
NL24 News
৩০ জুলাই, ২০২৫, 11:14 AM

সর্বহারা বাঙালি জাতি ও বঙ্গদেশ
|| কে হোসাইন ||
পৃথিবীর প্রতিটি ভূখণ্ডে বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠীর সংমিশ্রণ রয়েছে। তবে এই পৃথিবীর প্রচীন নড়গোষ্ঠীগুলোর মধ্য হতে প্রায় প্রতিটি নড়গোষ্ঠীর আগমন হয়েছে আমাদের এই প্রিয় মাতৃভূমি বঙ্গদেশে!
দীর্ঘকাল এই আদি নড়গোষ্ঠীগুলো বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে বসবাস করেছে এবং একে অপরের সাথে সংমিশ্রণ হয়েছে। যার ফলে আজকের বাঙালি জাতি শঙ্করায়নের মাধ্যমে বিভিন্ন জাতির সমন্বয়ে একটি আলাদা সক্রিয় বৈশিষ্ট নিয়ে বাংলা ভাষী বাঙালি জাতিতে পরিণত হয়েছে। গত দেড় হাজার বছর ধরে পর্যায়ক্রমে নেগ্রিটো, আস্ট্রিক, দ্রাবিড়, মঙ্গোলীয়, আলপাইন, আর্য ও সেমেটিক ইত্যাদী নড়গোষ্ঠীর রক্তধারার সংমিশ্রণে আজকের বাঙালি জাতির অস্তিত্ব বেঁচে আছে! আসলে
বাঙালি বলতে জাতিগত সংস্কৃতিক পরিচয় মূলত বাংলার এই ভূখণ্ড বা মাটিকে কেন্দ্র করেই। শান্তিপ্রিয় নিরীহ এই বাংলাভাষী জনগোষ্ঠীর উপর চরম জুলুম অত্যাচার চলছে সেই ভারত-ব্রিটিশ শাসন আমলেরও আগে থেকে!
কিন্তু, পাকিস্থান শাসন আমল এই বাঙালি জাতির উপর চরম লুণ্ঠ ও অত্যাচারের এক ভয়ঙ্কর রূপ নেয় এবং নিরীহ বাঙালি মুসলিম জাতির মাথা ও ঘরের উপর পা রেখে এই জাতিকে দাবিয়ে চলবার সকল প্রচেষ্টাই চালায় পাকি মুনাফেকের দল।
কিন্তু সেই অত্যাচার, খুন ও ধর্ষনের বিরুদ্ধে বাঙালি জাতি প্রতিবাদী হয়ে উঠে এবং শুরু হয় ভাষা আন্দোলন এবং সমাপ্ত হয় ১৯৭১ এর স্বাধীনতা অর্জনের মুক্তিযুদ্ধে! সেই মুক্তিযুদ্ধে বাঙালি মুসলিম জাতি জয় ছিনিয়ে নেয় এবং লেভাসধারি মুনফেকদের পরাজয় হয় চরম অপমানজনক ভাবে! সেইসাথে বাঙালি জাতি মুক্ত হয় সেই উর্দু ও হিন্দি ভাষী দুই ইবলিশ শয়তানের শোষণ ও অত্যাচারের শৃঙ্কল হতে। এই জাতি ও এই ভূখণ্ড মুক্ত হয় সেই জালিমদের থেকে, যারা বাঙালি জাতির উপর সব থেকে বেশি হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে এবং আমাদের মা বোনদেরকে ধর্ষণ করে নিসংশ হত্যা করে দাফন কাফনের ব্যাবস্থা পর্যন্ত করতে দেয়নি!
দুঃখের বিষয় হচ্ছে, লক্ষ কোটি নিরীহ মা বোন এবং ছাত্র-জনতা শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের অর্জিত স্বাধীনতা কেড়ে নিয়ে নিজেদের নামে সাইনবোর্ড বানিয়ে তার আড়ালে করেগেছে নির্লজ্য লুণ্ঠন ও হত্যার রাজনীতি এবং গুছিয়ে নিয়েছে নিজেদের ও অনুসারীদের ভবিষ্যৎ আর্থিক সচ্ছলতা!
সার্বিক বিবেচনায় আজ মনে হচ্ছে, বাঙালি জাতি নিরীহ ও শান্তিপ্রিয় বলে, এই জাতির উপর এবার সেই নির্লজ্য পলাতক মুনাফিকরা এক জোট বেঁধে প্রতিশোধ নিতে সকল ব্যবস্থাই সম্পূর্ণ করছে! বাঙালি জাতির এই দুর্সময়ে ঐসকল চির শত্রুদের প্রকাশ্যে ও গোপনে সহযোগিতা করছে, এই ভূখণ্ডে জন্ম নেয়া কিছু মুনাফেকের দল!
আর সেই সুযোগে কেউ ১৯৪৭, কেউ ১৯৫২, কাউ ১৯৭১ এবং কেউবা ২০২৪ এর প্রতিশোধ নিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে। নির্বোধ বাঙালি ছাত্র জনতাকে ধ্বংস করতে একে অন্যের বিরুদ্ধে উস্কে দিচ্ছে এবং টিস্যু পেপারের মতো ব্যবহার করছে নানান প্রলোভন দেখিয়ে! যেমনটি অতীতেও মীরজাফর আমল হতে খন্দকার মোশতাক গংদের ব্যবহার করেছিল এবং সর্বশেষ নোংরা ডাস্টবিনে নিক্ষেপ করেছে! ঠিক তেমনি বর্তমান মুনাফেকদেরও সেই একই পরিণতি হবে হয়তো!
কারণ, আল-কোরআন ও হাদিস অনুযায়ী, মুনাফিকদের আবাস স্থল হবে জাহান্নামের নিম্নস্তরে!
দুশ্চিন্তার বিষয় হচ্ছে, যদি বাঙালি মুসলিম জাতি আজ ১৯৪৭, ১৯৫২, ১৯৭১, ১৯৯০ এবং ২০২৪ এর ঐক্য ধরে রাখতে ব্যর্থ হয়, তাহলে এই ভূখণ্ড ও স্বাধীনতা হয়তো চিরতরে মার্কিন-পাক-ভারত বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে চলে যেতে পারে এবং বাংলাদেশ নামের ভূখণ্ডটি ভাগ বাটোয়ারা হয়ে যেতেপারে কয়েক ভাগে!
যা হয়তো মুসলিম রাষ্ট্র বিরোধী বিদেশী দালাল বা এদেশের রাজনৈতিক মুনাফিকগণ ব্যথিত, অন্য কোন দেশপ্রেমিক ছাত্র-জনতা বা দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দল এই ভয়াবহ পরিণতি আশা করে না।