আমরা আবারো গোপালগঞ্জে যাবো: নাহিদ ইসলাম
নিজস্ব প্রতিবেদক
১৭ জুলাই, ২০২৫, 12:35 PM

নিজস্ব প্রতিবেদক
১৭ জুলাই, ২০২৫, 12:35 PM

আমরা আবারো গোপালগঞ্জে যাবো: নাহিদ ইসলাম
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, গোপালগঞ্জ নিয়ে আমাদের অবস্থান গতকালের বক্তব্যেই পরিষ্কার হয়েছে। পুরো বাংলাদেশের প্রতি আমাদের যে কমিটমেন্ট গোপালগঞ্জের প্রতিও আমাদের সেই কমিটমেন্ট। গোপালগঞ্জের অধিবাসীদের প্রতি রাজনৈতিক বৈষম্য আমরা বিরোধিতা করি। বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) নিজের ব্যাক্তিগত ভেরিফায়েড ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে এ মন্তব্য করেন তিনি। নাহিদ ইসলাম ফেসবুকে লিখেন, গোপালগঞ্জ ও পুরো বাংলাদেশকে আমরা মুজিববাদী সন্ত্রাস ও ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্ত করবো। আওয়ামী লীগ যুগের পর যুগ ধরে গোপালগঞ্জের মানুষের জীবনকে বিপন্ন করেছে, মুক্তিযুদ্ধকে কলুষিত করেছে এবং সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সাথে বে-ইনসাফি করেছে। আমরা বলেছি আমরা এ পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটাবো। তিনি লিখেন, আমরা যুদ্ধের আহ্বান নিয়ে যাই নাই। আমাদের পূর্বঘোষিত শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি ছিল। মুজিববাদী সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্য সশস্ত্র হামলা চালায় আমাদের উপরে। যেরকমটা জুলাই গণঅভ্যুত্থানেও হয়েছিল। আওয়ামী লীগ সব সময় একটা গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করতে চায়। এনসিপির আহ্বায়ক লিখেন, গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের এত হত্যাযজ্ঞের পরেও ৫ই অগাস্টের পরে অনেকে 'রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ' আনতে চেয়েছিল। তাদের মনে রাখা উচিত আওয়ামী লীগ কোনো রাজনৈতিক দল নয় আর, এটা একটা সন্ত্রাসবাদী সংগঠন। তিনি আরও লিখেন, ৫ অগাস্টের পরে আমরা বহুবার বলছি আমরা আইনি ও বিচারিক প্রক্রিয়ায় জুলাই গণহত্যার বিচার চাই। কিন্তু ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের লোকদের ব্যাপকভাবে গ্রেপ্তার করা হয়নি। গ্রেপ্তার হলেও কোর্টে জামিন নিচ্ছে, থানা থেকে পালিয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে ঘাপটি মেরে আছে ফ্যাসিবাদের দোসর এবং দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা যাদেরকে টাকা দিয়ে কিনে ফেলা যায়। নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের পুরো বাংলাদেশের বিভিন্ন যায়গার নেতাকর্মীরা গতকাল গোপালগঞ্জে ছিল। প্রশাসন ও নিরাপত্তা বাহিনী যেভাবে ইনস্ট্রাকশন দিয়েছে সকালের নাশকতার পরেও সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স পেয়েই আমরা গোপালগঞ্জে প্রবেশ করেছি। পদযাত্রা করি নাই, পথসভা করেছি শুধু। গোপালগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলা থেকে আমাদের লোকজনকে আসতে দেওয়া হয় নাই। বিভিন্ন জায়গায় বাস আটকে দেওয়া হয়েছে। এরপরেও আমরা শান্তিপূর্ণভাবে পথসভা শেষ করেছি। যাওয়ার পথে সশস্ত্র আক্রমণ চালিয়েছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। নিরাপত্তাবাহিনী যেভাবে ইনস্ট্রাকশন দিয়েছে আমরা সেভাবে সেখান থেকে বের হয়েছি। আমরা চারজনের মৃত্যুর কথা শুনেছি। কোনো বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডজ্ঞানকে আমরা সমর্থন করি না, প্রত্যাশা করি না। সন্ত্রাসীদের বিচারিক প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নিতে হবে। প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থা যদি সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নিতো তাহলে এ পরিস্থিতি তৈরি হতো না। এ দায়ভার সরকার ও প্রশাসনকে নিতে হবে। আমরা পুরো ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও সন্ত্রাসীদের বিচার দাবি করছি। সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করতে হবে। শুধু গোপালগঞ্জ নয়, সারাদেশে এ গ্রেপ্তার অভিযান চালাতে হবে। কমিটমেন্ট করেছিলাম আমরা গোপালগঞ্জে যাবো। আমরা গেছি এবং শহীদের রক্তের শপথ নিয়ে ঘোষণা করছি যে মুজিববাদকে গোপালগঞ্জ ও বাংলাদেশের মাটিতে দাঁড়াতে দিবো না। আমরা আবারো গোপালগঞ্জে যাবো। আমরা জীবিত থাকলে গোপালগঞ্জের প্রত্যেকটা উপজেলায় প্রত্যেকটা গ্রামে কর্মসূচি করবো। গোপালগঞ্জের প্রতিটা ঘরে ঘরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পতাকা উড়বে। গোপালগঞ্জ মুজিববাদীদের হবে না, বাংলাদেশপন্থীদের হবে। শহীদ বাবু মোল্লার গোপালগঞ্জ, শহীদ রথীন বিশ্বাসের গোপালগঞ্জকে আমরা পুনরুদ্ধার করবো। মকসুদপুরে কোটালীপাড়ায় আমাদের শহীদদের কবর রয়েছে। এ মাটি মুজিববাদীদের হতে দিবো না। বাংলাদেশের এক ইঞ্চি মাটিও মুজিববাদীর হবে না ইনশাআল্লাহ। যারা গতকালের হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছেন, রাস্তায় নেমেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। ফরিদপুরে পদযাত্রায় দেখা হবে।