রংপুরের বদরগঞ্জে স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা স্বামী গ্রেফতার
১৫ জুলাই, ২০২৪, 12:28 PM
NL24 News
১৫ জুলাই, ২০২৪, 12:28 PM
রংপুরের বদরগঞ্জে স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা স্বামী গ্রেফতার
আবুল হোসেন বাবলুঃ রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের ছোট হাজিপুর তেলীপাড়া গ্রামে স্ত্রীকে শ্বাসরোধে করেছে পাষন্ড স্বামী। হত্যাকারী স্বামীকে গ্রেফতার করেছে বদরগঞ্জ থানা পুলিশ। গত ৩১ ডিসেম্বর বাড়ির গরুর খাবার চাড়িতে পানি দেওয়াকে কেন্দ্র করে ছইদার সরদার @ সহিদার তার স্ত্রীর গলা চেপে ধরলে মুহুর্তের মধ্যে অচেতন হয়ে পড়ে স্ত্রী নিলুফা ইয়াসমিন। গুরুত্বর অসুস্থ অবস্থায় স্বামীর পরিবারের লোকজন নিলুফা ইয়াসমিনকে চিকিৎসার জন্য বদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করেন। পরবর্তীতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার ঘটনা বলে প্রচার করে স্বামীর পরিবারের লোকজন। নিলুফার পিতা বা তার পক্ষের কেউ কোন মামলা করতে আগ্রহী না হলে বদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসক থানায় ডিসিস্ট এর মৃত্যু সম্পর্কে অবহিতপত্র প্রেরণ করলে বদরগঞ্জ থানায় অপমৃত্যু মামলা রুজু হয়। যার নং- ৫২/২৩ তারিখ-৩১/১২/২০২৩ খ্রিঃ। অপমৃত্যু মামলার তদন্তকারী অফিসারের নিলুফার মৃত্যু সম্পর্কে সন্দেহ হলে তিনি লাশ মায়না তদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এর মর্গে প্রেরণ করেন। পরবর্তীতে ফরেনসিক রিপোর্টে শ্বাস রোধ করে হত্যা করা হয়েছে মর্মে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের মতামত থানায় প্রাপ্ত হলে ডিসিস্টের পিতা আব্দুল মমিন (৬০) বাদী হয়ে নিলুফার স্বামী ছইদার সরকার @ সহিদার (৩৬) এবং মৃতার শশুর মোঃ আব্দুল হাই (৫৮) পিতা- মৃত আবুল হোসেন সরদার ও অজ্ঞাতনামা ২/৩ জনের বিরুদ্ধে বদরগঞ্জ থানায় এজাহার দাখিল করলে বদরগঞ্জ থানার মামলা নং- ১৭, তারিখ- ১৩/০৭/২৪খ্রিঃ ধারা- ৩০২/২০৩/৩৪ রুজু হয়। মামলার প্রেক্ষিতে তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিদর্শক (তদন্ত) মনোয়ার জাহান তদন্ত কার্যক্রম শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় বদরগঞ্জ থানা পুলিশ অভিযুক্ত ছইদার সরদার @ সহিদারকে ১৩ জুলাই' ২০২৪ রাতে কচুবাড়ির হাট হতে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতারের পর রংপুর বিজ্ঞ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এ ১৬৪ ধারা মতে দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে স্বামী ছইদার সরদার @ সহিদার। রবিবার বিকেলে রংপুর জেলা পুলিশ সুপার এর সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন, রংপুর জেলার পুলিশ সুপার মোঃ শাহজাহান পিপিএম,। ঘটনার দিন দিবাগত রাতে নিলুফার স্বামী ছইদার স্থানীয় বাজারে নাইট গার্ডের ডিউটি শেষে বাড়ীতে এসে ঘুমিয়ে পড়ে। নিলুফা দুপুরে তার স্বামীকে গরুকে পানি খাওয়ানোর জন্য ঘুম থেকে ডাক দিলে ছইদার ঘুম থেকে উঠে রাগান্বিত হয়ে স্ত্রীর গলা ২/৩ মিনিট চেপে ধরে রাখে। ফলে স্ত্রী নিলুফা নিস্তেজ হয়ে গেলে অভিযুক্ত ছইদার তাকে ধাক্কা দিয়ে বিছানার উপর ফেলে রেখে আলু ক্ষেতে পানি দিতে চলে যায়। প্রায় আধাঘন্টা পর বাড়ীর মধ্যে চিৎকার শোরগোল শুনে স্বামী ছইদার এবং এজাহারে বর্ণিত অন্যান্য আসামীরা নিলুফা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে মর্মে ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য প্রচার করে। প্রাথমিক তদন্ত ও অভিযুক্তের স্বীকারোক্তি মতে জানা যায়, নিলুফা ইয়াসমিনের সাথে সইদারের প্রায় ১৪ বছর পূর্বে বিবাহ হয়।সংসার জীবনে তাদের ২ সন্তান রয়েছে। পারিবারিক বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে বিভিন্ন সময় অশান্তি মনোমালিন্য লেগে থাকতো। অভিযুক্ত ছইদারকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিজ্ঞ আদালত জেল হাজতে প্রেরণ করেছেন।