ঢাকা ১২ ডিসেম্বর, ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম
গভীর নলকূপের পাইপে পড়ে যাওয়া শিশু সাজিদকে উদ্ধার সুফিবাদী ঐক্য ফোরামের গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত ডেঙ্গুতে আরও ৩ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৪১১ আচরণবিধি নিশ্চিতে প্রতি উপজেলায় থাকবেন দুইজন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যা: স্বামীসহ গৃহকর্মী আয়েশা ৩ দিনের রিমান্ডে তফসিল ঘোষণা ঘিরে কড়া নিরাপত্তায় নির্বাচন ভবন বেগম রোকেয়াকে ‘মুরতাদ কাফির’ আখ্যা, নিন্দা বিএনপির শিশু সাজিদের সর্বশেষ অবস্থা নিয়ে যা জানা গেল ঢাবিতে পিনাকী-ইলিয়াসের কুশপুত্তলিকা দাহ ক্ষমা পেয়ে কাজে যোগ দিলেন চিকিৎসক ধনদেব চন্দ্র বর্মণ

চ্যালেঞ্জপূর্ণ বিমানবন্দর থানায় বিপ্লব ঘটিয়েছেন ওসি তাসলিমা আক্তার

#

নিজস্ব প্রতিবেদক

০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫,  3:59 PM

news image

ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকা—একসময় যা 'চ্যালেঞ্জপূর্ণ ক্রাইম জোন' হিসেবে পরিচিত ছিল সেখানে নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলার মানোন্নয়নে এক অবিশ্বাস্য সাফল্য এনেছেন বিমানবন্দর থানার সদ্য বিদায়ী অফিসার ইন চার্জ (ওসি) তাসলিমা আক্তার। তাঁর অত্যন্ত নিষ্ঠা, সততা ও দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের ফলে কেবল এলাকার অপরাধ চিত্রই পাল্টে যায়নি, বরং বাংলাদেশ পুলিশের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা বাড়াতেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। গত ২৪/১২/২০২৪ ইং থেকে ০৭/১২/২০২৫ ইং তারিখ পর্যন্ত ওসি হিসেবে তাঁর নির্দেশে থানা এলাকায় অপরাধ দমন, জটিল মামলার রহস্য উদঘাটন এবং জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বহু যুগান্তকারী পদক্ষেপ নেওয়া হয়। যেসব পদক্ষেপে পাল্টে গেল বিমানবন্দর থানা ওসি তাসলিমার নেতৃত্বে প্রায় এক বছরের সময়কালে বিমানবন্দর থানা এলাকায় দৃশ্যমান পরিবর্তন আসে। 

তাঁর গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি কাজ: 

অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ: এই সময়ে ছিনতাইকারীসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত সর্বমোট ১৭০৪ জন আসামীকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। ছিনতাইপ্রবণ এলাকায় নিরাপত্তা বেষ্টনী: সিভিল এভিয়েশনের সঙ্গে সমন্বয় করে ছিনতাই প্রবণ কাওলা কবরস্থান এলাকায় দেয়াল স্থাপন এবং FDEE এক্সপ্রেসওয়ের সাথে সমন্বয় করে পর্যাপ্ত লাইটিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়। কেপিআই এলাকার

কঠোর নিয়ন্ত্রণ:

বিমানবন্দরের মতো গুরুত্বপূর্ণ কেপিআই (Key Point Installation) এলাকায় নাশকতা ও অন্তর্ঘাতমূলক কার্যকলাপ রোধে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনের মিছিল ও সভা সমাবেশ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। হকার ও ইজিবাইক উৎপাত বন্ধ: ১নং সেক্টর এলাকায় হকার উচ্ছেদ করে জনসাধারণের চলাচলের পথ সুগম করা এবং ইজিবাইকের উৎপাত বন্ধ করা হয়। অসামাজিক কার্যকলাপ ও ভিক্ষাবৃত্তি নিরসন: থানা এলাকার বিভিন্ন হোটেলে অভিযান চালিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপ রোধ করা হয়। একইসঙ্গে কেপিআই এলাকা থেকে ভিক্ষাবৃত্তিতে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে নিরসন করা হয়েছে।

প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান: হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকা হতে বিদেশগামী যাত্রীদের সাথে প্রতারণাকারী চক্রকে ধৃত করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে।

উদ্ধার অভিযানে নজরকাড়া সাফল্য:

বিভিন্ন ক্লুলেস অপহরণ মামলার ভিকটিম উদ্ধার ও আসামী গ্রেফতার। ডাকাতির ঘটনায় ৮ জন পেশাদার ডাকাত সহ ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একাধিক গাড়ী উদ্ধার। বিপুল পরিমাণ মাদক ও অবৈধ সামগ্রী উদ্ধার: ৬,৩২,৮২,০০০/- টাকার জাল নোট, ২ কেজি ৫০০ গ্রাম স্বর্ণ, ১৪ কেজি ১৫০ গ্রাম গাঁজা সহ ইয়াবা ও হেরোইন উদ্ধার করা হয়।

নেতৃত্বের নতুন মানদণ্ড: সততা ও মানবিকতা

ওসি তাসলিমা আক্তার তার সততা, স্বচ্ছতা ও ন্যায়পরায়ণতার নীতিতে অটল থেকে নিজ দপ্তরকে দুর্নীতিমুক্ত রাখতে পেরেছিলেন। তিনি কেবল আইন প্রয়োগেই কঠোর ছিলেন না, বরং জনগণের সমস্যা বোঝার জন্য তার মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং সহজ-সরল ব্যবহারিক দক্ষতা স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে সহায়ক হয়েছে। নিয়মিত এন্ট্রি ক্রাইম মিটিং ও সমন্বয় সভার মাধ্যমে তিনি জনগণের মধ্যে মাদক, ইভটিজিং, যৌতুক, নারী নির্যাতন ও মানবপাচার সহ বিভিন্ন বিষয়ে জনসচেতনামূলক বক্তব্য প্রদান করতেন। তাঁর এই জনবান্ধব কর্মপদ্ধতিই পুলিশের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা বহুলাংশে বাড়িয়েছে।

বদলি: জনগণের মধ্যে হতাশা

এত সাফল্যের মাঝে, একঝাঁক অর্জন নিয়ে তাঁর বদলির খবরে সাধারণ জনগণের মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। এরকম সময়ে ওসি তাসলিমার বদলি আমাদের হতাশ করেছে। সাধারণ জনগণ চাচ্ছে, এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ থানায় তাঁকে বা তাঁর মতো দক্ষ ও সৎ একজন মানুষকে প্রয়োজন

logo

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. নজরুল ইসলাম