ঢাকা ০৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম
নওগাঁ সীমান্তে বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেল বিএসএফ ম্যাক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান গ্রেফতার দেশকে ৪ প্রদেশে ভাগ করার সুপারিশ জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের আর্জেন্টিনা থেকে এলো ৫০ হাজার টন গম উপদেষ্টা পরিষদে শেখ হাসিনার দোসররা আছে, বলার পরও বাদ দেয়া হয়নি: সালাহউদ্দিন আসামিদের বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী ফেরানো হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সড়ক বিভাজনে থাকা অসুস্থ বৃদ্ধের পাশে দাঁড়িয়েছেন ইউএনও দিচ্ছেন চিকিৎসাসেবা বিচারবিভাগ ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন হাতে পেলেন প্রধান উপদেষ্টা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পোষ্য কোটা বাতিল শক্তিশালী ভূমিকম্পে কাঁপল ইন্দোনেশিয়া

সিডরের ১৪ বছর, উপকূলে এখনও আতঙ্ক

#

নিজস্ব প্রতিনিধি

১৫ নভেম্বর, ২০২১,  10:43 AM

news image

গত ২৪ সেপ্টেম্বর দাকোপের কালাবগীতে বেড়ীবাঁধের ১শমিটার এলাকা ভয়াবহ ভাঙনের মুখে পড়ে, তাৎক্ষণিকভাবে পানি আটকানো সম্ভব হলেও ঝুঁকিমুক্ত হয়নি আজ ১৫ নভেম্বর। সিডরের ১৪ বছর। ২০০৭ সালের এই দিনে সাইক্লোন সিডর আঘাত হানে উপকূলে। ২০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস আর ২৪০ কিলোমিটার গতির ঝড়ে উপকূলীয় অঞ্চল পরিণত হয় ধ্বংসস্তুপে। সেদিন সহস্রাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটে। শরণখোলার বিধ্বস্ত জনপদের মানুষের দাবি ছিল টেকসই বেড়িবাঁধ।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ৩৫/ পোল্ডারের ৬২ কিলোমিটার এবং দাকোপের ৩২ ৩৩ নং পোল্ডারের ৬০ কিলোমিটার টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করে। বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে পাউবোর উপকূলীয় বাঁধ উন্নয়ন প্রকল্পের (সিইআইপি) মাধ্যমে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৬ সালের ২৬ জানুয়ারি বাঁধের কাজ শুরু হয়।

চায়নার সিএইচডব্লিউই নামে একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান বাঁধ নির্মাণের কাজ পায়। তিন বছর মেয়াদের এই কাজ ২০১৮ সালে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই কাজ দুই দফা মেয়াদ বাড়নোর পর এখন পর্যন্ত শেষ হয়নি। গত ২৪ সেপ্টেম্বর দাকোপের কালাবগীতে বেড়ীবাঁধের ১শমিটার এলাকা ভয়াবহ ভাঙনের মুখে পড়ে। তাৎক্ষণিকভাবে পানি আটকানো সম্ভব হলেও ঝুঁকিমুক্ত হয়নি। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে প্রস্তাবিত ২০০ মিটার টেকসই বাঁধের কাজ দ্রুত শুরু করা হবে। নবনির্মিত বাঁধ এখন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি। কিন্তু তার আগেই বাঁধের বিভিন্ন অংশে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দেয়। দাকোপের মোস্তফা খান বলেন, “৩২ ৩৩ নম্বর পোল্ডার এলাকার বেড়িবাধ নির্মাণ কাজসহ অন্যান্য কাজে ব্যাপক গড়মিল লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বাঁধ নির্মাণ কাজ শুরুতে একরকম ছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে বাঁধের উচ্চতা চওড়া ঠিক রাখা হচ্ছে না।

এলাকাবাসী আগেই ভাঙণ প্রতিরোধের দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু সেটি আমলে না নেওয়ায় এখন নির্মাণের পর নদী ভাঙনের কবলে পড়তে হচ্ছে।   পানি উন্নয়ন বোর্ড খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল আলম বলেন, “দাকোপের ২টি পোল্ডারের কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর কালাবগি এলাকায় বার ভেঙেছে। অবস্থায় নদী ভাঙন প্রবণ ৬টি স্থান নিহ্নিত করা হয়েছে। এই ৬টি স্থানের কিলোমিটার এলাকা নতুনভাবে নদী শাসনের আওতায় নিয়েছে বিশ্ব ব্যাংক।

তিনি বলেন, “২৪ সেপ্টেম্বর নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধের পেছন দিয়ে ২৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় বিকল্প বাঁধ নির্মাণ করা হয়। সেখানে জিও ব্যাগ ডাম্পিং করে ভাঙন প্রতিরোধের উদ্যোগ নেওয়ার পাশাপাশি ২০০ মিটার টেকসই বাঁধ নির্মাণের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করা হয়েছে।এদিকে কাজ চলমান থাকার মধ্যেই শরণখোলার বলেশ্বর নদের তীরের রায়েন্দা বড়ইতলা, সাউথখালীর তাফালবাড়ী এবং গাবতলা এলাকার বেশ কয়েকটি পয়েন্টের ব্লক সরে গেছে। দাকোপের ২টি এলাকায় বাধে ভাঙ্গন ধরে। নদী শাসন না করায় সব এলাকায় ভাঙনের সৃষ্টি হয়।

শরণখোলার গাবতলা এলাকার বাসিন্দা জাহাঙ্গীর খান জানান, কয়েকশকোটি টাকা খরচ করে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হচ্ছে। অথচ তাতে স্বস্তি নেই। দক্ষিণ সাউথখালী ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. জাকির হাওলাদার বলেন, “বেড়িবাঁধ পেয়েছি। কিন্তু টেকসই বাঁধ হয়নি। কাজের মানও খারাপ।সাউথখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোজাম্মেল হোসেন বলেন, “বাঁধের কাজের মান নিয়ে অনেক অভিযোগ রয়েছে। তারপরও যা হয়েছে, নদী শাসন না হলে এই বাঁধ টিকবে না।

শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খাতুনে জান্নাত বলেন, “কাজ দ্রুত বাস্তবায়ন এবং নদী শাসনের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।”  সিইআইপির ফিল্ড ইঞ্জিনিয়ার মোঃ লাকিদুল ইসলাম বলেন, “করোনাভাইরাস এবং দুর্যোগের কারণে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করা যায়নি। শরণখোলার কাজের ৯০ ভাগ শেষ হয়েছে। ২০২২ সালের এপ্রিলের মধ্যে সম্পূর্ণ কাজ শেষ হবে।

logo

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. নজরুল ইসলাম