জয়পুরহাটের কালাইয়ে নবান্ন উৎসবে ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলা
১৯ নভেম্বর, ২০২৫, 12:22 PM
NL24 News
১৯ নভেম্বর, ২০২৫, 12:22 PM
জয়পুরহাটের কালাইয়ে নবান্ন উৎসবে ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলা
জয়পুরহাট প্রতিনিধি: নবান্ন উৎসব ঘিরে জয়পুরহাটের কালাইয়ে ঐতিহ্যবাহী জামাইদের মাছের মেলা বসেছে। গতকাল শুরু হওয়া একদিনের এ মাছের মেলায় হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতিতে জমে উঠেছে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে থাকা জামাই-মেয়ে আসেন এই এলাকার স্বজনদের বাড়ি বাড়ি। জামাইরা মাছ কিনে নিয়ে যান শ্বশুরবাড়িতে এজন্য এ মেলাকে জামাই মেলা বলা হয়। জানা গেছে, প্রতি বছর দিনক্ষণ মেনে এই দিনের অপেক্ষায় থাকেন এই উপজেলা ও আশপাশের উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামের লোকজন। বোয়াল, গ্লাসকার্প, রুই, সিলভার কার্প, কাতলা, মৃগেল বড় সাইজের গলদা চিংড়িসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ দিয়ে পসরা সাজায় ব্যবসায়ীরা। মঙ্গলবার ভোর থেকেই কালাই পৌরসভার পাঁচশিরা বাজারে বসা রকমারি দোকানগুলোতে চলে মাছ বেচা-কেনার ধুম। ভোর থেকে মেলা চলে রাত ১০ টা পর্যন্ত। মেলায় ঢুকেই সারি সারি দোকানগুলোতে চোখে পড়ে মন-জুড়ানো সব মাছের পসরা।দোকানগুলোতে থরে থরে সাজানো মাছগুলো প্রায় সবই বড় আকারের। আছে বড় বড় রুই, কাতলা, মৃগেল, সিলভার কার্প ও পাঙাশ মাছ। চাষের মাছের পাশাপাশি সামুদ্রিক মাছও উঠেছে এ মেলায়। সবাই দরদাম করে মাছ কিনছেন। তবে সকালে ক্রেতার চেয়ে দর্শনার্থীদের ভীড় বেশি লক্ষ করা গেছে। আকারভেদে ৩শ টাকা থেকে ১২শ টাকায় বিভিন্ন প্রজাতির মাছ প্রতি কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। মাছের মেলাটিকে ঘিরে এ দিনে নিকটবর্তী উপজেলাসহ ২০-২৫টি গ্রাম-মহল্লার মানুষের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা যায়। এলাকার সব শ্রেণি-পেশার মানুষ এ দিন সাধ এবং সাধ্য অনুযায়ী পছন্দের মাছ কিনে বাড়ি ফিরে। এবার মেলায় ওঠা মাছগুলোর ওজন ছিল প্রায় ৩ থেকে ৩৫ কেজি। উৎসবমুখর পরিবেশে চলে মাছ বেচা-কেনা। মেলায় মাছ কিনতে আসা পৌরসভার মো. ফিরোজ হোসেন,আব্দুল মতিন, আব্দুল বাতেন, কালাই উপজেলার পার্শ্ববর্তী ক্ষেতলাল উপজেলার খলিলুর রহমান, আজগর আলীসহ অনেকের সাথে সঙ্গে কথা হয়। ক্রেতারা জানান, নবান্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে বসা এ মাছের মেলায় প্রচুর আমদানি সত্বেও দাম হাকা হয় অনেকটা বেশি। মাছ ব্যবসায়ীরা জানান, গত বছরের তুলনায় এবার মাছের দাম অনেক বেশি। মাছের মেলায় লোক সমাগম হলে বেচা-কেনা ভাল হবে। এবারে ভাল লাভের প্রত্যাশা করছেন তারা। নবান্ন উৎসব উপলক্ষ্যে মাছের মেলার উদ্যেক্তা রহুল আমিন তালুকদার জানান, ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে মেলাটি উপভোগ করা হয়। আগামীতে মেলার পরিধি আরও বাড়বে বলে আমি আশাবাদী। মো. রবিউল ইসলাম বলেন,‘ নবান্ন উৎসবকে ঘিরে প্রতিটি পরিবারে একটা মিলন মেলার পরিবেশ সৃষ্টি হয়। সেখানে খাবার পরিবেশনের অন্যতম অংশ জুড়েই থাকে নতুন ধানের চালের ভাত ও মাছের বিভিন্ন পদের তরকারি। তাই এই মাছের মেলায় এসেছি, দেখেশুনে মাছ কিনব।’ কালাই উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা তৌহিদা মোহতামিম জানান, নবান্ন উৎসব উপলক্ষ্যে কালাই উপজেলার পাঁচশিরা বাজারে মাছের মেলার আয়োজন করা হয়। এখানে বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় মাছ এবং সামুদ্রিক মাছ পাওয়া যায়। উপজেলা মৎস অফিস থেকে সবসময় মনিটরিং করা হয়।