ঢাকা ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম
যৌথবাহিনীর অভিযান: এখনও উদ্ধার হয়নি ১৮৮৫টি অস্ত্র ও ৩ লাখ গোলাবারুদ ভারতকে হুঁশিয়ারি দিয়ে যা বললেন রিজভী সীমান্ত সুরক্ষা ও চোরাচালান প্রতিরোধ বিজিবির মূল দায়িত্ব এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য সংশোধিত নির্দেশনা সরকারি চাকরিতে বয়সসীমা ৩৫ করার দাবিতে শাহবাগ অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ গাজীপুর মহানগরীর স্বেচ্ছাসেবক দলকে সু-সংগঠিত করতে রাজপথে হালিম মোল্লা পরিবারের বয়স্কদের যত্ন নেবেন যেভাবে আহতদের খোঁজখবর নিতে নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে প্রধান উপদেষ্টা সীতাকুণ্ডে শিপ ইয়ার্ডে বিস্ফোরণ, দগ্ধ ৬ চাঁদাবাজ কমলে নিত্যপণ্যের দাম কমবে: অর্থ উপপদেষ্টা

“শেখ হাসিনাকে বিদেশে হত্যা চেষ্টা জনগণ সহ্য করবে না”

#

১৬ নভেম্বর, ২০২৩,  9:10 PM

news image

-অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া-


একটা মানুষ তার নিজ দেশের জনগণের কল্যাণে কতটা উৎসর্গ করতে পারে তার একমাত্র দৃষ্টান্ত বঙ্গবন্ধু কন্যা আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি এই দেশের মাটি ও মানুষের প্রতি এতটাই দায়িত্বশীল যে এদেশের মানুষের কল্যাণে উৎসর্গ করেছে নিজের পরিবারের প্রতিটি সদস্যকে। নিজের জীবনেও অনেক ঝুঁকি নিয়েছেন। সেই সাথে নিজের জীবনকে মৃত্যুর হাতে শপে দিয়ে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছেন এদেশের দরিদ্র ও অসহায় জনগোষ্ঠীসহ সব শ্রেণির মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে। বিএনপি-জামায়াত জোটের অধীনে তাদের কুশাসনে পদদলিত বাঙালি জনগণের ভাত ও ভোটেরর অধিকার প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্যে আন্দোলন শুরু করে গত প্রায় ১৫ বছরে কঠোর পরিশ্রম করে বাংলাদেশকে বিশ্ব মানচিত্রে উন্নয়নের রুল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন। বাংলাদেশের মানুষের সার্বিক কল্যাণ, এদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির স্বার্থে দীর্ঘ ১৫ বছর একটানা কাজ করে এদেশের সাধারণ মানুষের ভরসাস্থল হিসেবে জায়গা করে নিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা। বিএনপি তাদের জ্বালাও-পোড়াও এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ফলে যেখানে জনবিচ্ছিন্ন একটি দলে পরিণত হয়েছে সেখানে আওয়ামী লীগ তথা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণের স্বার্থে কাজ করে এদেশের অসহায় ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ভরসাস্থল হিসেবে জায়গা করে নিয়েছেন। শেখ হাসিনার সততা, নিষ্ঠা, দৃঢ় মনোবল, প্রজ্ঞা ও অসাধারণ নেতৃত্ব বাংলাদেশকে বিশ্ব পরিমণ্ডলে অন্যরকম উচ্চতায় প্রতিষ্ঠিত করেছে এবং তিনি অর্জন করেছে এদেশের সাধারণ মানুষের সমর্থন ও সহায়তা যা বিএনপির মতো বিশ্বে সএপরিচিত সন্ত্রাসী সংগঠনের পক্ষে অর্জন করা সম্ভব হয়নি। এর ফলে শেখ হাসিনা বিএনপি-জামায়াতের আক্রোশের প্রধান টার্গেটে পরিণত হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত ১৫ বছরে বাংলাদেশ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। আওয়ামী লীগ সরকার ধারাবাহিকভাবে সরকার পরিচালনায় আছে বলেই এসব অর্জন সম্ভব হয়েছে। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত-স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয়ে কাজ করছে। এজন্য প্রেক্ষিত পরিকল্পনা-২০৪১ প্রণয়ন করে বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে শামিল হতে পেরেছে। দেশ আজ খাদ্যশস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। ২০২২ সালে দেশে ৪ কোটি ৪ লাখ টন চালসহ ৪ কোটি ৭২ লাখ টন দানাদার শস্য উৎপাদিত হয়েছে। মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, সবজি, ফলসহ বিভিন্ন কৃষিপণ্য উৎপাদন ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। দারিদ্র্যের হার ৪০ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। মাথাপিছু আয় ৫৪৩ ডলার থেকে ২ হাজার ৮২৪ ডলারে উন্নীত হয়েছে। সাক্ষরতার হার ৪৫ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ৭৫ দশমিক ২ ভাগ। মাতৃমৃত্যু এবং শিশুমৃত্যুর হার হ্রাস পেয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার ধারাবাহিকভাবে সরকার পরিচালনায় আছে বলেই এসব অর্জন সম্ভব হয়েছে।

জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের এতো এতো উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে ঈর্ষান্বিত সন্ত্রাসী সংগঠন বিএনপি বাংলাদেশের এতসব উন্নয়নের ধারাবাহিকতাকে ব্যাহত করে পিছনের দরজা দিয়ে বাংলাদেশের ক্ষমতায় যেতে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের মতো অপরাজনীতি চালিয়ে যাচ্ছে। এমনকি বাংলাদেশের অসহায় এবং দরিদ্র জনগোষ্ঠীর একমাত্র ভরসাস্থল মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেষ হাসিনাকে চিরতরে শেষ করে দেওয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে এদেশের স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি।

শুধু ২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলাই নয়, বঙ্গবন্ধুকন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে ১৯৮৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত বিভিন্ন কায়দায় প্রায় ২১ বার হামলা হয়েছে। কখনো নিজ বাসভবনে, কখনো জনসভায়, আবার কখনো তার গাড়ির বহরে। বর্তমান বিশ্বের কোনো দেশের রাষ্ট্রনায়ককে এত বার হত্যা চেষ্টার নজির নেই। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বিদেশে থাকার কারণে বোন শেখ রেহানাসহ বেঁচে গেলেও দেশে ফেরার পর থেকে শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা হয়েছে বারবার। আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর দায়িত্ব নিয়ে ১৯৮১ সালের মে মাসে দেশে ফেরার পর থেকেই তার ওপর একের পর এক হামলা হয়েছে। দেশের অভ্যন্তরে এতো বার হামলা করেও শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে ব্যর্থ হওয়ায় এখন নতুন করে বিদেশের মাটিতে হত্যা করতে বিভিন্নভাবে অপপ্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি তথা সন্ত্রাসী সংগঠন বিএনপির মূল সন্ত্রাসী তারেক জিয়া। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যাকে বারবার হত্যার চেষ্টা ও ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি। একাত্তরের পরাজিত শক্তি, পঁচাত্তরের ঘাতক ও দেশি-বিদেশি মৌলবাদী গোষ্ঠী তাকে হত্যার মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে চিরতরে নিশ্চিহ্ন করে দিতে চাইছে। আর এভাবে পরাজিত শক্তি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশকে মুছে দিতে চাইছে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসীন হয়ে পিতার অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করতে চেয়েছেন। অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রের ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছেন, যাতে জাতি ঐক্যবদ্ধ হয়। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের যিনি নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তাকেই বারবার হত্যার চেষ্টা নেওয়া হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষের শক্তি এর সঙ্গে সরাসরি জড়িত। শেখ হাসিনাকে হত্যা করে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষশক্তিকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র থেকেই শেখ হাসিনার ওপর দেশের ভিতরে ও দেশের বাহিরে বারবার হামলা করা হচ্ছে। তাদের লক্ষ্য মুক্তিযুদ্ধের ধারাকে পদানত করা ও শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে না পারলে এ ধারাকে পদানত করা সম্ভব নয়। সবাইকে তারা কিনতে পারছে বা পারবে হয়তো, কিন্তু শেখ হাসিনাকে নয়, এ জন্যই তাকে হত্যা করতে হবে। শেখ হাসিনা ফিনিক্সের মতো। ভস্মীভূত হয়ে যাওয়ার পরও আবার স্বমূর্তিতে জেগে উঠেছেন। শেখ হাসিনার স্বমূর্তিতে জেগে ওঠার মূল শক্তি এদেশের জনগণ ও তাদের ভালোবাসা। জনগণের সমর্থন সবসময় ছিলো এবং আছে বলেই তাকে বারবার হত্যার চেষ্টা করা সত্বেও দমিয়ে রাখা যায়নি।

বিশ্ব নেতারা যখন শেখ হাসিনার যুগান্তকারী নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করছেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা যখন দেশের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছেন, তখনই বিএনপি ও তার দোসর রাজনৈতিক দলগুলোর গাত্রদাহ হয়ে উঠেছেন সাহসী, আত্মপ্রত্যয়ী ও দৃঢ়চেতা নেতা শেখ হাসিনা। তাই তারা বারবার নতুন করে ষড়যন্ত্রের জাল বুনতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। রাজনীতিতে পরাস্ত হয়ে, দেশে-বিদেশে শেখ হাসিনার জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে প্রলাপ বকছে বিএনপি দলটির অধিকাংশ নেতাকর্মী। কখনও ২৭ দফা, কখনও ১০ দফা আর কখনো ১ দফার নামে মানুষকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টায় তারা লিপ্ত রয়েছে। এসব দফা অবৈধ, অসাংবিধানিক উপায়ে ক্ষমতা দখল করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশকে ধ্বংস করে দেশকে আবার জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসী রাষ্ট্রে পরিণত করার অপকৌশল মাত্র। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে দেশের মানুষকে অন্ধকারের জিঞ্জির পরানো হবে যার চূড়ান্ত পরিণতি। শুধু দেশেই নয় সমগ্র বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় যার অদম্য চেষ্টা, সেই শেখ হাসিনাকেই বারবার ষড়যন্ত্রকারীরা টার্গেট করছে এবং বিভিন্নভাবে দেশে ও বিদেশে হত্যার অপপ্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

বাবা-মা-ভাই এবং আত্মীয়স্বজন এইসব কিছু হারিয়ে পরিবার বলতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বুঝেছিল এই বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের জনগণকে। সেই মানসিকতা নিয়ে এবং সেই আন্তরিকতা নিয়েই তিনি দেশের জন্য তথা দেশের মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন। এদেশের মানুষের জন্য কাজ করতে গিয়ে বারবার শেখ হাসিনার ওপর আঘাত এসেছে। সব ধরনের আঘাত সহ্য করে নিজ দেশের এবং দেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে একনিষ্ঠ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এখনো বারবার হামলা হচ্ছে। শুধু দেশে না, বিদেশেও তাকে হত্যার অপপ্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে সন্ত্রাসী তারেক জিয়ার নেতৃত্বে।

বঙ্গবন্ধু তনয়া জননেত্রী শেখ হাসিনা এখন শুধু বাংলাদেশের নয় বরং সারা বিশ্বের একজন শক্তিশালী ও সুপরিচিত নেত্রী। বাংলাদেশের জনগণই তার এই শক্তির মূল উৎস। এদেশের জনগণের সমর্থন ও ভোটের শক্তিতে বিশ্বাসী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দক্ষ ও সুকৌশলী নেতৃত্ব দিয়ে বাংলাদেশকে উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার যে স্তরে উন্নীত করেছেন তার জন্য এদেশের আপামর জনসাধারণ প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকারের ধারাবাহিকতাই রক্ষা করতে চাইছেন। এমতাবস্থায়, বাঙালি জনগণের একমাত্র ভরসাস্থল মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিদেশি ভাড়াটে করা খুনী দিয়ে হত্যার অপপ্রচেষ্টা এদেশের গণতন্ত্রমনা জনগণ কোনোদিনও মেনে নিবেনা। শেখ হাসিনা এদেশের সাধারণ জনগণের একটা আবেগ ও ভালোবাসার জায়গা। তারেক জিয়ার নেতৃত্বে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তিগুলো শেখ হাসিনাকে যতবার হত্যার চেষ্টা করবে এদেশের জনগণ ততবারই ঢাল হয়ে শেখ হাসিনাকে রক্ষা করবে। দেশের অভ্যন্তরে অথবা বিদেশের মাটিতে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার পরিকল্পনা বা হত্যার চেষ্টা করলে শেখ হাসিনার একমাত্র শক্তির উৎস এদেশের গণতন্ত্রমনস্ক জনগণ কোনোদিন ও সহ্য করবেনা। সকলে একতাবদ্ধ হয়ে এই সকল স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ঝড় ওঠাবে এদেশের জনগণ। 

লেখক: অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া
ট্রেজারার
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়
সাবেক চেয়ারম্যান
ট্যুরিজম অ্যান্ড হস্পিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

logo

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. নজরুল ইসলাম