দাড়ি ছিঁড়ে বহিষ্কার সেই ছাত্রলীগ নেতা
ঢাবি প্রতিনিধি:
১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, 2:00 PM

ঢাবি প্রতিনিধি:
১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, 2:00 PM

দাড়ি ছিঁড়ে বহিষ্কার সেই ছাত্রলীগ নেতা
বকেয়া টাকা দাবি করায় ক্যান্টিন মালিকের দাড়ি ছিঁড়ে ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কার হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) মাস্টার দ্য সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আরাফাত হোসেন অভি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী। আজ মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন ও সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ বহিষ্কারাদেশ দেওয়া হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জরুরী সিদ্ধান্ত মোতাবেক জানানো যাচ্ছে যে, সংগঠনের শৃঙ্খলা ও মর্যাদা পরিপন্থী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে আরাফাত হোসেন অভি (সাংগঠনিক সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, মাস্টারদা' সূর্যসেন হল শাখা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) কে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হলো। এর আগে গতকাল সোমবার দুপুরে হলের ক্যান্টিন মালিকের সাথে বকেয়া টাকা নিয়ে হাতাহাতির এক পর্যায়ে ক্যান্টিন মালিক ফাহিম হোসেনের দাড়ি ছিঁড়ে ফেলেন অভি।
এ ঘটনায় হল প্রশাসনের নিকট লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্তের জন্য তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করেন হল প্রভোস্ট প্রফেসর জাকির হোসেন। ঘটনার বিবরণ দিয়ে ক্যান্টিন মালিক ফাহিম বলেন, দুপুরে খাবার শেষে আমি আরাফাতকে বললাম ভাই বিলটা দেন। এর আগেরও কিছু বিল আছে। এরপর সে কইতাছে, পরে দিমু তোমারে, লিখা রাখো। পরে আমি কইছি, আচ্ছা লিখা রাখতেছি। এরপর তার সাথে আমার কথা শেষ। এটা ম্যানেজারকে লিখতে বলতেছি যে, ৬টা খানার সাথে এই বিলটা লেখ। পরবর্তীতে উনি আর বাকী খাইবো না। এরপর দুই-তিন মিনিট চইলা গেছে। তখন আইসা বলতাছে, এই ফাহিম এদিকে আয়। পরে গেছি। যাওয়ার পর কইতাছে, কার লগে কীভাবে কি কইতে হয় জানস না? তখন আমি বললাম, আমি কি কইছি ভাই? আমি তো বিলটা চাইলাম খালি। আমি কইছি না, বিল আমি পরে দিমু। এটা বলেই সে আমার দাঁড়িতে ধইরা এক মুঠ দাড়ি ছিড়ে ফেলছে। তখন যা মুখে আসছে তাই বলে গালি দিছে আর আমাকে ও ম্যানেজারকে কিল, ঘুষি, লাথি দেওয়া শুরু করলো।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা বলেন, আমার বিকাশে সমস্যা থাকায় টাকা তুলতে পারছিলাম না। তার প্রমাণও আমি দেখিয়েছি। কিন্তু ফাহিম বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি করে ম্যানেজারকে বললেন আমাকে যেন নেক্সট টাইম খাবার না দেয়। এটা শুনে আমি তাকে বললাম ভাই আপনি এটা কীভাবে করতে পারলেন? আমি তো বললাম আমার বিকাশে সমস্যা হচ্ছে, ঠিক হলে টাকা উঠিয়ে দিয়ে দিব। আমি তো অপরিচিত কেউ না। তারপর তিনি আমাকে হাত দিয়ে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেন। তখন আমি রেগে যাই কারণ তিনি তো একজন শিক্ষার্থীর সাথে এমন ব্যবহার করতে পারেন না। তারপর তিনি আমার টিশার্ট ধরলে আমিও তার জামা ধরি। পাতলা কাপড় হওয়ায় তার জামা ছিঁড়ে যায় এবং ধাক্কাধাক্কির এক পর্যায়ে আমার হাত লেগে তার দাড়ি ছিঁড়ে যায়। সূর্য সেন হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. জাকির হোসেন ভূইয়া বলেন, এ বিষয়ে আমরা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষক ও সূর্যসেন হলের সিনিয়র হাউজ টিউটর আজহারুল ইসলামকে আহ্বায়ক করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে তিন দিনের মধ্যে তাদেরকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।