পদত্যাগের বিষয়ে যা বললেন আকরাম খান
ক্রীড়া প্রতিবেদক
২১ ডিসেম্বর, ২০২১, 6:10 PM
ক্রীড়া প্রতিবেদক
২১ ডিসেম্বর, ২০২১, 6:10 PM
পদত্যাগের বিষয়ে যা বললেন আকরাম খান
একদিন আগে আকরাম খানের স্ত্রী সাবিনা আকরাম ফেসবুকে লিখেন, ‘ক্রিকেট অপারেশনস ছেড়ে দিচ্ছে আকরাম খান’। কিন্তু যিনি এই পদে আছেন, সেই আকরাম মুখে কুলুপ এঁটেছিলেন। অবশেষে আজ (মঙ্গলবার) সন্ধ্যায় বনানীর নিজ বাসায় নীরবতা ভেঙেছেন সাবেক অধিনায়ক। জানিয়েছেন, পদত্যাগের সিদ্ধান্ত তিনি নিয়েছেন। যদিও বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের সঙ্গে আলাপ করেই পদত্যাগের ঘোষণা দেবেন বলে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন তিনি।গত অক্টোবরে বিসিবি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের আড়াই মাস হয়ে গেলেও কার্যনির্বাহী কমিটি চূড়ান্ত করা হয়নি।
আগের হিসেবেই দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন পরিচালকরা। বিসিবি সভাপতি পাপন ঘোষণা দিয়েছিলেন, দায়িত্ব হস্তান্তর করার আগ পর্যন্ত আগের মতোই যে যার দায়িত্ব পালন করবেন। সেই হিসেবে ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব সামলে যাচ্ছিলেন আকরাম। টানা ৬ বছর এই দায়িত্ব পালন করার পর পারিবারিক কারণে সরে যেতে চাইছেন তিনি যদিও দায়িত্ব ছাড়ার কথা বললেও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেননি আকরাম। সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, ‘আমরা পারিবারিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছি (পদত্যাগের)। আমি ৮ বছর ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগে ছিলাম। এই সময়টাতে অনেক সহযোগিতা পেয়েছি বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ভাইয়ের। তার সঙ্গে আলোচনা করে আপনাদের ফাইনালি জানাবো। যেহেতু আপনারা এখানে এসেছেন। এই কারণে এই মুহূর্তে এতটুকুই আপনাদের বলার ছিল।’ বিসিবি সভাপতি অনুরোধ করলে আপনি থেকে যাবেন কিনা এমন প্রশ্নে আকরাম বলেছেন, ‘আমি উনার (পাপন) সঙ্গে আলাপ করে সিদ্ধান্ত নেবো। আপনারা কালকে (বুধবার) হয়তো জেনে যাবেন। এই মুহূর্তে উনি ব্যস্ত থাকায় আলোচনা করতে পারিনি।’ এর আগে আকরামের স্ত্রী সাবিনা বলেছিলেন, ‘এটা আমাদের পারিবারিক সিদ্ধান্ত। ক্রিকেট নিয়ে জীবনের বড় একটা সময় পড়ে থাকলো আকরাম। আমরা চাই এখন সে ক্রিকেটের পাশাপাশি পরিবারকে আরও সময় দিক। কিন্তু ক্রিকেট অপারেশনসের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় থাকলে তো সেটা সম্ভব নয়। এই কারণেই এমন সিদ্ধান্ত।’ ২০১৪ সালে নাজমুল হাসান পাপনের নেতৃত্বে নির্বাচিত কমিটিতে প্রথমবার ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের দায়িত্ব হাতে নেন আকরাম। পরের বছরের অক্টোবরে সতীর্থ নাঈমুর রহমান দুর্জয়ের কাছে চেয়ার হারান তিনি। এরপর ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে ফের ওই চেয়ার ফিরে পান। টানা ৬ বছর ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগে দায়িত্ব পালন করার পর এবার সরে দাঁড়াচ্ছেন সাবেক এই অধিনায়ক! কিছু দিন ধরে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স নিয়ে অনেক প্রশ্ন। তার আঁচ লেগেছে আকরামের গায়েও। আকরামকে ঘিরে সমালোচনার শুরুটা করেন সাকিব আল হাসান। ছুটি চাওয়া নিয়ে বিসিবি ও তার বক্তব্যে বিস্তর পার্থক্য ছিল। ওই সময় বাঁহাতি অলরাউন্ডার জানিয়েছিলেন, টেস্টে ছুটি চেয়ে পাঠানো তার চিঠি ঠিকমতো পড়েননি অপারেশনস চেয়ারম্যান। এর কয়েক দিন পর গেম ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ সুজন ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। সব মিলিয়ে কিছুটা চাপে ছিলেন আকরাম। কিছু দিন ধরে আকরামকে না জানিয়েই অনেক সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিসিবি। গত মাসে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলে পুরো দল দেশে ফেরার পর ঢাকার বিমান ধরেন আকরাম। তিনি দেশে পৌঁছানোর আগেই পাকিস্তান সিরিজ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলো হয়ে যায়। টিম ডিরেক্টর সুজনের অধীনে অনুশীলনেও নেমে পড়েন বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার। নতুন করে অনেক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও ভূমিকাতেই ছিলেন না সাবেক এই অধিনায়ক। এমনকি মোহাম্মদ সালাউদ্দিনকে সহকারী কোচ হওয়ার প্রস্তাবের বিষয়েও কিছু জানতেন না তিনি। পাকিস্তানের বিপক্ষে হোম সিরিজের দল গড়া ও কোচিং স্টাফের দায়িত্ব সম্পর্কে অবগত ছিলেন না তিনি। অথচ ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান হয়ে তারই এই দায়িত্ব সামলানোর কথা। সব মিলিয়ে গত কয়েক দিন চেয়ার থাকলেও নিষ্ক্রিয় অবস্থানে দেখা গেছে আকরামকে।