
নিজস্ব প্রতিনিধি
০৬ আগস্ট, ২০২৫, 11:32 AM
ডেঙ্গু পরিস্থিতি: বরগুনায় আক্রান্ত ৫ হাজার ছাড়িয়েছে
ডেঙ্গুর হটস্পট হিসেবে চিহ্নিত বরগুনা জেলায় এ বছর আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচ হাজার ছাড়িয়েছে। সরকারি হিসাবে মৃত্যু হয়েছে ছয়জনের। বেসরকারি হিসাবে মৃতের সংখ্যা ৩৯। শহরের তুলনায় বর্তমানে গ্রামে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। তবে এক মাস আগের তুলনায় আক্রান্তের হার কমতে শুরু করেছে বলে দাবি করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। বরগুনা জেলা সিভিল সার্জন অফিসের হিসাব অনুযায়ী, মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত ৬১ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ৪৬, পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১০ ও বামনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঁচজন ভর্তি হয়েছেন। গতকাল বিভিন্ন হাসপাতালে মোট ভর্তি ছিলেন ১৩৭ জন। গত ১ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচ হাজার ১১১। তবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ঢাকার কন্ট্রোল রুমের হিসাব অনুযায়ী, গতকাল পর্যন্ত বরগুনা জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা চার হাজার ৯১২। গতকাল পর্যন্ত সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ২২ হাজার ৩৮৪। সারাদেশের হিসাবে বরগুনায় আক্রান্ত ২২ দশমিক ৮৩ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে এ পর্যন্ত আক্রান্ত আট হাজার ৩১৫ জন। বিভাগের শতকরা হিসাবে বরগুনা জেলায় আক্রান্ত ৬১ দশমিক ৪৬ শতাংশ। বর্তমানে সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন এক হাজার ২৫৯ জন। এর মধ্যে শুধু বরগুনা জেলায় ভর্তি ১৩৭ জন। সারাদেশের হিসাবে প্রায় ১১ শতাংশ ডেঙ্গু রোগী বরগুনার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৮৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে বরগুনা জেলার ছয়জন। বরগুনায় ডেঙ্গু আক্রান্ত বেশি থাকলেও স্বাস্থ্য বিভাগের দাবি, অনেকটা কমতে শুরু করেছে জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা। বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তাসকিয়া সিদ্দিকা বলেন, এক মাস আগেও বরগুনায় প্রতিদিন ৮০ থেকে ১০০ জন আক্রান্ত হয়েছেন। হাসপাতালে ২০০ থেকে ২৫০ জন পর্যন্ত ভর্তি থাকতেন। সে তুলনায় রোগী অনেকটা কমতে শুরু করেছে। তবে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডেঙ্গুর প্রকোপ থাকবে। এ বিষয়ে বরগুনার সিভিল সার্জন ডা. আবুল ফাতাহ বলেন, জেলায় ডেঙ্গুর যে ভয়াবহতা দেখা দিয়েছিল, সেটি সবার প্রচেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আসতে শুরু করেছে। বর্তমানে শহরের চেয়ে গ্রামে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। শহরের পাশাপাশি গ্রামের মানুষকেও সচেতন হতে হবে। বরগুনা জেলা নাগরিক অধিকার ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন কামাল বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে শহরকেন্দ্রিক কিছু কার্যক্রম দেখা গেলেও গ্রামে কোনো কার্যক্রম নেই বললেই চলে। গ্রামে গ্রামে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনার দাবি জানান তিনি। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, ‘আমাদের সবার চেষ্টায় বরগুনার ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসতে শুরু করেছে। পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে হলে জনগণকে আরও সচেতন হতে হবে। সচেতনতামূলক বিভিন্ন কার্যক্রম চালমান।’ সূত্র: দৈনিক সমকাল