হাত হারানো শিশু নাঈমকে ৩০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার রায় বহাল
নিজস্ব প্রতিবেদক
১৯ নভেম্বর, ২০২৪, 12:54 PM
নিজস্ব প্রতিবেদক
১৯ নভেম্বর, ২০২৪, 12:54 PM
হাত হারানো শিশু নাঈমকে ৩০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার রায় বহাল
ওয়ার্কশপে কাজ করতে গিয়ে সাড়ে তিন বছর আগে হাত হারানো আশুগঞ্জের ১৩ বছর বয়সী শিশু নাঈম হাসান নাহিদকে ক্ষতিপূরণ বাবদ ৩০ লাখ টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করে দিতে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন। আদালতে শিশুটির পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার ওমর ফারুক। এর আগে, গত ১২ জানুয়ারি ভৈরবের নূর ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের মালিককে শিশু নাঈম হাসান নাহিদের জন্য ক্ষতিপূরণ বাবদ ৩০ লাখ টাকা ফিক্সড ডিপোজিট করে দিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। চলতি বছরের এপ্রিল মাসের মধ্যে ১৫ লাখ টাকার ডিপোজিট এবং ডিসেম্বর মাসের মধ্যে ১৫ লাখ টাকার ডিপোজিট করে দিতে বলা হয় আদেশে। একইসঙ্গে শিশুটি এইচএসসি পাস না করা পর্যন্ত তাকে প্রতি মাসে ৭ হাজার টাকা করে দিতে বলা হয়। এ বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে সেদিন বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন। গত বছরের ৫ ডিসেম্বর শিশু নাঈম হাসানকে ক্ষতিপূরণ দিতে রুলের ওপর শুনানি হয়। শুনানি শেষে আদালত বিষয়টি রায়ের জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন। ‘ভৈরবে শিশুশ্রমের করুণ পরিণতি’ শিরোনামে ২০২০ সালের ১ নভেম্বর একটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন ছাপা হয়। প্রতিবেদন অনুযায়ী, তখন নাঈম হাসানের বয়স ছিল ১০ বছর। চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ত সে। তার বাবা আনোয়ার হোসেন ছিলেন জুতা ব্যবসায়ী। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হলে কর্মহীন হয়ে পড়েন আনোয়ার। এ সময় সংসারের চাপ সামলাতে নাঈমকে ভৈরবের একটি ওয়ার্কশপে কাজে দেন তার মা-বাবা। এই ওয়ার্কশপে কাজ করতে গিয়েই তার ডান হাতটি মেশিনে ঢুকে যায়। শেষে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কনুই থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয় ওই হাতটি। প্রকাশিত প্রতিবেদনটি যুক্ত করে ক্ষতিপূরণ প্রদানের নির্দেশনা চেয়ে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে শিশুটির বাবা হাইকোর্টে রিট করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ওই বছরের ২৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রুল জারি করেন। রুলে শিশুটিকে দুই কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। চার সপ্তাহের মধ্যে বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়। একইসঙ্গে ২০২০ সালের ২৮ সেপ্টেম্বরের ওই ঘটনা নিজ কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা দিয়ে অনুসন্ধান করতে কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়। আগের ধারাবাহিকতায় রুলের ওপর শুনানি হয়।