অলৌকিকভাবে জন্ম নেওয়া সেই নবজাতক পলো নতুন ঠিকানা
নিজস্ব প্রতিনিধি
২৯ জুলাই, ২০২২, 10:25 AM
নিজস্ব প্রতিনিধি
২৯ জুলাই, ২০২২, 10:25 AM
অলৌকিকভাবে জন্ম নেওয়া সেই নবজাতক পলো নতুন ঠিকানা
ছোটমনি শিশু নিবাসে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে ময়মনসিংহের ত্রিশালে সড়ক দুর্ঘটনায় মা-বাবা ও বোনের রক্তের মধ্যে অলৌকিকভাবে জন্ম নেওয়া সেই নবজাতককে। শুক্রবার (২৯ জুলাই) সকাল ১০টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে ঢাকা আজিমপুর ছোট মনি শিশু নিবাসে পাঠানো হবে। জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. ওয়ালীউল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সরকারি তত্বাবধানে সুবিধা বঞ্চিত শিশু হিসাবে শিশু কল্যাণ বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঢাকা আজিমপুর ছোটমনি শিশু নিবাসে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। শিশু কল্যাণ সভার সদস্য এবং আত্মীয় স্বজনদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শিশুটির নাম ফাতেমা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, অনাকাঙ্ক্ষিত ও মর্মান্তিক দুর্ঘটনার মধ্য দিয়ে শিশুটির জন্মের খবর ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে অনেকেই দত্তক নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
এ ছাড়াও শিশুটির আত্মীয় স্বজনদের মধ্যেও বেশ কয়েকজন শিশুটিকে লালন-পালন করবেন বলে আগ্রহ প্রকাশ করেন। কিন্তু শিশু বোর্ড সরেজমিনে তদন্ত ও সক্ষমতা যাচাই করে শিশুটির সার্বিক বিষয়াদি বিবেচনা করে ছোট মনি নিবাসে পাঠানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।শিশুটির দাদা মোস্তাফিজুর রহমান বাবলু বলেন, প্রশাসন যে উদ্যোগ নিয়েছে এতে আমাদের কোনও আপত্তি নেই। এই সিদ্ধান্তে আমরা খুশি। দুই বছর লালন পালন শেষে ফাতেমা আবারও আমাদের মাঝে ফিরে আসবে। পরিবারের সবার ইচ্ছা ছিল নবজাতক শিশুটির নাম ফাতেমা রাখা হবে। জেলা প্রশাসক এবং কমিটির সদস্যরা সবাই মিলে ফাতেমা নাম রাখায় আমরা খুশি। তিনি আরও জানান, প্রশাসন থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে; নিহত জাহাঙ্গীরের অন্য দুই শিশু সন্তানদের নিয়ে থাকার জন্য দুই রুম বিশিষ্ট একটি হাফ বিল্ডিং ঘর নির্মাণ ও লেখাপড়াসহ সার্বিক সহায়তা করবেন। ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ওয়ায়েজ উদ্দিন ফরাজি বলেন, নবজাতকটি নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। সেখান থেকে গত সোমবার (১৮ জুলাই) রাতে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হলে তার জন্ডিস, ঘাড়ে এবং ডান হাতে ফ্র্যাকচার ধরা পড়ে। ভর্তির পরদিন মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করে হাসপাতালের এনআইসিইউ বিভাগে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে নবজাতকের জন্ডিস ভালো হলেও বুকের ও ডান হাতের হাড়ের ফ্র্যাকচার পুরোপুরি ভালো হতে আরও কয়েকদিন লাগতে পারে। গত ১৬ জুন দুপুরে ত্রিশাল উপজেলার রাইমনি গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম (৪০), তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রত্না আক্তার (৩০), মেয়ে সানজিদা আক্তারকে (৬) নিয়ে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করাতে ত্রিশালে আসেন। পৌর শহরের খান ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে রাস্তা পারাপারের সময় ময়মনসিংহগামী একটি ট্রাক তাদের চাপা দেয়। এতে জাহাঙ্গীর আলম, স্ত্রী রত্না এবং মেয়ে তিন জনেরই মৃত্যু হয়। এসময় ট্রাক চাপায় রত্নার পেট ফেটে কন্যাশিশুর জন্ম হয়।