খাদ্য অধিকার আইন প্রণয়নের দাবিতে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন ও স্মারকলিপি পেশ
১৬ অক্টোবর, ২০২৫, 4:26 PM
NL24 News
১৬ অক্টোবর, ২০২৫, 4:26 PM
খাদ্য অধিকার আইন প্রণয়নের দাবিতে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন ও স্মারকলিপি পেশ
মনিরুজ্জামান মনি : সকল মানুষের জীবিকা খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তায় খাদ্য অধিকার আইন প্রণয়নের দাবিতে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। মানববন্ধন শেষে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি পেশ করা হয়। ১৬ অক্টোবর ‘বিশ্ব খাদ্য দিবস’ উপলক্ষ্যে খাদ্য নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক (খানি বাংলাদেশ), সদস্য সংস্থা- অনন্যা, হাউশি, প্রান ও বিন্দু নারী উন্নয়ন সংগঠনের আয়োজনে (বৃহস্পতিবার) সকালে সাতক্ষীরা কালেক্টরেট চত্বরে মানবন্ধন কর্মসূচি ও দুপুরে স্মারকলিপি পেশ করা হয়। প্রধান উপদেষ্টা বরাবর দেয়া স্মারকলিপিটি গ্রহণ করেন সাতক্ষীরার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিষ্ণুপদ পাল।
স্মারকলিপিতে বলা হয়েছে, খাদ্য মানুষের মৌলিক চাহিদা হলেও, এটি এখনো মৌলিক অধিকারের মর্যাদা পায়নি। বাংলাদেশ সংবিধানের ১৫ (ক) অনুচ্ছেদে খাদ্যকে মৌলিক চাহিদা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হলেও, তা বাস্তবায়নে কোনো আইনি কাঠামো নেই। স্মারকলিপিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ২০০৪ সালে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থাপ্রণীত ‘ভলেন্টারি গাইডলাইন অন দ্য রাইট টু ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশন’অনুসরণ করে ব্রাজিল, ভারত, নেপালসহ বিশ্বের অনেক দেশ খাদ্য অধিকার বিষয়ক আইন বা সাংবিধানিক বিধান গ্রহণ করেছে। বাংলাদেশেও ২০০৮ সাল থেকে নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে এই আইনের দাবি জানানো হচ্ছে।
স্মারকলিপিতে আরো বলা হয়, বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ১২৭টি দেশের মধ্যে ৮৪তম, যা দেশের খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তার নাজুক পরিস্থিতি তুলে ধরে। এছাড়া, খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধি, ফসলের ন্যায্যমূল্য না পাওয়া এবং অর্থনৈতিক সংকটের কারণে জনজীবনে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জগুলো জনগণের খাদ্য অধিকারকে আরও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে।
খানি বাংলাদেশ মনে করে, খাদ্য অধিকার মানুষের বেঁচে থাকার পূর্বশর্ত এবং অন্যান্য মানবাধিকার পূরণের সাথে এর সুরক্ষা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সাম্প্রতিক সময়ে ক্রমবর্ধমান আয় বৈষম্য, মুদ্রাস্ফীতি, বেকারত্ব, এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তাকে মারাত্মক ঝুঁকিতে ফেলেছে। বিশেষ করে উপকূল, চর, পাহাড় ও হাওর এলাকার মানুষের মধ্যে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা ও অপুষ্টির মাত্রা তীব্র।
এই প্রেক্ষাপটে, বিশ্ব খাদ্য দিবস ২০২৫-এর প্রতিপাদ্য “উন্নত খাদ্য এবং উন্নত ভবিষ্যতের জন্য হাতে হাত রেখে” অনুসরণ করে খানি বাংলাদেশ সরকারের প্রতি অবিলম্বে একটি খাদ্য অধিকার আইন প্রণয়নের আইন জানিয়েছে। তাদের মতে, এমন একটি আইনি কাঠামো প্রণীত হলে খাদ্য উৎপাদন, বিতরণ এবং প্রাপ্যতার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের দায়বদ্ধতা আরও স্পষ্ট হবে এবং সকল নাগরিকের জন্য নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
এর আগে সকালে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বিন্দু নারী উন্নয়ন সংগঠনের সেভগার্ডিং ও মিল অফিসার কানিজ শাইমা আঁখির সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, সমাজকর্মী শারমিন সুলতানা, তোহরা খাতুন, ইকরামুল ইসলাম, সংবাদকর্মী মোশাররফ হোসেন, আক্তারুজ্জামান বাচ্চু প্রমুখ। মানববন্ধনে বিন্দু নারী উন্নয়ন সংগঠনের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।