হাদিসের বর্ণনায় কালিজিরা
২৭ অক্টোবর, ২০২৪, 10:40 AM
NL24 News
২৭ অক্টোবর, ২০২৪, 10:40 AM
হাদিসের বর্ণনায় কালিজিরা
প্রাচীনকাল থেকে কালিজিরা মানবদেহের নানা রোগের প্রতিষেধক ও প্রতিরোধক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এ জন্যই এ জিনিসটিকে অনেকে কালো হীরা বলেন। এটি শুধুই একটি মসলা নয়। তার কাজ শুধু খাবারের স্বাদ বৃদ্ধিতেই নয়, আয়ুর্বেদিক ও কবিরাজি চিকিৎসায়ও কালিজিরার ব্যবহার হয়।
কালিজিরার বীজ থেকে এক ধরনের তেল তৈরি হয়, যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এতে আছে ফসফেট, আয়রন ও ফসফরাস। এ ছাড়া কালিজিরা বিভিন্ন রোগের হাত থেকে দেহকে রক্ষা করে।
তাই বিস্ময়কর এই জিনিসটির প্রশংসা করেছেন খোদ রাসুল (সা.)।
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছেন, কালিজিরায় সব ধরনের রোগের উপশম আছে, তবে ‘আস্সাম’ ব্যতীত। আর ‘আস্সাম’ হলো মৃত্যু। এর ‘আল হাব্বাতুস্ সাওদা’ হলো (স্থানীয় ভাষায়) ‘শূনীয’ (অর্থাৎ কালিজিরা)। (মুসলিম, হাদিস : ৫৬৫৯)
তাই যেকোনো রোগ নিরাময়ে, রোগ থেকে নিরাপদ থেকে অন্যান্য সতর্কতার পাশাপাশি অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে কালিজিরা সেবন করা যেতে পারে।
আয়ুর্বেদিক, ইউনানি ও কবিরাজি চিকিৎসায় এর ব্যাপক ব্যবহার হয়ে থাকে। তাই যারা এসব চিকিৎসা নিয়ে গবেষণা করে, তাদের কাছে রোগ অনুযায়ী সঠিক ব্যবহারবিধি পাওয়া যাবে। কারণ প্রতিটি ওষুধের ব্যবহারবিধি রোগভেদে ভিন্ন হয়। কখনো নির্দিষ্ট পরিমাণে খেতে হয়, কখনো নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে ব্যবহার করতে হয়। যেমন—সাহাবায়ে কিরামও বিশেষ পদ্ধতিতে কালিজিরা ব্যবহার করেছেন।
খালিদ ইবনে সাদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা (যুদ্ধের অভিযানে) বের হলাম। আমাদের সঙ্গে ছিলেন গালিব ইবনে আবজার। তিনি পথে অসুস্থ হয়ে গেলেন। এরপর আমরা মদিনায় ফিরলাম, তখনো তিনি অসুস্থ ছিলেন। তাঁকে দেখাশোনা করতে আসেন ইবনে আবি আতিক। তিনি আমাদের বললেন, তোমরা এই কালিজিরা সঙ্গে রেখো। এর থেকে পাঁচটি কিংবা সাতটি দানা নিয়ে পিষে ফেলবে, তারপর তন্মধ্যে জয়তুনের কয়েক ফোঁটা তৈল ঢেলে দিয়ে তার নাকের এদিক-ওদিকের ছিদ্র দিয়ে ফোঁটা ফোঁটা করে প্রবিষ্ট করাবে। কেননা আয়েশা (রা.) আমাদের নিকট বর্ণনা করেছেন যে তিনি নবী (সা.)-কে বলতে শুনেছেন, এই কালিজিরা ‘সাম’ ছাড়া সব রোগের ওষুধ। আমি বললাম, ‘সাম’ কী? তিনি বললেন, মৃত্যু।
(বুখারি, হাদিস : ৫৬৮৭)
অতএব, আমরাও নবীজি (সা.)-এর সুন্নতকে ভালোবেসে নিয়মিত কালিজিরা সেবন করতে পারি। ইনশাআল্লাহ, এতে সুন্নত পালনের সওয়াবের পাশাপাশি বিভিন্ন রোগ-ব্যাধি থেকে আরোগ্য লাভ করা যাবে।