীগ নেতা সালাউদ্দিন সরকার ২০২১ সালে বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: আব্দুল রউফ সরকারের বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয়ে একটি মিথ্যা অভিযোগে আবেদন দাখিল করেন। সেখানে বলা হয় মুক্তিযুদ্ধা মো: আব্দুল রউফ সরকার বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত এবং তিনি সরাসরি মুক্তিযোদ্ধে অংশগ্রহণ করেননি।
সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে সাবেক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হকের সভাপতিত্বে, জাতীয় মুক্তিযুদ্ধা কাউন্সিল জামুকায় অনুষ্ঠিত একটি সভায় এবিষয়ে আলোচনা হলে, সেই সভায় বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: আব্দুল রউফ সরকারের কোন বক্তব্য না শুনেই এক তরফা ভাবে তার গেজেট বাতিলের সুপারিশ করা হয়। ঐ সভায় বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থাকার কারণে বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: আব্দুল রউফ সরকারসহ আরও বেশ কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম গেজেট তালিকা থেকে বাতিলের সুপারিশ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালতে রিট করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: আব্দুল রউফ সরকার। সেই রিট গ্রহণ করে আদালত মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন, “রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পযন্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: আব্দুল রউফ সরকারের মুক্তিযোদ্ধা গেজেট বহাল থাকবে এবং তার নিয়মিত ভাতা প্রদান করতে হবে”। নথি পত্র ঘেটে দেখা যায় ১৯৭২ সালে হাবিবুল্লাহ বাহার স্বাক্ষরিত গেরিলা মুক্তিযোদ্ধা সনদধারী বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: আব্দুল রউফ সরকার ২০০৬ সালে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটিতে আবেদন করেন।
সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের সাক্ষ্য, সনদ, দলিল দস্তাবেজ যাচাই-বাছাই শেষে তাকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়। একই সাথে ২০১৩ সালে তৎকালীন গাজীপুর জেলা প্রশাসকের সাক্ষরিত এক চিঠিতে মো: আব্দুল রউফ সরকারকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বাকৃতি দেওয়ার জন্য জাতীয় মুক্তিযুদ্ধা কাউন্সিল জামুকা ও মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে চিঠি প্রদান করেন। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৩ সালে মো: আব্দুল রউফ সরকার বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেট ভুক্ত হন। সেই থেকে এখন পর্যন্ত তিনি নিয়মিত মুক্তিযোদ্ধা ভাতা পাচ্ছেন। বর্তমানে সাবেক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক পলাতক থাকলেও তার দোসর সালাউদ্দিন সরকার ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: আব্দুল রউফ সরকারকে “ভুয়া” আক্ষায়িত করে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। এবিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: আব্দুল রউফ সরকারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি ১৯৭১ সালে ৩নং সেক্টরে ১১১ নং গেরিলা ইউনিটে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছি।
সালাউদ্দিন সরকারের সাথে জমি সংক্রান্ত বিরোধ থাকায় তার বিরুদ্ধে আমি একাধিক মামলা দায়ের করি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সালাউদ্দিন সরকার আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে আমাকে সামাজিক ভাবে হেয়ো প্রতিপন্ন করছেন। আমি এর নিন্দা জানাচ্ছি, তিনি আরও বলেন সালাউদ্দিন সরকার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দলনে অংশগ্রহণকারী ছাত্র হত্যা মামলার আসামী, মামলা নং-১৬ তারিখ ০৮/১২/২০২৪ । এ বিষয়ে সালাউদ্দিন সরকারের বক্তব্য জানতে চালাইতে তিনি বলেন, জমি সংক্রান্ত বিরোধের সাথে মুক্তিযোদ্ধ মন্ত্রণালয়ের আবেদন করার কোন সম্পর্ক নাই। তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন জামুকা তার গেজেট বাতিল করেছে, এখানে আমি কি করবো। তবে উচ্চ আদালতের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান।