ঢাকা ২৬ নভেম্বর, ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম
এখনো পুড়ছে কড়াইল বস্তি, নিয়ন্ত্রণে ১৯ ইউনিট দেশের কৃষিজমি দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে একজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ৬৩৩ নির্বাচনের জন্য বিএনপি পুরোপুরি প্রস্তুত: রিজভী উপদেষ্টা পরিষদে গণভোট অধ্যাদেশ অনুমোদন শেখ হাসিনার প্লট দুর্নীতি মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণা ৭০ বছর বয়সে কোরআন হিফজ করলেন সৌদি নারী শাজাহানপুরে এক নারীর ঝুলন্ত ও তার দুই সন্তানের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ বিসিএস প্রার্থীদের ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচনের তফশিল: ইসি সানাউল্লাহ

রংপুরে দুই মাসে অ্যানথ্রাক্সে শতাধিক গরুর মৃত্যু

#

নিজস্ব প্রতিনিধি

০৫ অক্টোবর, ২০২৫,  11:09 AM

news image

রংপুরে গত দুই মাসে অ্যানথ্রাক্স রোগে মারা গেছে শতাধিক গরু। শুধু তাই নয়, এই রোগে আক্রান্ত হয়েছেন অর্ধশতাধিক মানুষ। পশুবাহিত এই রোগ অনেকটা অসচেতনতার কারণেই ছড়িয়ে পড়ছে মানুষের শরীরে। রংপুর ছাড়াও এই রোগ ছড়িয়ে পড়েছে মেহেরপুরসহ কয়েক জেলায়। জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে যায় যায়, জেলায় অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এখন পর্যন্ত দাঁড়িয়েছে ১১ জন। চলতি বছরের জুলাই ও সেপ্টেম্বরে রংপুরের পীরগাছায় অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ নিয়ে দুজন মারা যান। একই সময়ে উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নে অর্ধশত ব্যক্তির শরীরে অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ দেখা যায়। ওই সময় ঘটনাস্থল থেকে অসুস্থ গরুর মাংসের নমুনা পরীক্ষা করে অ্যানথ্রাক্স শনাক্ত করেছিল প্রাণিসম্পদ বিভাগ। পরে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) একটি প্রতিনিধিদল ১৩ ও ১৪ সেপ্টেম্বর পীরগাছা সদর এবং পারুল ইউনিয়নের অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ থাকা ১২ জন নারী-পুরুষের নমুনা সংগ্রহ করেছিল। এর মধ্যে আটজনের অ্যানথ্রাক্স শনাক্ত হয়। 

স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, পীরগাছা, মিঠাপুকুর ও কাউনিয়া উপজেলায় অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অর্ধশতাধিক ছাড়িয়ে গেছে। তবে আইইডিসিআরের তথ্যে যে ১১ জন বলা হচ্ছে, বাস্তবে সে চিত্র ভিন্ন। পশুর টিকার সংকট দেখা দিয়েছে। আক্রান্তদের জন্য অ্যান্টিবায়োটিকেরও সংকট আছে।  মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, ২০ দিন আগে ইমাদপুর ইউনিয়নের আমাইপুর গ্রামে একটি গরু অসুস্থ হলে জবাই করা হয়। পরে ওই মাংস কাটাকাটি করার পর গ্রামের পাঁচ-ছয় জনের শরীরে ঘা হয় ও অ্যানথ্রাক্সের উপসর্গ দেখা দেয়। এরপর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তারা চিকিৎসা নিতে আসলে সেখানে থেকে নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআরে পাঠানো হয়। এর মধ্যে একজনের অ্যানথ্রাক্স শনাক্ত হয়। মিঠাপুকুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা (রোগনিয়ন্ত্রণ) এম এ হালিম লাবলু বলেন, এই উপজেলায় ১১ জনের শরীরে উপসর্গ পাওয়া গেছে।

এ রোগ গবাদিপশু থেকে মানুষে ছড়ায়, তবে মানুষ থেকে মানুষে ছড়ায় না। তাই মানুষকে সচেতন হতে হবে। অসুস্থ গরু জবাই করা বা মাংস খাওয়া যাবে না। পীরগাছা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. একরামুল হক বলেন, ‘শুধু পীরগাছাতেই অন্তত দেড় লাখ পশু অ্যানথ্রাক্সে আক্রান্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত ৫৩ হাজার ৪০০টি টিকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। আরও ৫০ হাজার টিকার চাহিদাপত্র দেওয়া হয়েছে। সেগুলো এখনও পাওয়া যায়নি।’ মিঠাপুকুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আলতাফ হোসেন বলেন, ‘এই রোগ প্রতিরোধে জনসচেতনতা বাড়ানোর বিকল্প নেই। আক্রান্ত পশুদের টিকা দেওয়া হচ্ছে। তবে সংকট আছে।’ পীরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ মো. রাসেল বলেন, আমরা আরও ৫০ হাজার টিকার চাহিদাপত্র পাঠিয়েছি। আপাতত অ্যানথ্রাক্স নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আক্রান্তদেরও চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রংপুরের সিভিল সার্জন শাহিন সুলতানা বলেন, ‘আক্রান্ত তিন উপজেলায় তিনটি মেডিক্যাল টিম গঠন করে সার্বক্ষণিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি ওসব উপজেলার মানুষকে আক্রান্ত গরু জবাই না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আবু ছাইদ বলেন, ‘অ্যানথ্রাক্স শনাক্ত হওয়ার পরই গত আগস্ট থেকে টিকা কার্যক্রম শুরু করেছি আমরা।

logo

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. নজরুল ইসলাম