ঢাকা ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম
শাহবাগে বেসরকারি ট্রেইনি চিকিৎসকদের বিক্ষোভ চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙর করল সেই পাকিস্তানি জাহাজ গাজীপুরে বোতাম তৈরির কারখানায় আগুন, নিয়ন্ত্রণে ৭ ইউনিট শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ নিয়ে নিশ্চিত নয় ট্রাইব্যুনাল: তাজুল ইসলাম সাদপন্থী নেতা মুয়াজ বিন নূরের ৩ দিনের রিমান্ড শিক্ষক নিয়োগের অনিয়মে পঙ্গু হয়ে গেছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো: শিক্ষা উপদেষ্টা হাসান আরিফের মৃত্যুতে সোমবার রাষ্ট্রীয় শোক এনআইডির তথ্য বেহাত, কম্পিউটার কাউন্সিলের সঙ্গে ইসির সম্পর্ক ছিন্ন তিন ব্যাংকে আনিসুল হকের জমা ২১ কোটি টাকা রোহিঙ্গা ইস্যুতে পারিপার্শ্বিক ভূরাজনৈতিক সম্পর্ক ভূমিকা রাখবে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

চলতি বছরের শেষেই চালু হচ্ছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে

#

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৮ জানুয়ারি, ২০২২,  10:50 AM

news image

নগরীর যানজট নিরসনে জাদুরকাঠি হিসেবে কাজ করবে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (উড়াল সড়ক)। দ্রুতগতিতে এগোচ্ছে প্রকল্পের কাজ। যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত চার লেনের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মূল লেনের দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন কাওলা থেকে তেজগাঁও রেলগেট পর্যন্ত দৈর্ঘ্য সাড়ে ১১ কিলোমিটার। এই অংশটি চলতি বছরের ডিসেম্বরে খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে সেতু কর্তৃপক্ষের। প্রকল্পের পূর্ণাঙ্গ কাজ শেষ হলে বিমানবন্দর থেকে মাত্র ১৫ থেকে ২০ মিনিটেই পাড়ি দেওয়া যাবে যাত্রাবাড়ী। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসে বিমানবন্দর থেকে তেজগাঁও রেলগেট পর্যন্ত অংশ খুলে দেওয়া হবে। এই অংশের কাজের অগ্রগতিও ভালো। বনানী পর্যন্ত অংশের অগ্রগতি ৭৬ শতাংশ। এছাড়া বনানী থেকে তেজগাঁওয়ের অগ্রগতি ৫০ শতাংশ। মূল কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

ফলে ১০ মাসের মধ্যে বাকি কাজ সম্পন্ন হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। প্রথমে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল বিমানবন্দর থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত শতভাগ কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর খুলে দেওয়া হবে। কিন্তু নগরীর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার কথা মাথায় রেখে চলতি বছরেই সাড়ে ১১ কিলোমিটার খুলে দেবে সরকার। বাকি ৮ দশমিক ২৩ কিলোমিটার খুলে দেওয়া হবে পরের বছর। প্রকল্প পরিচালক এএইচএমএস আকতার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, চলতি বছরেই সাড়ে ১১ কিলোমিটার খুলে দেওয়া হবে। এই অংশের কঠিন কাজ শেষ পর্যায়ে। পিলার ও ভায়াডাক্ট অধিকাংশ স্থানে বসে গেছে। হাতে সময় এখনো ১০ মাসের বেশি আছে। এই সময়ে বাকি কাজ সম্পন্ন হবে। তিনি আরো বলেন, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার কথা মাথায় রেখেই বিমানবন্দর থেকে তেজগাঁও অংশ খুলে দেবো। তেজগাঁও অংশ পর্যন্ত খুলে দিলে নগরীর জটলা অনেকটা কমে যাবে। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রকল্পের মধ্যে ১ হাজার ৪৮২টি পাইলের কাজ শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে। ৩২৯টি পাইল ক্যাপের মধ্যে ২৯০, ৩২৯টি কলামের মধ্যে ২৮৫টি কলামের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ৩২৯টি ক্রস-বিমের মধ্যে ২৩৫, ৩ হাজার ৭২টি আই গার্ডারের মধ্যে ১ হাজার ৪৫২টির নির্মাণকাজ সম্পন্ন। এছাড়া বনানী থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত ২ হাজার ১৭৯টি পাইলের মধ্যে ১২শ ৫৩, ৬৩১টি পাইল ক্যাপের মধ্যে ১২৫, ৬৩১টি কলামের মধ্যে ৯৯ ও তিনটি টি ক্রস-বিমের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। প্রকল্পটি ২০১১ সালের জুলাই থেকে ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে বাস্তবায়নের কথা ছিল। মূল প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল তিন হাজার ২১৬ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। পরে প্রকল্প ব্যয় অপরিবর্তিত রেখে প্রকল্পের মেয়াদ ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। প্রকল্পটির বিদ্যমান অঙ্গের পরিমাণ ও ব্যয় বাড়ার কারণে প্রথম সংশোধনীতে প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় চার হাজার ৮৮৯ কোটি টাকা। একই সঙ্গে সময় বাড়ানো হয় ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। দ্বিতীয়বারের মতো প্রকল্পে সংশোধনী এনে সময় ও ব্যয় আরও বাড়িয়ে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে কাজ শতভাগ সম্পন্ন করার কথা জানান সংশ্লিষ্টরা। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর-কুড়িল-বনানী-মহাখালী-তেজগাঁও-মগবাজার-কমলাপুর-সায়েদাবাদ-যাত্রাবাড়ী-ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক (কুতুবখালী) পর্যন্ত উড়াল সড়কে নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে আট হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। নির্মাণের সুবিধার্থে প্রকল্পটি তিনটি ট্রাঞ্চে ভাগ করা হয়েছে। ট্রাঞ্চ-১. বিমানবন্দর-বনানী-রেলস্টেশন পর্যন্ত এর মোট দৈর্ঘ্য ৭ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার। এ অংশের অগ্রগতি ৭২ শতাংশ। ট্রাঞ্চ-২. প্রকল্পের মোট দৈর্ঘ্য ৫ দশমিক ৮৫ কিলোমিটার। বনানী রেলস্টেশন-মগবাজার অংশের অগ্রগতি ২৬ শতাংশ পর্যন্ত। ট্রাঞ্চ-৩. মোট দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ৬৩ কিলোমিটার। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, উড়ালসড়ক বাস্তবায়নের পর ঢাকার উত্তর-দক্ষিণে বিকল্প সড়ক সৃষ্টি হবে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েটি হেমায়েতপুর-কদমতলী-নিমতলী-সিরাজদিখান-মদনগঞ্জ-ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক-মদনপুরে সরাসরি সংযোগ স্থাপন করবে। উড়ালসড়ক শুধু বিমানবন্দর ও যাত্রাবাড়ী রুটের যাত্রীদেরই স্বস্তি দেবে না, একইসঙ্গে চট্টগ্রাম, সিলেটসহ পূর্বাঞ্চল ও পদ্মা সেতু হয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যানবাহন ঢাকায় প্রবেশ না করে সরাসরি উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে প্রবেশ করতে সহায়তা করবে। উত্তরাঞ্চল থেকে আসা যানবাহনগুলো ঢাকাকে বাইপাস করে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে সরাসরি যাতায়াত করতে পারবে। এতে ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী অংশে নিরসন হবে যানজট। প্রকল্পটি পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ অথরিটির (পিপিপি) মাধ্যমে বাস্তবায়িত হচ্ছে। পিপিপি সরকারের গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। যেখান থেকে দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে। ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে অন্যতম সফলতা হিসেবে দেখছে পিপিপি। পিপিপি কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সচিব সুলতানা আফরোজ বলেন, সরকারের উন্নয়ন বেগবান করতে কাজ করছে পিপিপি। পিপিপির সক্ষমতা অনেক বেড়েছে। দেশের উন্নয়নে বড় বড় প্রকল্প নিচ্ছে। চলতি বছরে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে উন্মুক্ত করা অন্যতম সফলতা হিসেবে দেখছে পিপিপি।

-সূত্র : জাগো নিউজ

logo

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. নজরুল ইসলাম