মানুষের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করেছে ইসলাম
২৯ এপ্রিল, ২০২৪, 10:37 AM
NL24 News
২৯ এপ্রিল, ২০২৪, 10:37 AM
মানুষের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করেছে ইসলাম
মানবাধিকার একটি পরিচিত শব্দ। প্রত্যেক মানুষের জন্মগত প্রাপ্য। জাতিধর্মবর্ণ, দেশকালপাত্র নির্বিশেষে একটি বৈষম্যহীন অধিকার। সব মানুষ মহান প্রভু সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টি করেছেন এক আদম থেকে। সবার মা-বাবা আদম ও হাওয়া। প্রত্যেকের সৃষ্টিগত উপাদান এক। তাই ইসলাম সব মানুষের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করেছে।
ইসলামের নবী মানবতার দূত মুহাম্মদ (সা.) বিশ্বমানবতার মুক্তির বার্তা নিয়েই এ ধরায় আগমন করেছিলেন। স্থাপন করেছিলেন মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার অনুপম নিদর্শন। মহান প্রভু আল্লাহতায়ালা ঘোষণা করেন, ‘হে মানবসমাজ! তোমরা তোমাদের পালনকর্তাকে ভয় কর, যিনি তোমাদের এক ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন।’ (সুরা আন নিসা-১)
মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। মানুষ হিসেবে সবাই সমান মর্যাদা ও সম্মানের অধিকারী। মৌলিক অধিকার সবার সমান। অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা ও ন্যায়বিচার ইত্যাদি মানুষের মৌলিক অধিকার। এসব বিষয়ে কোনো বৈষম্য নেই। ইসলামের আলোকে মানুষের অধিকার একটি সুপ্রতিষ্ঠিত বিষয়।
কুরাইশ বংশের আবু বকর (রা.), পারস্যের সালমান (রা.) ও ইথিওপিয়ার বেলাল (রা.) এবং সাদা-কালো, ধনী-গরিব সবাই এক কাতারে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করেছেন। ঐক্য, ভ্রাতৃত্ব ও বন্ধুত্বের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। নিজে না খেয়ে অন্যকে অন্নদানের নজির প্রতিষ্ঠা করেছেন। বর্ণবিভেদ, শ্রেণিবৈষম্য এবং জাতিগত ব্যবধান চিরতরে নির্মূল করেছেন।
ইসলাম মানুষকে জন্মগ্রহণ করা এবং বেঁচে থাকার অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে। যে কোনো মানুষের মর্যাদাহানি, পরনিন্দা, অপবাদ, প্রতারণা, হিংসা-বিদ্বেষ, জুলুম, অত্যাচার ও অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করা ইত্যাদি মানবতাবিরোধী যাবতীয় অপরাধ এ ধর্মে নিষিদ্ধ এবং ইহ ও পরকালে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘অবশ্যই তোমাদের সম্পদ, তোমাদের ইজ্জত-সম্মান তোমাদের জন্য সম্মানিত, যেমন সম্মানিত তোমাদের জন্য এই (হজের) দিনটি, তোমাদের এই (মক্কা) শহরে, তোমাদের (হজের) এ মাসে।’ (সহি বুখারি, মুসলিম)।
অন্য হাদিসে তিনি ঘোষণা করেন, ‘সাবধান! কোনো অনারবের ওপর কোনো আরবের প্রাধান্য নেই, কোনো কালো মানুষের ওপর কোনো সাদা মানুষের প্রাধান্য নেই, প্রাধান্য নেই কোনো কালো মানুষের কোনো সাদা মানুষের ওপর, তবে কেবল খোদাভীতির ওপর মর্যাদার মানদন্ড। (আহমদ, সহিহ)
ইসলাম ধর্ম স্বামী-স্ত্রী, সন্তান, মা-বাবা, ভাই-বোন, আত্মীয়-অনাত্মীয়, নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধ, ছোট-বড়, ধনী-গরিব সবার ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে। মহান প্রভু ঘোষণা করেন, ‘যে অন্যায়ভাবে নরহত্যা অথবা দুনিয়ায় ধ্বংসাত্মক কাজ করল সে যেন দুনিয়ার সব মানুষই হত্যা করল।’ (সুরা আল মায়িদাহ-৩২)।
অন্য আয়াতে তিনি ঘোষণা করেন, ‘তোমাদের পালনকর্তা আদেশ করেছেন তিনি ছাড়া অন্য কারও ইবাদত কোরো না এবং বাবা-মার সঙ্গে সদ্ব্যবহার কর। তাদের কেউ বা উভয়েই যদি বার্ধক্যে উপনীত হয়, তবে ‘উহ’ শব্দটিও বোলো না এবং তাদের ধমক দিও না, তাদের সঙ্গে সম্মানসূচক কথা বোলো।’ (সুরা বনি ইসরাইল-২৩)।
লেখক : গবেষক, ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, বসুন্ধরা, ঢাকা