ঢাকা ২১ নভেম্বর, ২০২৪
সংবাদ শিরোনাম
একটি বড় পরিবর্তনের পর সবকিছু একদিনে ঠিক হবে না: ফারুকী ৩ দশমিক ১ মাত্রার ভূমিকম্পে কাঁপল রংপুর এক যুগ পর সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া ব্যারিস্টার সুমনকে লক্ষ্য করে ডিম নিক্ষেপ, ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর ‘‌আমার নামে মামলা আছে, জানতাম না’ অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীনকে সিইসি নিয়োগ ‘সাংবাদিক’ পরিচয়ে তিশার আপত্তিকর ভিডিও ধারণ আইজিপি হিসেবে দায়িত্ব নিলেন বাহারুল আলম ডিএমপি কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব নিলেন শেখ সাজ্জাত আলী সাবেক এমপি শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার

ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়ের রিভিউ শুনানি আজ

#

নিজস্ব প্রতিবেদক

২০ অক্টোবর, ২০২৪,  11:06 AM

news image

বিচারকদের অপসারণ

দীর্ঘ অবকাশ ছুটি কাটিয়ে নিয়মিত বিচারকাজে ফিরেছেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট। বিচারকাজে ফেরার প্রথম দিনই আজ রবিবার আপিল বিভাগে শুনানি হতে পারে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করা রায়ের পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন।

সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতাসংক্রান্ত এই মামলাটি আজ (রবিবার) আপিল বিভাগের কার্যতালিকার শীর্ষে রাখা হয়েছে। প্রায় সাত বছর ধরে আবেদনটি সর্বোচ্চ আদালতে বিচারাধীন। নিষ্পত্তি না হওয়ায় তৈরি হয়েছে নানা সংকট।

সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করা সর্বোচ্চ আদালতের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন মঞ্জুর বা খারিজের ওপর নির্ভর করছে সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের অপসারণক্ষমতা সংসদের ওপর ন্যস্ত হবে, নাকি সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে থাকবে। সর্বোচ্চ আদালত রিভিউ আবেদন মঞ্জুর করলে বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরে যাবে। আর আবেদনটি খারিজ হলে সে ক্ষমতা থাকবে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে।

বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে নিতে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদ সংশোধনের প্রস্তাব সংসদে পাস হয়, যা ষোড়শ সংশোধনী হিসেবে পরিচিত। পরে সুপ্রিম কোর্টের ৯ জন আইনজীবীর রিট আবেদনে হাইকোর্ট ২০১৬ সালের ৫ মে এই সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করেন। ২০১৭ সালের ৩ জুলাই এ রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিল খারিজ করে হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে রায় দেন আপিল বিভাগ। এতে বিচারপতি অপসারণ ক্ষমতা সংসদের হাতে ন্যস্ত করে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল হয়ে যায়।

পুনরুজ্জীবিত হয় সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদের ছয়টি ধারা। এর মধ্য দিয়ে ১৯৭৭ সালে সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের সময় করা সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের বিধান ফিরে আসে সংবিধানে।

২০১৭ সালের ১ আগস্ট ৭৯৯ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়টি প্রকাশ পেলে ওই বছরের ২৪ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করে। এরপর বিভিন্ন সময় এই আবেদন শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় উঠলেও রাষ্ট্রপক্ষ ও রিটকারী পক্ষের আবেদনে শুনানি পিছিয়ে যায়।

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। এরপর গত ৮ আগস্ট নোবলেজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়। সরকার গঠনের পর ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ আপিল বিভাগের পাঁচ বিচারপতি। পরে ১০ আগস্ট দেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান সৈয়দ রেফাত আহমেদ। ১২ আগস্ট হাইকোর্টের চার বিচারককে নিয়োগ দেওয়া হয় আপিল বিভাগে। এ অবস্থায় ষোড়শ সংশোধনী মামলার রিভিউ আবেদনের শুনানি করতে আপিল বিভাগে আবেদন করে রিটকারীপক্ষ।

গত ১৬ আগস্ট সেই আবেদনের শুনানির পর আপিল বিভাগ জানায়, চলতি অবকাশকালীন ছুটির পর এর শুনানি হবে। তবে এদিন শুনানির নির্দিষ্ট কোনো তারিখ দেননি সর্বোচ্চ আদালত। এর মধ্যে হাইকোর্ট বিভাগের বেশ কিছু বিচারকের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতি-অসদাচরণের অভিযোগ তোলা হয় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীদের পক্ষ থেকে। তাঁরা প্রধান বিচারপতির দপ্তরে লিখিত অভিযোগও করেন। গত ১৫ অক্টোবর আইনজীবীদের লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে একটি হাইকোর্ট বেঞ্চ ভেঙে দেন প্রধান বিচারপতি। এদিন রাতে ‘দলবাজ, দুর্নীতিবাজ ও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের সহযোগী বিচারকদের’ পদত্যাগ ও অপসারণের দাবিতে সুপ্রিম কোর্ট ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। পরদিন অর্থাৎ ১৬ অক্টোবর দিনভর আন্দোলনের মুখে হাইকোর্টের ১২ জন বিচারককে বেঞ্চ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানান সুপ্রিম কোর্ট। সেদিন বিকালে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আজিজ আহমেদ ভূঞা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘেরাও কর্মসূচিতে এসে এই ঘোষণা দেন। রেজিস্ট্রার জেনারেলের ঘোষণায় আজ রবিবার ষোড়শ সংশোধনী মামলার রিভিউ শুনানিরও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।

ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় বাতিলের আবেদন

এদিকে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফেরাতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিলের রায় বাতিল চেয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের আবেদন আজ রবিবার আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য উঠতে পারে। এই মামলাটির জন্য আইনজীবী শিশির মনিরকে নিয়োগ দিয়েছে বিএনপি। এই আইনজীবী জানিয়েছেন, আজ আবেদনটি আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে উপস্থাপন করা হবে।

logo

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. নজরুল ইসলাম