রিখটার স্কেলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্পেও টিকে থাকবে পদ্মা সেতু
নিজস্ব প্রতিবেদক
০১ জুন, ২০২২, 12:16 PM
নিজস্ব প্রতিবেদক
০১ জুন, ২০২২, 12:16 PM
রিখটার স্কেলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্পেও টিকে থাকবে পদ্মা সেতু
শুধুনিজস্ব অর্থায়নের জন্যই নয়, স্বপ্নের পদ্মা সেতুকে নিয়ে গর্বকরার রয়েছে বেশকিছুদিক। বিশ্বের দ্বিতীয় খরস্রোতা আর অনন্য বৈশিষ্ট্যের তলদেশের এই নদীর ওপর সেতুনির্মাণই একটি বড় প্রকৌশল চ্যালেঞ্জ ছিল। পদ্মা সেতুর মতো আর কোনো সেতুর পিলারের পাইল মাটির ১২২ মিটার পর্যন্ত গভীরে নিতে হয়নি। আর অত্যাধুনিক প্রযুক্তির কারণে রিখটার স্কেলে ৯ মাত্রার ভূমিকম্পেও কোনো ক্ষতি হবে না এই সেতুর, যা বিশ্বের আর কোনো সেতুর তা নেই। খরস্রোতা হিসেবে বিশ্বে অ্যামাজানের পরেই পদ্মার অবস্থান। প্রতি সেকেন্ডে পানি প্রবাহিত হয় প্রায় দেড় লাখ কিউবি ক মিটার। পদ্মার তলদেশের বৈশিষ্ট্যও অন্যান্য নদীর চেয়ে আলাদা। ফলে পদ্মার ওপর সেতু নির্মাণ প্রকৌশলীদের জন্য ছিল বড় এক চ্যালেঞ্জ।
২০১৪ সালের ডিসে ম্বরে পদ্মা সেতুর কাজ শুরু হলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মূল সেতুও নদী শাসন কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ২০১৫ সালের ১২ই ডিসেম্বর। আর সেতুর দুই পিলারের মাঝখানে প্রথম স্প্যা ন বসে ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর। এরপর ধাপে ধাপে ৪২ টি পিলারের মাঝখানে ৪১ টি স্প্যান বসানোর মাঝে পদ্মার দুই পাড় সংযুক্ত হয় ২০২০ সালের ১০ই ডিসেম্বর। পদ্মা সেতুর সবচেয়ে জটিল কাজ ছিল পিলারের পাইলিং। ৩ মিটার ব্যাসের স্টিলের একেকটি ফাঁপা পাইপ ঢোকানো হয়েছে সর্বোচ্চ ১২২ মিটার গভীরে। বিশ্বের আর কোনো সেতুতেই এত গভীরে পাইলিং করতে হয়নি। পদ্মা র তলদেশে কয়েকটি পিলারের অংশে কাদামাটির স্তরের পরে শক্ত মাটির স্তর না পাওয়ায় সেসব জায়গায় একটি করে পাইল বেশি দিতে হয়েছে। পদ্মা সেতুরতু গর্বকরার অন্যতম জায়গা হল এর ভূমিকম্প সহনীয়তা। সেতুর পিলার আর স্প্যানের সংযোগ স্থলে বসানো হয়েছে ১০ হাজার টন সক্ষমতার ফ্রিকশন পেন্ডুলাম বিয়ারিং। যে কারণে রিখটার স্কেলে ৯ মাত্রার ভূমি কম্পেও টিকে থাকবে পদ্মা সেতু। বিশ্বের আর কোন সেতুতে এমন সক্ষমতার বিয়ারিং ব্যবহার করা হয়নি। নদীশাসনেও বিশ্ব রেকর্ডকরেছে পদ্মা সেতু। সরকার চায়নার সিনেহাইড্রো করপোরেশনের সঙ্গে ১১০ কোটি মার্কি ন ডলার চুক্তি করে। নদী শাসনের জন্য এর আগে এককভাবে এত বড় দরপত্র হয়নি বিশ্বের কোথাও। পদ্মা সেতুপ্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘অনেকগুলো বাধা পেয়েছি। আমরা সমন্বিতভাবে চেষ্টা করছি সকল বাধাকে অতিক্রম করার।’ নির্মাণশৈলীতেও বিশ্বে অনন্য পদ্মা সেতু। স্টীল আর কংক্রিটের সম্মিলনে এমন সেতুবিরল। সেতুকে মজবুত করতে গ্রাফ্টিং করা হয়েছে মা ইক্রোফাইন সিমেন্ট দিয়ে। এই সিমেন্ট বিশ্বের খুব কম সেতুতেই ব্যবহার করা হয়েছে। পদ্মা সেতু প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ কনসালটেন্ট ফার্মদা য়দায়িত্ব নিবে। তারা বলছে ১০০ বছরে র স্থায়িত্বকাল। যদি সঠিকভাবে পরিচর্যা এবং ব্যবহার করা হয় তাহলে ১০০ বছরের অনেক বেশি দিন এই সেতুটিকে থাকবে।’ পদ্মা সেতুর মূল দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার হলেও দুই পাড়ের সংযোগ মিলিয়ে সেতুর দৈর্ঘ্য প্রায় ৯ কিলোমিটার।-সূত্র : ডিবিসি নিউজ