ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যে ‘যতটা উদ্বিগ্ন তার থেকে বেশি অবাক’ : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
নিজস্ব প্রতিবেদক
০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, 3:14 PM
নিজস্ব প্রতিবেদক
০৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, 3:14 PM
ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যে ‘যতটা উদ্বিগ্ন তার থেকে বেশি অবাক’ : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংয়ের বক্তব্যের বিষয়ে ‘অবাক’ হওয়ার কথা বলেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি যতটা উদ্বিগ্ন তার থেকে বেশি অবাক। যে, উনি এ ধরনের কথা কেনো বললেন। এটা আমি এটার কোনো কারণ খুঁজে পাই না। তিনি বলেন, আমি কোনো অবস্থাতেই মনে করি না যে ভারতের সঙ্গে আমাদের কোনো যুদ্ধ বিগ্রহ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। উনি এটা কি তার নিজের দেশের কনজাম্পশনের জন্য বলেছেন কি না সেটাও আমাদের বুঝতে হবে।
রাজনাথ সিংয়ের বক্তব্যকে ‘কাজের কথা বলতে এসে আজেবাজে বকা’ হিসাবে অভিহিত করে তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘আর উনি যেভাবে বলেছেন, এটা বিটিং অ্যারাউন্ড দ্য বুশ। কারণ ইউক্রেইনে যুদ্ধের কারণেতো ভারতের যুদ্ধ প্রস্তুতির কোনো কারণ দেখি না, বা হামাসের সাথে যে সমস্যা হচ্ছে তাতে করেই বা ভারতের এখানে কি সম্পর্ক? আর ইউক্রেইন এবং হামাসের সাথে বাংলাদেশ কী করে তুলনীয় হয়, এটাও আমার বোধগম্যতার বাইরে।’
এক্ষেত্রে বাংলাদেশ কেবল ‘অনুমান নির্ভর প্রতিক্রিয়া’ দেখাতে চায় না মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমি কোনো নি-জার্ক রিঅ্যাকশন দেখাতে চাই না; আমরা অবশ্যই দেখব যে উনি এটা কেন বলেছেন।
ছাত্রদের সঙ্গে মতবিনিময়ে করছেন প্রধান উপদেষ্টা রাজনাথ সিংয়ের বক্তব্য ভারতের হুমকি কি না, এমন প্রশ্নে তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘আমি এখনও মনে করি যে, এটা উনার নিজস্ব, অভ্যন্তরীণ কনজাম্পশনের জন্য বলেছেন। কাজে আমি কোনো স্পেকুলেট করতে চাই না।’
ভারতের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি এই মুহূর্তে এ সম্বন্ধে কিছু বলতে চাই না। কারণ, আমি বললাম যে এটুকু যোগাযোগ হয়েছে ওটুকু যোগাযোগ হয়েছে। বরং আমি বলেছি যে, নি-জার্ক কোনো রিঅ্যাকশন দেখাতে চাই না আমরা। আমরা অবশ্যই এটা দেখব; যে কী হচ্ছে, কেন হচ্ছে, এটা আমাদেরকে দেখতে হবে, এটা আমরা দেখব।
ভারত শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিলে সে বিষয়ে সরকারের অবস্থানের বিষয়ে এক প্রশ্নে উপদেষ্টা বলেন, স্বাভাবিকভাবে যে কোন দেশ যে কাউকে রাজনৈতিক আশ্রয় দিতে পারে। দেওয়া উচিত কি না, এক্ষেত্রে সেটা দেখার বিষয়, আমরা তা দেখব। রাজনৈতিক আশ্রয় দিলে প্রতিবাদ জানাবে কি না, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, দেখা যাক; সেই পরিস্থিতিতে আপনারা তখন প্রশ্ন করলে আমরা উত্তর দিব। আপাতত এটা থাকুক।
১২ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা প্রবেশ করেছে এবং ৫০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা সীমান্তে অবস্থান করছে। এ বিষয়ে সরকারের অবস্থান কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা খুব স্পষ্ট করেই বলেছি আমরা আর একজন রোহিঙ্গাকেও আশ্রয় দিতে রাজি না। কিন্তু কিছু ঢুকে যাচ্ছে, এটা আমরা জানি। সেটাকে ঠেকানোর চেষ্টা করছি। বিজিবি প্রতিদিনই ফেরত পাঠাচ্ছে, যাদেরকে আমরা ধরতে পারছি। কিন্তু একটা বড় এলাকা নিয়ে তারা ঢুকছে। সবাইকে যে আমরা ধরতে পারছি সেটি নয়, সামর্থ্যেরও কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। আমরা যেখানে পারছি ফেরত দেওয়ার চেষ্টা করছি। ইউএনএইচসিআর চায় আমরা তাদের আশ্রয় দেই, কিন্তু আমরা তাদের কাছে স্পষ্ট করেছি আমরা যে ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছি। আমাদের যেটুকু ভূমিকা নেওয়া প্রয়োজন তারচেয়ে বেশি পালন করেছি। যারা আমাদের উপদেশ দিতে চায় তারা বরং তাদেরকে নিয়ে যাক। বিজিবি প্রধানের সঙ্গে আজ বৈঠক হয়েছে। আমরা আরেকটু গভীরভাবে আলোচনা করব।