মেয়ের জামাইকে মোবাইল ফোন কিনে না দেওয়ায় মেয়েকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিনিধি
২০ জুলাই, ২০২২, 10:31 AM
নিজস্ব প্রতিনিধি
২০ জুলাই, ২০২২, 10:31 AM
মেয়ের জামাইকে মোবাইল ফোন কিনে না দেওয়ায় মেয়েকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
কোনও মৃত্যু নিয়ে অভিযোগ থাকলে, পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠায়। কিন্তু রাজশাহীর বাগমারায় ঘটেছে ব্যতিক্রমী ঘটনা। পুলিশ খবর পেয়ে উদ্ধার লাশ করে। তবে ময়নাতদন্তের জন্য ভ্যান চালিয়ে মেয়ের লাশ প্রায় ১৮ কিলোমিটার দূরের থানায় পৌঁছে দিয়েছেন এক বাবা। তার অভিযোগ, জামাতাকে মোবাইল ফোন কিনে না দেওয়ায় তার মেয়েকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তবে নিহতের শ্বশুরবাড়ির লোকজনের দাবি, অভিমানে গলায় ফাঁস দিয়ে ‘আত্মহত্যা’ করেছেন হোসনেয়ারা খাতুন (১৬)। সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশের নির্দেশে লাশ থানায় পৌঁছে দেন ওই গৃহবধূর বাবা আবদুল মালেক। মঙ্গলবার দুপুরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। এ ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে জামাতা, মেয়ের শ্বশুর ও শাশুড়িকে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন মালেক।
বাগমারা উপজেলার যোগীপাড়া ইউনিয়নের গোপীনাথপুর গ্রামের ভ্যানচালক আবদুল মালেক সাত মাস আগে পাশের বীরকুৎসা গ্রামের জাহিদুল ইসলামের ছেলে রানা ইসলামের সঙ্গে তার মেয়ের বিয়ে দেন। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, বিয়ের পর বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। সোমবার সন্ধ্যায় শ্বশুরবাড়ি থেকে ওই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তখন পারিবারিক অশান্তির কারণে হোসনেয়ারা গলায় ফাঁস দিয়ে ‘আত্মহত্যা’ করেছে বলে রানা ইসলামের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়। অন্যদিকে গৃহবধূর বাবা অভিযোগ করেন, তার মেয়েকে পিটিয়ে হত্যার পর এলাকায় আত্মহত্যার খবর প্রচার করা হয়েছে। এ নিয়ে জটিলতা তৈরি হলে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করতে সময় লেগে যায় পুলিশের।পুলিশ জানায়, ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠাতে লাশ থানায় নেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হয়। তখন নিজে ভ্যান চালিয়ে মেয়ের লাশ রাত সাড়ে ১১টার দিকে থানায় পৌঁছে দেন বাবা আবদুল মালেক। মঙ্গলবার সকালে জেলা পুলিশের লাশবহনকারী গাড়িতে করে মরদেহ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। দুপুরে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। আবদুল মালেক অভিযোগ করেন, ঈদের আগে তার জামাতা একটি স্মার্টফোন চেয়েছিল। কিন্তু সেটি দিতে না পারায় জামাতা ও তার পরিবারের লোকজন রাগ করে। এ নিয়ে বিরোধের জেরে তার মেয়েকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। পরে আত্মহত্যার খবর প্রচার করা হয়। মেয়ের লাশ ঘরের বারান্দায় ফেলে জামাতা ও তার মা-বাবা পালিয়ে যান বলেও জানান তিনি। বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে থানায় নিয়মিত মামলা হয়েছে। মামলায় ওই গৃহবধূর স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়িকে আসামি করা হয়। তিনি আরও বলেন, ওই গৃহবধূর বাবার ভ্যানে রাতে থানায় লাশ আনা হয়েছে। বাহন না পাওয়ায় তার (গৃহবধূর বাবা) ভ্যানেই থানায় নেওয়া হয়।