নতুন চ্যাম্পিয়নকে বরণের জন্য প্রস্তুত দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম
স্পোর্টস ডেস্ক
১৪ নভেম্বর, ২০২১, 11:19 AM
স্পোর্টস ডেস্ক
১৪ নভেম্বর, ২০২১, 11:19 AM
নতুন চ্যাম্পিয়নকে বরণের জন্য প্রস্তুত দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম
সময় ঘনিয়ে এলো। দেখতে দেখতে শেষের পথে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মহারণ। আজ রোববার বিশ্বকাপের ফাইনালে লড়বে তাসমান সাগরের দুই পাড়ের দুদেশ নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া। নতুন চ্যাম্পিয়নকে বরণের জন্য প্রস্তুত দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়াম। ম্যাচ শুরু বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায়। এবারের বিশ্বকাপে যে দলই জিতুক—হবে নতুন ইতিহাস। কারণ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এখনো শিরোপার দেখা পায়নি নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া। তাই যারা জিতবে তাদের মাথায় প্রথমবারের মতো উঠবে এই ফরম্যাটের বিশ্বচ্যাম্পিয়নের মুকুট।
এর মধ্যে বেশি রোমাঞ্চ ছড়াবে হয়তো নিউজিল্যান্ড শিবিরে। কারণ শুধু টি-টোয়েন্টি কেন, কোনো ফরম্যাটেই এখনো বিশ্বকাপ জিততে পারেনি কিউইরা। ২০১৯ সালে লর্ডসে ওয়ানডে বিশ্বকাপেরও ফাইনালে উঠেছিল নিউজিল্যান্ড। কিন্তু পেন্ডুলামের মতো দুলতে থাকা ম্যাচটিতে দুর্ভাগ্যক্রমে হেরে যায় তারা। আইসিসির ইভেন্টে তাদের বড় সাফল্য বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে। প্রথমবারের মতো আয়োজিত হওয়া টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চ্যাম্পিয়ন হয়েছে কিউইরা।
এবার বিশ্বকাপ জয়ের আরেকটি নতুন সুযোগ নিউজল্যান্ডের সামনে। লর্ডসের হৃদয়ভাঙা ফাইনালের দুই বছরের মাথায়ই সেই দুঃখ ভোলার সুযোগ মিলেছে তাদের। শিরোপা জয়ের হতাশা গুঁটিয়ে এবারের ফাইনালের দিকেই চোখ রাখছে নিউজিল্যান্ড। সেমিফাইনালের জয়ের নায়ক জিমি নিশাম তো তেমনটাই শুনিয়ে রাখলেন, ফাইনাল নিয়ে কতটা বদ্ধপরিকল্প তাঁরা। নিশামের ভাষায়, ‘আমাদের দৃষ্টি নিবদ্ধ আসল লড়াইয়ে (ফাইনাল)। আমি ও দল হিসেবে আমরা সবাই, এখনই নিজেদের ছাড়িয়ে যেতে চাই না। আরেকটি ম্যাচ আছে এবং আমি নিশ্চিত, শেষ বাধা পার হতে পারলে আবেগ প্রকাশের আরও অনেক বড় উপলক্ষ আসবে।’
বড় মঞ্চে শিরোপা জেতার অভিজ্ঞতা অবশ্য অস্ট্রেলিয়ার ভালো। ওয়ানডে বিশ্বকাপের শিরোপা মুকুট আগেই পেয়েছে তারা। টি-টোয়েন্টির ফাইনালেও খেলেছে। তবে এই ফরম্যাটের শিরোপা এখনো অধরা। প্রথমবার ২০১০ সালের বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ফাইনাল খেলে রানার্সআপ হয় অসিরা। এবার টি-টোয়েন্টিতে নিজেদের দ্বিতীয় ফাইনালে শিরোপা নিয়েই বাড়ি ফিরতেই মুখিয়ে আছে অ্যারন ফিঞ্চের দল।
নিউজিল্যান্ডকে সমীহ করে ফাইনাল জিততে মরিয়া অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। তাঁর কথায়, ‘এটি ফাইনাল ম্যাচ। আর প্রতিপক্ষ হিসেবে নিউজিল্যান্ড অনেক ক্যালকুলেটিভ দল। তারা অনেক পরিকল্পনা নিয়ে খেলতে নামবে। আমাদের সেভাবেই প্রস্তুত থাকতে হবে। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করে ফাইনাল জিততে হবে এবং প্রথমবারের মতো শিরোপার স্বাদ নিতে হবে।’
ছাড় দিতে নারাজ কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনও। তাঁর কথায়, ‘ওয়ানডে বিশ্বকাপে শেষ দুই আসরের ফাইনাল খেলার অভিজ্ঞতা আমাদের আছে। কিন্তু টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এই প্রথম ফাইনাল খেলব আমরা। শিরোপা জিতে এই প্রথমকে স্মরণীয় করতে চাই। অস্ট্রেলিয়ার মতো দলের বিপক্ষে জিততে হলে, তিন বিভাগেই তাদের চেয়ে ভালো খেলতে হবে। ম্যাচের শুরু থেকেই অসিদের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে।’
পুরো টুর্নামেন্টের সেরা দুটি দলই উঠেছে ফাইনালে। তাই লড়াই যে জমজমাট হবে সেই ঝাঁঝ বোঝাই যাচ্ছে। চলমান বিশ্বকাপে দুদলই সুপার টুয়েলভে একটি করে ম্যাচ হেরেছে, জিতেছে চারটিতে। তবে ব্যালেন্স দল দুটিই। অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটে-বলের দাপট আর কিউইদের বোলিং-ফিল্ডিং চমক। সঙ্গে আছে দুই দলের দুই অভিজ্ঞ অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন ও অ্যারন ফিঞ্চ। সবমিলিয়ে লড়াই হবে সমানে সমান।
যদিও পরিসংখ্যান কিছুটা অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড ১৪ বার মুখোমুখি হয়েছে। যার মধ্যে ৯টিতে জিতেছে অসিরা, কিউইরা জিতেছে ৫টিতে। তা ছাড়া ২০১৫ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপেও নিউজিল্যান্ডকে ফাইনালে হারিয়েছিল অসিরা। তাই তৃপ্তির ঢেকুর নিতেই পারে অস্ট্রেলিয়া। তবে পরিসংখ্যান পেছনে ফেলে কিউইরাও যে চমকে দিতে পারে সেটা নিয়ে সন্দেহ নেই। এবার দেখা যাক—মরুর বুকে বিশ্বচ্যাম্পিয়নের মুকুট ওঠে কার মাথায়! পাঁচবারের ওয়ানডে বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার না কি প্রথমবার ট্রফি জয়ের স্বপ্ন দেখা নিউজিল্যান্ডের?
অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপ দল : অ্যারন ফিঞ্চ (অধিনায়ক), ডেভিড ওয়ার্নার, স্টিভেন স্মিথ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, মিচেল মার্শ, ম্যাথু ওয়েড, অ্যাশটন অ্যাগার, প্যাট কামিন্স, মিচেল স্টার্ক, কেন রিচার্ডসন, অ্যাডাম জাম্পা, জশ হ্যাজেলউড, মার্কাস স্টোইনিস, মিচেল সোয়েপসন ও জশ ইংলিস।
নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপ দল : কেন উইলিয়ামসন (অধিনায়ক), মার্টিন গাপটিল, ডিরেল মিচেল, টিম সেইফার্ট, জিমি নিশাম, ডেভন কনওয়ে, গ্লেন ফিলিপস, কাইল জেমিসন, লকি ফার্গুসন, ইশ সোধি, টিম সাউদি, ম্যাট হেনরি, অ্যাস্টল, মার্ক চ্যাম্পম্যান ও ট্রেন্ট বোল্ট।