
NL24 News
১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, 11:03 AM

ভূরাজনৈতিক উত্তেজনায় বাড়লো এশিয়ায় এলএনজির দাম
এশিয়ার স্পট মার্কেটে গত সপ্তাহে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) দাম সামান্য বেড়েছে। রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা ও মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা জ্বালানি পণ্যটির বাজারে ভূরাজনৈতিক ঝুঁকি বাড়িয়েছে। তবে উত্তর-পূর্ব এশিয়ায় কম চাহিদা ও উচ্চ মজুদ এলএনজির দরবৃদ্ধি সীমিত রেখেছে।
শিল্পসংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, উত্তর-পূর্ব এশিয়ায় অক্টোবরে সরবরাহের জন্য গত সপ্তাহে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির গড় মূল্য ছিল ১১ ডলার ৫০ সেন্ট। এটি আগের সপ্তাহের ১১ ডলার ৩০ সেন্টের তুলনায় বেশি। নভেম্বরে সরবরাহের জন্য গড় মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১১ ডলার ৬০ সেন্ট।
তথ্য বিশ্লেষণ প্রতিষ্ঠান কেপলারের এলএনজি অ্যান্ড গ্যাসবিষয়ক বিশ্লেষক গো কাটায়ামা বলেন, ‘এশিয়ায় এলএনজির দাম মূলত ইউরোপের ভূরাজনৈতিক কারণে গ্যাসের বেড়ে যাওয়া দামের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ওঠানামা করছে, নিজস্ব চাহিদা-সরবরাহের ভিত্তিতে নয়। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ নিয়ে আলোচনা করছে। একই সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের সামরিক তৎপরতায় বাজারে ভূরাজনৈতিক ঝুঁকি বেড়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘উত্তর-পূর্ব এশিয়ায় এলএনজির চাহিদা এখনো নিম্নমুখী। জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার মজুদ পর্যাপ্ত রয়েছে। সংশ্লিষ্ট আবহাওয়া সংস্থা নভেম্বরে তাপমাত্রার পূর্বাভাসও তুলনামূলক বেশি দিয়েছে। একই সঙ্গে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে জ্বালানি পণ্যটির সরবরাহ স্থিতিশীল রয়েছে। ফলে এর দাম উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে না।’
বিভিন্ন শিপট্র্যাকিং প্লাটফর্মের তথ্যানুযায়ী, রাশিয়ার নিষেধাজ্ঞার আওতাধীন আর্কটিক এলএনজি-২ প্রকল্প থেকে চতুর্থ কার্গো চীনের দক্ষিণাঞ্চলীয় গুয়াংসি প্রদেশের বেইহাই টার্মিনালে পৌঁছেছে। এর আগে একই টার্মিনালে দেশটি তিনটি চালান গ্রহণ করেছে। এতে এলএনজির চীনের স্থানীয় স্পট চাহিদা কিছুটা কমে এসেছে।
ইউরোপের বাজারে শুক্রবার প্রাকৃতিক গ্যাসের দর তুলনামূলক স্থিতিশীল ছিল। এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল কমোডিটি ইনসাইটস জানিয়েছে, নর্থওয়েস্ট ইউরোপ এলএনজি মার্কার (এনডব্লিউএম) আদর্শে অক্টোবরে সরবরাহের জন্য প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির দাম দাঁড়িয়েছে ১০ ডলার ৫৬ সেন্টে। এটি ডাচ টিটিএফ হাবের অক্টোবর ভবিষ্যৎ মূল্যের তুলনায় ৫৯ সেন্ট কম।
একই সময়ে আরগাস এনার্জি জ্বালানি পণ্যটির দাম নির্ধারণ করেছে প্রতি এমএমবিটিইউ ১০ ডলার ৪৯ সেন্ট। আর স্পার্ক কমোডিটিজ দাম নির্ধারণ করেছে ১০ ডলার ৫৪ সেন্ট। আরগাসের ডেপুটি হেড অব এলএনজি প্রাইসিং জিয়াওয়ি দেং বলেন, ‘ইউরোপের বাজারে এলএনজির দাম সামান্য বেড়েছে। তবে ভূরাজনৈতিক অনিশ্চয়তার কারণে ব্যবসায়ীরা দাম এখনকার স্তরে স্থির রেখেছেন।’
তিনি আরো বলেন, ‘নরওয়ের গ্যাস পাইপলাইন রক্ষণাবেক্ষণের কাজ জ্বালানি পণ্যের বাজারে সতর্কতা বাড়িয়েছে। তবে সরবরাহ খুব বেশি ব্যাহত হয়নি। ফলে এলএনজির ইউরোপমুখী প্রবাহ তুলনামূলক স্থিতিশীল রয়েছে।’
স্পার্ক কমোডিটিজের বিশ্লেষক কাসিম আফগান জানান, যুক্তরাষ্ট্র থেকে উত্তর-পূর্ব এশিয়ায় এলএনজি পরিবহনে উত্তমাশা অন্তরীপ রুট এখনো কিছুটা লাভজনক। তবে পানামা রুটে আর কোনো সুযোগ নেই। এলএনজি পরিবহনের খরচ আটলান্টিক রুটে দৈনিক ২৯ হাজার ডলার অপরিবর্তিত থাকলেও প্রশান্ত মহাসাগরীয় রুটে কমে দাঁড়িয়েছে সাড়ে ৩১ হাজার ডলারে।
তথ্য সূত্র- বিজনেস রেকর্ডার।