১৬ শিক্ষার্থীকে পেটানোর ঘটনায় অধ্যক্ষ আটক
নিজস্ব প্রতিনিধি
১০ মে, ২০২২, 10:30 AM
নিজস্ব প্রতিনিধি
১০ মে, ২০২২, 10:30 AM
১৬ শিক্ষার্থীকে পেটানোর ঘটনায় অধ্যক্ষ আটক
নরসিংদীর পলাশে ১৬ শিক্ষার্থীকে পাইপ দিয়ে পেটানোর অভিযোগে সেন্ট্রাল কলেজের অধ্যক্ষ আমির হোসেন গাজীকে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার (৯ মে) রাত ৮ টার দিকে উপজেলার পন্ডিতপাড়ার বাসা থেকে তাকে আটক করা হয়। এর আগে সোমবার বেলা ১১টায় কলেজের শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের পাইপ দিয়ে পেটানোর ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ বিরাজ করছে। ছাত্রদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায়সহ নানা অনিয়মের কারণে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড গতবছর কলেজটির উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফরমফিলাপের ক্ষমতা স্থগিত করে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিদিন কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগে ৬টি বিষয়ে পাঠদান হয়।
রোববার (৮ মে) ৬ষ্ঠ ক্লাসের শিক্ষক পাঠদান করবে না এমন খবরে ক্লাসের অধিকাংশ শিক্ষার্থী শ্রেণিকক্ষ থেকে বেরিয়ে যায়। তবে শিক্ষক ক্লাসে আসলে কয়েকজন এসে পাঠদানে যুক্ত হয়। পরদিন সোমবার (৯ মে) যথারীতি সব শিক্ষার্থী শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত হয়ে পাঠগ্রহণ শুরু করে। বেলা ১১টার দিকে কলেজের অধ্যক্ষ আমির হোসেন গাজী অ্যালুমিনিয়ামের পাইপ নিয়ে শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করে ৬ষ্ঠ ক্লাস না করা শিক্ষার্থীদের দাঁড় করান। একে একে শাকিব, সিজান, আদনান, সোহেল, শিফাত, নয়ন, তাহসিন, আশরাফুল, আমিরুল, তাসফিকসহ ১৬ শিক্ষার্থীকে পাইপ দিয়ে পেটানো শুরু করেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। আবার অনেক শিক্ষার্থী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আহতের ছবি পোস্ট করে অধ্যক্ষের বিচার দাবি করেন। যা অল্প সময়ের মধ্যে ভাইরাল হয়। স্বাধীনূর রহমান নামে এক শিক্ষার্থী ফেসবুকে লিখেন, ‘শিক্ষকরা গুরুজন, বাবা-মার মতো। সেখানে কলেজের প্রিন্সিপাল হয়ে এইভাবে মারছে। আমার বাবা-মা তথা কেউই কোনোদিন এভাবে মারে নাই। আমি আজ সারাটা ক্লাস শুধু ভাবছি কি হলো আমার সাথে! শুধু আমার সাথে যে তা ই না। ক্লাসের অধিকাংশই আজ এই আঘাতের শিকার হইছে কেউ কম বা কেউ বেশি। যেখানে ছাত্রদের উপর হাত তোলাই নিষেধ, সেখানে একে তো শিক্ষাকে ব্যবসা বানাইছেই তার উপর এইসব হইতেছে!’ আহত অপর এক শিক্ষার্থী সোহেল মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, অধ্যক্ষ স্যার ক্লাসে ৩টি অ্যালুমিনিয়ামের পাইপ ও পানি নিয়ে যায়। আমাদের পাইপ দিয়ে পিটিয়ে ক্লান্ত হলে সেই পানি পান করে আবার পিটিয়েছে। আমরা শিক্ষকের কাছ থেকে এ ধরনের আচরণ আশা করিনি। অভিযোগের সম্পর্কে জানতে চাইলে নরসিংদীর পলাশ থানা সেন্ট্রাল কলেজের অধ্যক্ষ আমির হোসেন গাজী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি শিক্ষার্থীদের শাসন করেছি। এখন কেউ কেউ এটাকে ইস্যু বানিয়ে পরিবেশ ঘোলা করার চেষ্টা করছে। ছাত্র পেটানোর ঘটনা সম্পর্কে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা গৌতম মিত্র বলেন, শিক্ষার্থীকে পেটানো তো দূরের কথা তিরস্কার করে কথা বলার বিধানও আইনে নেই। ঘটনাটি তদন্তের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসারের মিলন কৃষ্ণ হালদারকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে। পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইলিয়াস মিয়া বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে অধ্যক্ষ আমির হোসেন গাজীকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।