সব বাধা উপেক্ষা করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
২৬ ডিসেম্বর, ২০২২, 1:07 PM
নিজস্ব প্রতিবেদক
২৬ ডিসেম্বর, ২০২২, 1:07 PM
সব বাধা উপেক্ষা করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
দেশি-বিদেশি সব বাধা উপেক্ষা করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করা হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সাধারণ মানুষের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে যা যা প্রয়োজন সরকার সব করেছে। সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের ৫৯তম বার্ষিক সম্মেলনে বক্তব্য দেন তিনি। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার বিচার করা হবেনা বলে আইন করা হয়েছিল। ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স দিয়ে খুনিদেরকে বিচার হাত থেকে রেহাই দিয়ে তাদেরকে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়েছিল। ৯৬ সালে ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স আইন বাতিল করে জাতির পিতার পরিবারের হত্যার বিচারের কাজ শুরু করি। সেসময় আমাদের অনেক বাধা আসে কিন্তু আমরা সব বাধা অতিক্রম করে পরে ২০০৯ সালে বিচারক তোফাজ্জেল সাহেব রায় কার্যকর করতে সক্ষম হয়েছিলো বলেই আমরা বিচার করতে পেরেছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন,
আমরা যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করলাম তখন অনেক বাধা সৃষ্টি হয়। দেশের বাইরেরে রাষ্ট্রপ্রধানরাও এই বিচারের অনেক বাধা দেয়ার চেষ্টা করে, এমনকি কেউ কেউ আমার কাছে টেলিফোন করে কথাও বলে। তাদের শুরু আমি একটি কথা বলেছিলাম দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যারা অপরাধ করেছিলো তাদের বিচার তো এখনো হচ্ছে তাহলে বাংলাদেশের মানুষের ওপর যারা নির্যাতন চালিয়েছে, হত্যা করেছে তাদের বিচার হবেনা কেন। এ ধরনের চাপ আমাদের ওপর হয়েছিলো তারপরও আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে পেরেছি। বিভার বিভাগে প্রযুক্তির ব্যবহার বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যেমন প্রযুক্তির ব্যবহার করে সুযোগ পাচ্ছি তেমনি এই প্রযুক্তির ব্যবহার করে জঙ্গিবাদ বা সন্ত্রাসী কার্যকর্মের ধরন পাল্টে যাচ্ছে। এজন্য আমরা আইন করছি, এর বিরুদ্ধে অনেকে অনেক কথা বলে। কিন্তু বাস্তবতা হলো এটা আমাদের একান্ত প্রয়োজন এ কারণেই এখন কিন্তু আগের মত মল্লযুদ্ধ হয়না এখন বোতাম টিপে হয়, এমনকি এখন অনলাইনে ট্রেনিং দেয়া হয় কিভাবে বোমা বানাবে, কিভাবে মানুষ খুন করবে। কাজেই সব ধরনের সন্ত্রাসবিরোধী আইনগুলোকে সরকার গুরুত্বের সঙ্গে দেখে। ভার্চুয়াল আদালত প্রসঙ্গে সরকারপ্রধান বলেন, করোনা মহামারির সময় ভার্চুয়াল কোর্ট প্রতিষ্ঠা করে বিচার যাতে চলে সেই ব্যবস্থা নিতে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আলোচনা করি। এরপর ভার্চুয়াল আদালত প্রতিষ্ঠার পরে অনেক মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করা সম্ভব হয়েছে। আমাদের আইনজীবী যারা তাদের জন্যও সুবিধা হয়েছে যে, যেকোনো জায়গা থেকেই আদালত পরিচালনা করতে পারছে। সারাদেশে ই-জুডিশিয়াল প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ই-জুডিশিয়ালি চালু করা গেলে মামলা ব্যবস্থাপনায় আরও গতি আসবে। বিচারকদের সুযোগ সুবিধা প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা আরও বলেন, বিচারকদের জন্য আন্তর্জাতিক মানের জুডিশিয়াল একাডেমী প্রতিষ্ঠা আমরা করে দেব। ইতোমধ্যে জায়গা দেখা হয়েছে সেটা কার্যকর কিনা সেটা দেখা হচ্ছে। সেই সঙ্গে আমরা একটা আইন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করব। বিচারকদের বাসস্থানের জন্য আমরা ফ্লাট করে দিচ্ছি। এটা শুধু ঢাকা শহরে না প্রতিটি জেলায় জেলায় আমরা নিরাপদ বাসস্থানের ব্যবস্থা করে দেব। সেইসঙ্গে বিচারকদের গাড়ি ব্যবস্থা নিশ্চিতের জন্য গাড়ি ঋণ নগদায়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করব। তিনি আরও বলেন, সব মানুষ যেনো ন্যায় বিচার পায়, মামলাগুলো নিষ্পত্তি হয় এবং একটা স্বচ্ছতা জবাবদিহিতার সৃষ্টি হয় সেই পরিবেশটা আমরা চাই।