ওরা আমাদের বাংলার আবা-বিল
১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, 4:18 PM
NL24 News
১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, 4:18 PM
ওরা আমাদের বাংলার আবা-বিল
। কে. হােসাইন ।
আবা-বিল অর্থ অলৌকিক পাখি, যার নাম ও তার দ্বারা কিভাবে অত্যাচাকারী জালিমদের ধ্বংস করা হয়েছে। সে ঘটনা মহাগ্রন্থ পবিত্র আল - কোরআনে আমাদের স্রষ্টা বলেছেন।
১)তুমি কি দেখনি যে, তোমার রব হস্তি অধিপতিদের কিরূপ পরিণতি করেছিলেন!?
২)তিনি কি তাদের চক্রান্ত ব্যর্থ করে দেননি!?
৩)তাদের বিরুদ্ধে তিনি ঝাঁকে ঝাঁকে আবা-বিল (অলৌকিক পাখি) প্রেরণ করেছিলেন। - (সূরা - ফীল, আয়াত: ১,২,৩
মক্কা নগরীতে অবস্থিত পবিত্র আল্লাহর ঘর 'কাবা শরীফ' যখন ধর্মীয় ভাবগম্ভীর্য ও পবিত্রতায় অন্যতম উপাসনালয় এবং মুমিনগণ মুগ্ধ হয়ে দলে দলে কাবা ঘরের দিকে আকৃষ্ট হতে থাকেন।
তখন ইয়েমেনের গভর্নর আবরাহা ঈর্ষা'ণিত হয়ে কাবা ঘর ধ্বং'স (( নাউজুবিল্লাহ )) করার পরিকল্পনা করে। এবং ঐ উদ্দেশ্যে হাজার হাজার সৈন্য ও হাতি নিয়ে মক্কার দিকে রওয়ানা হয় জালিম আবরাহা।
কিন্তু যখন তারা কাবা শরীফের কাছাকাছি পৌছায়। তখন মহা পরাক্রমশালী আল্লাহর নির্দেশে হাজার হাজার আবাবিল পাখি আবরাহার বাহিনীর উপর অতর্কিত আক্রমণ করে। পাখিগুলোর পায়ে ২ টি পাথর ও ঠোঁটে ১ টি করে পাথর নিয়ে আবরাহার বিশাল হাতি বাহিনীর উপর নি'ক্ষেপ করতে থাকে এবং একপর্যায়ে এই বিশাল ক্ষমতাধর বাহিনী পুরোপুরি ধুলিস্যাৎ হয়ে যায়।
আমরা তারি অনুরূপ একটি ঘটনা বাংলাদেশে দেখেছি গত ৫ ই আগস্ট ২০২৪ইং এ।
কিন্তু এবার ছিল বাংলাদেশের স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার ছোট ছোট ছাত্র - ছাত্রী (বাংলার আবাবিল)! যারা মূলত জুলুম ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে এই দেশের বঞ্চিত ও নিষ্পেষিত সাধারণ জনগণের সূর্য সন্তান। যারা আসলে আল্লাহর ইচ্ছায় 'বাংলার আবাবিল' হয়ে আমাদের রক্ষা করতে এগিয়ে এসেছে। যদিও তারা নির্যাতনকারীদের ক্ষমতা ও অর্থের সামনে অতি নগন্য, দুর্বল ও অসহায়। এত ছোট হওয়া সত্ত্বেও ঐসকল জালিম, শোষণকারী এবং তাদের দুর্ভেদ্য ক্ষমতাকে তসনস করে দিয়ে তাদের দলবল সহ পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে! তাই ওরা আমাদের "বাংলার আবাবিল"!
যুগে যুগে আমরা দেখেছি অহংকারী, জালিম এবং অন্যায়কারীরা যত ক্ষমতাধর বা পরিকল্পনাকারী হোকনা কেন, স্রষ্টা তাদের চাইতেও মহাপরিকল্পনাকারী এবং অনন্তকালের শ্রেষ্ঠ ক্ষমতার অধিকারী।
তিনি অন্যকারীদের ধ্বংস অনিবার্য করার ক্ষমতা রাখেন এবং খুব সাধারণ ও দুর্বল কিছু দ্বারা তাদের ধ্বংস করেন! যে প্রমাণ মহা গ্রন্থ ও জীবদ্দশায় আমরা জেনেছি ও দেখেছি।
অতএব, অন্যায়কারীদের জন্ম যতবার হবে, ততবার স্রষ্টা তাদের করুন পরিণতির সথে ধ্বংস করে দিবেন। এটাই চিরন্তন সত্যি।
স্রষ্টার অশেষ মেহেরবানীতে বাংলাদেশে আজ একটা সুন্দর প্রেক্ষাপট সৃষ্টি হয়েছে এবং সুন্দর ভবিষ্যতের দিকে হাঁটছে বলে সাধারণ জনগণ মনে করছে। সেইসাথে অনেক প্রত্যাশা নিয়ে জনগণ তাকিয়ে আছে, একটি বৈষম্য মুক্ত ও শোষণ মুক্ত রাজনৈতিক দল, সরকার, সরকারি কর্মকর্তা - কর্মচারী এবং একটি শান্তির রাষ্ট্র উপহার পাওয়ার জন্যে।
যে রাষ্ট্রে সরকারি সুযোগ সুবিধা পেতে সাধারণ জনগণকে আর কোনদিন ক্ষমতাধরদের চাটুকার, দলভুক্ত দাস এবং করুণার পত্র হতে হবে না।
দুঃখজনক সত্য হচ্ছে, সরকারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ আরগানগুলোতে এখনো দমনপীড়ন মাস্টারমাইন্ড জালিম সরকারের মূল সহযোগীরা বহাল তবিয়তে রয়েগেছেন। যারা এখনো সাধারণ জনগণের বৈষম্যহীন প্রাপ্তির মূল বাধা হয়ে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মূল উদ্যেশ্য ও ভাবমূর্তি নষ্ট করার সর্বাত্মক চেষ্টা করছেন।
বিশেষ করে জনগণের প্রয়োজনের বিষয়গুলো মূল কর্মকর্তা ও উপদেষ্টাদের কাছে যেন না পৌঁছায় সেইক্ষেত্রে বাধার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও কর্মচারী।
মাঝে মাঝে তাদের আচরণে মনেহয় সরকার পরিবর্তনের পর শুধু ব্যক্তি পরিবর্তন হয়েছে কিন্তু ঐ অর্গনের চেয়ার, টেবিল, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কর্মপন্থা এবং চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সেই আগের মতোই দায় দায়িত্বহিন রয়েগেছে! যেকারনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েইগেছে।
দলমত নির্বিশেষে আমাদের প্রতিটি নাগরিকের মনে রাখা দরকার, যারা এই মাতৃভূমিকে ভালবেসে ১৯৭১ইং থেকে ২০২৪ইং পর্যন্ত নিজেদের স্বার্থ উপেক্ষা করে সবকিছু বিলিয়ে দিয়েছেন, পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন এবং নির্দ্বিধায় প্রাণ দিয়েছেন। তাদের ও তাদের পরিবারের এই আত্মত্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে, কেউ যেন সেটা পুজি করে সাইনবোর্ট বানিয়ে নিজেদের আখের গোছাতে বা ব্যবহার করতে না পারে। এবং এই মহান ত্যাগ আর কোনদিন কেউ যেন কলঙ্কিত না করতে পারে। তার জন্য একটি শক্তপোক্ত ব্যাবস্থা করা খুব গুরুত্বপুর্ন এবং অনিবার্য।
এমন ব্যবস্থা নিতে হবে, যাতে সকল মুক্তি সেনাদের মহান আত্মত্যাগ এই দেশ ও জনগণের প্রকৃত স্বার্থ পূরনে কাজে আসে এবং আমাদের ১৯৭১ইং এর মুক্তিসেনা এবং ২০২৪ ইং সালে দেশপ্রেমিক আবা-বিল'রা গর্বিত ও সাধারণ জনগণের আশীর্বাদ প্রাপ্তহন।