ঢাকা ০৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম
চলতি মাসে এলপি গ্যাসের দাম অপরিবর্তিত ইতিহাস গড়ে হকির বিশ্বকাপে বাংলাদেশ চাঞ্চল্যকর ফয়সাল হত্যাকাণ্ডের ৪ আসামি গ্রেফতার বিবিসির প্রভাবশালী ১০০ নারীর তালিকায় কুড়িগ্রামের রিক্তা আক্তার বানু ইসি সচিব শফিউল আজিমকে ওএসডি আঞ্চলিক উত্তেজনায় সংযমের আহ্বান জানালেন তারেক রহমান মিশরের ইতিহাস দেখার অভিজ্ঞতা মনে প্রাণবন্ত হয়ে থাকবে: মেহজাবীন সরাসরি বিশ্বকাপ খেলতে কঠিন সমীকরণের সামনে দাঁড়িয়ে টাইগ্রেসরা বিজেপি বাংলাদেশে অস্থিরতা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে : রিজভী আগরতলায় বাংলাদেশের হাইকমিশনে হামলায় ৩ পুলিশ কর্মকর্তা বরখাস্ত, গ্রেপ্তার ৭

মেদভুঁড়ি ও হৃদরোগের সম্পর্ক

#

লাইফস্টাইল ডেস্ক

২৫ আগস্ট, ২০২৪,  11:22 AM

news image

মানবদেহের প্রধান উপাদান হলো হাড়, মাংস ও চামড়া। তার সঙ্গে বিভিন্ন অঙ্গ যেমন- হৃৎপিণ্ড, ফুসফুস, মগজ, কিডনি, নাড়িভুঁড়ি ইত্যাদিও বিদ্যমান থাকে। মানুষের নাড়িভুঁড়িতে মানে পেটে যৎসামান্য চর্বিজাতীয় বস্তু বা চর্বি বিদ্যমান থাকে। যাদের খাদ্যের প্রাচুর্যতা আছে তাদের দেহের বিভিন্ন অংশে চর্বি জমা হতে দেখা যায়।  আমরা যারা প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাদ্যবস্তু গ্রহণ করে থাকি তাদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত খাদ্যবস্তু হজমের পর ব্যবহৃত না হয়ে চর্বিতে রূপান্তরিত হয়ে দেহে জমা হতে থাকে। যদি কখনো কেউ কোনো কারণে (অসুস্থতা, অরুচি, খাদ্যাভাব) খাদ্য গ্রহণ না করতে পারে তবে দেহে জমানো চর্বি শক্তিতে রূপান্তরিত হয়ে ব্যক্তির সুস্থতা ও জীবন বাঁচিয়ে রাখতে পারে। 

হালকা-পাতলা মানুষের চেয়ে মেদভুঁড়িসম্পন্ন লোক না খেয়ে অনেক দিন বেঁচে থাকতে পারে। কারণ শরীরে মজুদ চর্বি তাদের শক্তি সরবরাহ করে বেশি সময় বাঁচিয়ে রাখে। মানবদেহে মস্তিষ্ক ছাড়া অন্য যে কোনো অঙ্গে চর্বি জমা হওয়ার সুযোগ আছে। মানবদেহে চর্বি জমা হওয়ার একমাত্র কারণ কিন্তু অধিক খাদ্য গ্রহণ নয়, বংশগত প্রবণতা, কর্ম সম্পাদনের গতি, বিভিন্ন ধরনের হরমোনের প্রভাবও অনেকাংশে দায়ী। তবে মেদভুঁড়ি হওয়ার প্রধান কারণ হলো অলস জীবনযাপন ও প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাদ্য গ্রহণ বিশেষ করে অতিরিক্ত তেল-চর্বি ও মিষ্টিজাতীয় খাবার এবং ভাত। 

বয়স ভেদে এবং নারী-পুরুষ ভেদে চর্বি জমা হওয়ার স্থান ও প্রবণতা আলাদা। বাচ্চাদের চামড়ার নিচে ও পেটে চর্বি জমা হওয়ার প্রবণতা বেশি পরিলক্ষিত হয়। ছেলেদের পেটে এবং বুকে, মেয়েদের তলপেটে নিতম্ব ও ঊরুতে চর্বি জমা হতে দেখা যায়। বয়স্ক ব্যক্তিদের নতুন করে চর্বি জমা হওয়ার প্রবণতা কমে যায়। মেদভুঁঁড়ির সঙ্গে হৃদরোগের সম্পর্ক অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ, নারী এবং পুরুষ উভয় লিঙ্গের ব্যক্তিরাই হৃৎপিণ্ডের রক্তনালির অসুস্থতায় ভোগার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়ে থাকে, যাকে সাধারণ মানুষ ব্লক বলে বুঝে থাকে। যার ফলশ্রুতিতে মানুষ হার্ট অ্যাটাক, এনজিনা ও হার্ট ফেইলুরে আক্রান্ত হয়ে থাকে। 

মেদভুঁড়ির ফলশ্রুতিতে পরোক্ষভাবে হার্টের কাজের চাপ বৃদ্ধি পেয়ে মানুষ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। মেদভুঁড়ির জন্য মানুষের শারীরিক ওজন বৃদ্ধি ঘটার ফলে হার্টের কর্মপরিসর বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। এসব ব্যক্তি ডায়াবেটিস, উচ্চরক্তচাপ, রক্তে উচ্চমাত্রায় চর্বি বা কোলেস্টেরল এবং শ্বাসকষ্টজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। এসব অসুস্থতার প্রতিটিই হৃদরোগের প্রধান কারণ হিসেবে বিবেচ্য। মেদভুঁড়িসম্পন্ন ব্যক্তিরা প্রায়ই থাইরয়েড হরমোনজনিত সমস্যায় আক্রান্ত হয়ে থাকেন এবং এটাও হৃদরোগের অন্যতম কারণ হিসেবে বিবেচ্য। 

অল্প পরিশ্রমে হাঁপিয়ে ওঠা, শ্বাসকষ্ট হওয়া, পরিশ্রমকালীন শরীর অত্যধিক ঘেমে যাওয়া হৃদরোগের প্রধান লক্ষণ। তার সঙ্গে কারও কারও বুক ধড়ফড় করা, বুকের মাঝখানে অথবা বাম পাশে ব্যথা বা চাপ অনুভব করার মতো অনুভূতি সঞ্চার হতে পারে। পেটে বদহজম দেখা দেওয়া, পেটে অত্যধিক গ্যাস হওয়া এবং পেট ফুলে যাওয়ার মতো লক্ষণ অনেক ক্ষেত্রেই পরিলক্ষিত হয়ে থাকে। অনেকে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ হিসেবে অলসতা, কর্মস্পৃহা কমে যাওয়া, কাজকর্মে বিশেষ করে হাঁটাচলার গতি কমে আসতে পারে। 

কারও কারও রাতে খাওয়ার পর বিছানায় শুতে গেলে শ্বাসকষ্ট দেখা দিয়ে থাকে, আবার কেউ কেউ মাঝরাতে ঘুমের মধ্যে শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। মেদভুঁড়িসম্পন্ন ব্যক্তিদের হার্টের রক্তনালি প্রতিবন্ধকতা বা ব্লক দেখা দিয়ে থাকে তার সঙ্গে উচ্চরক্তচাপ ও অন্যান্য অসুস্থতার ফলে হৃৎপিণ্ডের মাংসপেশি দুর্বল হয়ে পড়ে, ফলশ্রুতিতে হার্ট অ্যাটাকের মতো মারাত্মক বিপর্যয় ঘটে থাকে। তাই সচেতন হতে হবে। 

লেখক: চিফ কনসালটেন্ট, শমশের হার্ট কেয়ার, শ্যামলী, ঢাকা।

logo

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. নজরুল ইসলাম