
NL24 News
০৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, 10:47 AM

ভোলায় স্ত্রী-সন্তানকে হত্যার দায়ে স্বামী ও দেবরের আমৃত্যু কারাদণ্ড
আহসানুল হক: ভোলার চরফ্যাশনের স্ত্রী ও সন্তানকে হত্যার দায়ে আলোচিত জোড়া খুন মামলায় স্বামী ও দেবরকে আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চরফ্যাশন অতিরিক্ত দায়রা জজ মো. শওকত হোসাইন এ রায় ঘোষণা করেন। দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন নিহত জাহানারা বেগমের স্বামী মো. মাহবুব আলম ও দেবর মো. ইব্রাহিম। মামলার নথি থেকে জানা যায়, পারিবারিক জমি নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর পরিকল্পনায় ২০১৮ সালের ৩০ মার্চ রাতে উপজেলার চর মাদ্রাজ ইউনিয়নের চর আফজাল ১ নম্বর ওয়ার্ডে নৃশংস এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। ওই রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় জাহানারা বেগমকে স্বামী মাহবুব আলম ও দেবর ইব্রাহীম দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে।এসময় হত্যার দৃশ্য দেখে ফেলায় তাদের আট বছরের শিশু সন্তান আবীরকেও শ্বাসরোধে হত্যা করে বাড়ির পাশের ডোবায় ফেলে দেওয়া হয়। স্থানীয়রা পরে মা–ছেলের লাশ উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। এঘটনায় নিহত জাহানারার বাবা মো. সৈয়দ আলী চৌকিদার বাদী হয়ে চরফ্যাশন থানায় হত্যা মামলা করেন। আদালতের বিচারক শওকত হোসাইন বলেন, এটি শীতল মাথায় সংঘটিত একটি নৃশংস জোড়া খুন। আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। রায় ঘোষণার সময় আদালতকক্ষে নিহতদের স্বজনদের কান্না ও স্বস্তির মিশ্র আবেগ ছড়িয়ে পড়ে। দীর্ঘদিনের অপেক্ষার পর তারা ন্যায়বিচার পেয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করা অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট হযরত আলী হিরণ বলেন, সাক্ষ্যপ্রমাণ এবং আসামি মাহবুবের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ভিত্তিতে আদালত রায় ঘোষণা করেন। প্রতিবন্ধী হওয়ায় জাহানারা বেগমের স্বামী মাহবুবকে মৃত্যুদণ্ড না দিয়ে তাকে ও তার ভাই ইব্রাহীমকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। তবে মামলার অপর আসামি তাদের বাবা মান্নান মাঝিকে বেকোশুর খালাস দেন আদালত। এদিকে রায় ঘোষণার পর বিচারক মো. শওকত হোসাইনকে আদালতের আইনজীবী ও স্থানীয় জনগণ ধন্যবাদ জানান। তাদের মতে, দীর্ঘদিনের আলোচিত এ মামলায় আদালত সাহসী ও সঠিক রায় দিয়েছেন। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় আদালত ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট হযরত আলী হিরণ ভূমিকার প্রশংসা করেন তারা।