রাজধানীর দক্ষিনখান থেকে এক নারীর জুলন্ত লাশ উদ্ধার
নিজস্ব প্রতিবেদক
১৩ নভেম্বর, ২০২১, 2:29 PM
নিজস্ব প্রতিবেদক
১৩ নভেম্বর, ২০২১, 2:29 PM
রাজধানীর দক্ষিনখান থেকে এক নারীর জুলন্ত লাশ উদ্ধার
ঢাকার দক্ষিণখানে এক নারীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের পর তাকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।সুরভী আকতার নামের ত্রিশোর্ধ্ব ওই নারী দক্ষিণখানের ফায়েদাবাদ এলাকায় ছয় তলা এক ভবনের নিচতলায় দুই কক্ষের একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকতেন। শুক্রবার মধ্য রাতে ওই ফ্ল্যাটে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় থেকে নামিয়ে কাছের হাসপাতালে নিয়েছিলেন নাজমুল হাসান (২২)। খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে লাশ উদ্ধারের পাশাপাশি নাজমুলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। নাজমুল ও সুরভী দুই মাস আগে ওই ফ্ল্যাট স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ভাড়া নিয়েছিলেন। তবে তাদের বিয়ের কোনো প্রমাণ নাজমুল দেখাতে পারেননি বলে জানান দক্ষিণখান থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আজিজুল হক।
তিনি বলেন, নাজমুলের বাসা দক্ষিণ খানেই। সেখানে তার বাবা-মা থাকেন। তবে প্রতি বৃহস্পতিবার তিনি সুরভীর ফ্ল্যাটে আসতেন, শুক্রবারও তারা এক সঙ্গে থাকতেন। গত বৃহস্পতিবার রাতে নাজমুল আসেননি; শুক্রবার রাতে এলে তার সঙ্গে সুরভীর ঝগড়া হয় বলে বাড়ির দারোয়ান পুলিশকে জানিয়েছেন। পুলিশ কর্মকর্তা আজিজুল বলেন, “রাত ১১টার দিকে নাজমুল বাসায় ঢোকার পর দুজনের মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ ঝগড়া হয়। পরে একটি ঘরে সুরভী ঢুকে ‘লক’ করে দেয়। কিছুক্ষণ পর নাজমুল ডাকাডাকি করে সাড়া না পেয়ে বাইরে এসে জানালা দিয়ে দেখে সুরভী সিলিংয়ের সাথে ঝুলছে। পরে নিরাপত্তা কর্মীর কাছ থেকে বিকল্প চাবি নিয়ে দরজা খুলে সুরভীকে নিচে নামিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যায় নাজমুল। সেখানে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে।”
আজিজুল বলেন, “গত সেপ্টেম্বর মাসে স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে তারা এই বাসায় উঠে। তবে বিয়ের কোনো কাগজ বা অন্য কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি নাজমুল। সুরভীর সঙ্গে সম্পর্কের বা বিয়ের কোনো কথা নাজমুল তার পরিবারকেও বলেনি।” এই পুলিশ কর্মকর্তা জানান, এক ইতালিপ্রবাসীর সঙ্গে সুরভীর ১৩/১৪ বছর আগে বিয়ে হয়েছিল। তাদের ১০/১১ বছরের একটি ছেলেও রয়েছে। ইতালিতে স্বামী আরেকটি বিয়ে করেছে শুনে ৭/৮ মাস আগে তাকে তালাক দেন সুরভী। এরপর ফেইসবুকে পরিচয়ের সূত্র ধরে নাজমুলের সঙ্গে তার সম্পর্ক গড়ে উঠে।
সুরভীর শিশুপুত্র তার নানীর কাছে থাকে। তবে সুরভী ঢাকায় কী করতেন, তা তার পরিবারের সদস্যরা জানত না। আর নাজমুলের বিষয়েও জানত না তার পরিবার। তবে পুলিশ খোঁজ নিয়ে জেনেছে, তারা দুজন বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অফিসে দুপুরের খাবার সরবরাহ করতেন। পরিদর্শক (তদন্ত) আজিজুল হক বলেন, “এই ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। এই মামলায় নাজমুলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ড চাওয়া হবে। রিমান্ড মঞ্জুর হলে পুরো ঘটনা জানার চেষ্টা করা হবে।”