ক্ষমতাগ্রহণের ১১ মাসের মাথায় পর্তুগালে সরকার পতন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১৩ মার্চ, ২০২৫, 10:50 AM

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১৩ মার্চ, ২০২৫, 10:50 AM
ক্ষমতাগ্রহণের ১১ মাসের মাথায় পর্তুগালে সরকার পতন
পর্তুগালের জাতীয় সংসদে আনা আস্থা ভোটে ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী লুইস মন্টিনিগ্রো সরকারের পতন হয়েছে। এতে ক্ষমতাগ্রহণের ১১ মাসের মাথায় লুইস মন্টিনিগ্রো সরকারের পতন দেখলো পর্তুগালবাসী। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১১ মার্চ) পর্তুগালের পার্লামেন্টে দিনভর নানা নাটকীয়তার পর অধিকাংশ দল সরকারের আনা আস্থা ভোটের বিপক্ষে ভোট দেয়। এখন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে পার্লামেন্টে নির্বাচন বা জাতীয় নির্বাচনের সিদ্ধান্ত দেবেন প্রেসিডেন্ট। মঙ্গলবার পুরো পর্তুগালবাসীর চোখ ছিল দেশটির পার্লামেন্ট অধিবেশনের দিকে। প্রধানমন্ত্রী লুইস মন্টিনেগ্রোর ডাকা আস্থা প্রস্তাবে সাড়া, নাকি বিপক্ষে ভোট দেবে রাজনৈতিক দলগুলো সেটাই ছিল দেখার বিষয়। শেষমেষ সরকারের আনা আস্থার বিপক্ষেই ভোট দেয় বিরোধীসহ বেশিরভাগ দল। পার্লামেন্টে ২৩০টি আসনের মধ্যে ১৪২ জন সদস্যই ভোট দেন আস্থা ভোটের বিপক্ষে। আর এতেই পতন নিশ্চিত হয় ১১ মাস আগে ক্ষমতা নেয়া সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট বা এডি সরকারের। সংসদের বিরোধী দলগুলো অভিযোগ করে যে, প্রধানমন্ত্রী তার উপর আসা অভিযোগগুলোর যথাযথ ব্যাখ্যা দিতে পারেননি বরং তিনি কৌশল অবলম্বন করছেন। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর উপর দুটি দলের ডাকা অনাস্থা প্রস্তাবে প্রধান বিরোধী দল সরকারকে সমর্থন করলেও প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে যথাযথ ব্যাখ্যা না পাওয়ার অভিযোগে সরকারের ডাকা আস্থা প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট প্রদান করে বিরোধী দলসহ বেশ কয়েকটি দল। আইন অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি সংসদের সকল দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে একটি নতুন সরকার গঠন করতে পারেন অথবা নতুন নির্বাচনের ডাক দিতে পারেন। আর তাই সরকার পতনের পরই বুধবার (১২ মার্চ) রাজনৈতিক দলগুলোকে ডাকেন প্রেসিডেন্ট মার্সেলো। ঐকমত্যে পৌঁছানো গেলে এবং নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ না হলে মে মাসে জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবেন তিনি। নতুন সরকার আসার আগ পর্যন্ত এডি সরকার সীমিত পরিসরে তত্ত্বাবধায়কের ভূমিকা পালন করবে। উল্লেখ্য, পর্তুগালে গত ৪ বছরে কোনো সরকারই পূর্ণ মেয়াদ শেষ করতে পারেনি! ২০২২ সালে সোশ্যালিস্ট পার্টি (পিএস) নির্বাচনে জিতে আন্তোনিও কস্তা তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন। তবে পরবর্তী সময়ে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে, যা তার সরকারের জন্য বড় ধাক্কা হয়ে দাঁড়ায়। ২০২৩ সালে দুর্নীতির তদন্ত শুরু হলে আন্তোনিও কস্তা ২০২৩ সালের নভেম্বর এ পদত্যাগ করেন। তার সরকার পতনের পর নতুন নির্বাচন ঘোষণা করা হয়। ২০২৪ সালের মার্চে মধ্য-ডানপন্থী ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স (এডি) সবচেয়ে বেশি আসন পেয়ে ক্ষমতায় আসে। তবে তারা নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি, ফলে চরম ডানপন্থী দল চেগা (সিএইচইজিএ)-র সমর্থন নিতে হয়। এতে দেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়তে থাকে। এবং সেই সময়েই রাজনীতি বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, সব থেকে দুর্বল সরকার গঠন হতে যাচ্ছে। ২০২৫ সালে প্রধানমন্ত্রী লুইস মন্টিনিগ্রো আস্থা ভোটে হেরে যাওয়ায় আরেকটি আগাম নির্বাচন হতে যাচ্ছে। যার ফলে ৪ বছরে ৩ বার সরকার পরিবর্তন দেখল পর্তুগাল।