চাটখিলে জন্মনিবন্ধনে পদে পদে হয়রানি
নিজস্ব প্রতিনিধি
১৪ জুন, ২০২২, 3:34 PM
নিজস্ব প্রতিনিধি
১৪ জুন, ২০২২, 3:34 PM
চাটখিলে জন্মনিবন্ধনে পদে পদে হয়রানি
চাটখিল উপজেলায় অনলাইনে জন্মনিবন্ধন সনদ পেতে পদে পদে হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন এলাকাবাসী। নতুন করে জন্মনিবন্ধন নিতে বা জন্মনিবন্ধন সংশোধন করতে দিতে হচ্ছে মা–বাবার জন্মনিবন্ধন সনদও। আর জন্মনিবন্ধন সংশোধনের জন্য দফায় দফায় তিন থেকে চার স্থানে ধরনা দিতে হচ্ছে এলাকাবাসীকে। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়ছে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা সংশোধনের ক্ষেত্রে। ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা জানান, আগে জন্মনিবন্ধন নিতে মা–বাবার জন্মনিবন্ধনের প্রয়োজন হতো না। কিন্তু এখন নতুন করে জন্মনিবন্ধন নেওয়া বা জন্মনিবন্ধন সংশোধনে মা–বাবার জন্মনিবন্ধন সনদ দরকার হচ্ছে। মা–বাবার জন্মনিবন্ধন না থাকলে সেটিই আগে সংগ্রহ করতে হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদে কিংবা দোকান থেকে অনলাইনে জন্মনিবন্ধন সংশোধনের আবেদন করতে হয়। আবেদনপত্র পূরণের পর প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আবেদনকারীকে যেতে হয় সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদে। ইউনিয়ন পরিষদের সচিবের পিছনে ১০ থেকে ১৫ দিন ঘুরার পর, ২/৩ পর ওই আবেদনের একটি ওটিপি নম্বর দেওয়া হয়। এ নম্বর নিয়ে যেতে হয় চাটখিল উপজেলা সহকারী প্রোগ্রামার ব্যানবেইস কার্যালয়ে। সেখানে যাচাই-বাছাই শেষে আবেদনপত্রে ‘ঠিক আছে’ লিখে দেওয়া হয়। এরপর আবেদনকারীকে আবার যেতে হয় ইউনিয়ন পরিষদের অফিসে। এবার জন্মনিবন্ধন সনদ গ্রহনের সময় আবার যেতে হয় পরিষদ অফিসে এব্যাপারে ভুক্তভোগীরা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সূত্র সমুহ থেকে জানা গেছে, জন্মনিবন্ধনের জন্য বয়স অনুযায়ী ইপিআই (টিকার) কার্ড, মা–বাবার অনলাইন জন্মনিবন্ধনসহ জাতীয় পরিচয়পত্র, চৌকিদারী ট্যাক্স পরিশোধের রসিদ দিতে হয়। জন্ম নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র দেওয়ার পরেও ভোগান্তির শেষ হচ্ছে না। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে ছেলে-মেয়ের জন্ম নিবন্ধন করতে গিয়ে মা বাবার জন্ম নিবন্ধন এবং জাতীয় পরিচয় পত্র প্রয়োজন। দেখা গেছে একই নামে একাধিকবার জন্ম নিবন্ধন হওয়া, অনেক মা-বাবার সনদপত্র, পরিচয় পত্র, জন্ম নিবন্ধনে বিভিন্ন ভুল রয়েছে যার ফলে ওই ভুল সংশোধন করার আগ পর্যন্ত সন্তানের জন্ম নিবন্ধন করতে পারছেনা। আর মা-বাবার কাগজ সংশোধন করতে হলে জাতীয় পরিচয় পত্র, সনদপত্র, জন্ম নিবন্ধন সহ সবগুলোই সংশোধন করতে হবে। মা-বাবার কাগজ সঠিক হওয়া ছাড়া ছেলেমেয়েরা পাচ্ছেনা জন্ম নিবন্ধন।এটাই যেন এখন তাদের সামনে পথ চলায় গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব সমস্যা সমাধানে ইউনিয়ন পরিষদ সমূহ থেকে সহযোগিতার পরিবর্তে ভুক্তভোগীদের করা হচ্ছে হয়রানি। অনেক ইউনিয়ন পরিষদের সচিবেরা জন্ম নিবন্ধন করতে আশা নারী-পুরুষদের মানুষ হিসাবে গণ্য করছে না। সংশ্লিষ্ট সচিবদের চাহিদা পূরণের পরেও সময় মতো পাচ্ছে না জন্ম নিবন্ধন সনদ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও সচিবদের নিকট থেকে পাচ্ছে না সন্তোষজনক জবাব। পায় না ভালো ব্যবহার। এনিয়ে ভুক্তভোগীদের অভিযোগের শেষ নেই। জন্মনিবন্ধনের ভোগান্তির বিষয়ে জানতে চাইলে চাটখিল উপজেলা সহকারী প্রোগ্রামার (ব্যানবেইস), মোঃ জহির উদ্দিন দৈনিক নয়া বঙ্গবাজার কে বলেন, উপজেলা থেকে কেউ হয়রানীর শিকার হয় না। সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ থেকে আমাদের কাছে যখন যাচাই-বাছাইয়ের জন্য পাঠানো হয়। যত দ্রুত সম্ভব আমরা আমাদের কাজ সম্পন্ন করে স্ব স্ব ইউনিয়ন এর আবেদন পাঠিয়ে দিয়ে থাকি। জহির উদ্দিন বলেন, প্রতিদিন শত শত আবেদন জমা হচ্ছে, লোকবলের সংকটের মধ্যেও আমরা আমাদের কাজ দ্রুত সম্পুর্ন করে থাকি। এক প্রশ্নের জবাবে জহির উদ্দিন বলেন, ইউনিয়ন পরিষদে কি করে সে বিষয়ে তো আমরা কিছু বলতে পারব না।