
নিজস্ব প্রতিবেদক
০৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, 9:10 PM

বছরের সর্বনিম্ন রেমিট্যান্স এলো আগস্টে
ডলার-সংকটের মধ্যে খোলা মুদ্রাবাজারে ডলারের উচ্চ দর আর প্রবাসীদের হুন্ডির মাধ্যমে রেমিট্যান্স পাঠানোয় চলতি বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন রেমিট্যান্স এসেছে সদ্য বিদায়ী আগস্টে। এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রবাসীরা ১৫৬ কোটি ৪ লাখ ডলার পাঠিয়ে ছিল। যা এখন পর্যন্ত চলতি বছরের সর্বনিম্ন। জুলাই মাসে প্রবাসীরা ১৯৭ কোটি ৩১ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠালেও সদ্য বিদায়ী আগস্ট মাসে কমে দাঁড়িয়েছে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ মার্কিন ডলারে। রবিবার (৩ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। গত ৩১ আগস্ট অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) এবং বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) রেমিট্যান্সে ডলারের দাম ৫০ পয়সা বাড়িয়ে ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা নির্ধারণ করেছে। এছাড়া, রেমিট্যান্সের বিনিময় হারে ২.৫ শতাংশ প্রণোদনার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের আগস্টে সরকারি মালিকানাধীন পাঁচ বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ১৮ কোটি ৩১ লাখ ডলার। বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ১৩৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার। বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৬৩ লাখ ডলার এবং বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৩ কোটি ৩৯ লাখ ডলার। সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। বেসরকারি খাতের এ ব্যাংকটির মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৩৪ কোটি ডলারের কিছুটা বেশি। এছাড়া সোশ্যাল ইসালমী ব্যাংকের মাধ্যমে ১২ কোটি ৭৪ লাখ ডলার, ব্র্যাক ব্যাংকের মাধ্যমে ৮ কোটি ৯২ লাখ ডলার, ট্রাস্ট ব্যাংকের মাধ্যমে ৭ কোটি ৪৪ লাখ ডলার এবং আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে ৭ কোটি ৩৩ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। এর আগে জুলাই মাসে ১৯৭ কোটি ৩০ লাখ ডলারের (১.৯৭ বিলিয়ন ডলার) রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। দেশীয় মুদ্রায় (এক ডলার সমান ১০৮.৫০ টাকা ধরে) এর পরিমাণ ২১ হাজার ৪০৭ কোটি টাকার বেশি। এটি আগের মাস জুনের তুলনায় প্রবাসী আয়ের পরিমাণ কমেছে ২২ কোটি ৬০ লাখ ডলার। আগের মাস জুনে রেমিট্যান্সে এসেছিল ২১৯ কোটি ৯০ লাখ ডলার। গত জুন মাসে রেকর্ড পরিমাণ ২১৯ কোটি ৯০ লাখ ডলার (২.১৯ বিলিয়ন ডলার) প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স এসেছিল দেশে। একক মাস হিসেবে যেটি ছিল প্রায় তিন বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আসা প্রবাসী আয়। এর আগে ২০২০ সালের জুলাই মাসে ২৫৯ কোটি ৮২ লাখ ডলারের রেকর্ড প্রবাসী আয় এসেছিল। খাত সংশ্লিষ্টদের মতে, ২০২০ সালে হুন্ডি বন্ধ থাকায় ব্যাংকিং চ্যানেলে সর্বোচ্চ সংখ্যক রেমিট্যান্স এসেছিল। বিদায়ী ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ২ হাজার ১৬১ কোটি মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স। এটি এ যাবৎকালের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে করোনাকালীন ২০২০-২০২১ অর্থবছরে সর্বোচ্চ দুই হাজার ৪৭৭ কোটি ডলারের রেমিটেন্স এসেছিল দেশে। সদ্য বিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রথম দুই মাসে দুই বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল। গত অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে এসেছিল ২০৯ কোটি ৬৩ লাখ ডলার, আগস্টে ২০৩ কোটি ৬৯ লাখ ডলার এসেছিল। টানা পাঁচ মাস দুই বিলিয়ন ডলারের মাইলফলকে আর যেতে পারেনি। অর্থবছরের সেপ্টেম্বরে আসে ১৫৪ কোটি ডলার, অক্টোবরে ১৫২ কোটি ৫৫ লাখ ডলার, নভেম্বরে ১৫৯ কোটি ৫১ লাখ ডলার, ডিসেম্বরে ১৬৯ কোটি ৯৭ লাখ ডলার, জানুয়ারিতে এসেছিল ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ ডলার, ফেব্রুয়ারিতে ১৫৬ কোটি ডলার আসে। মার্চ এসেছিল ২০২ কোটি ২৪ লাখ ডলার, এপ্রিলে ১৬৮ কোটি ৪৯ লাখ এবং মে মাসে ১৬৯ কোটি ডলার আসে। সবশেষ ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে জুন মাসে আসে ২১৯ কোটি ৯০ লাখ ডলার।