ঢাকা ৩০ জানুয়ারি, ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম
ধর্মের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা দ্বিতীয় পুত্রের মা হলেন অভিনেত্রী প্রসূন দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় আজ বিশ্বে দ্বিতীয় ঢাকা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নকআউটে গেল যারা বাড়তে পারে দিন ও রাতের তাপমাত্রা রংপুরে কমিউনিটি ব্যাংকের সাথে জেলা ট্রাফিক বিভাগের চুক্তি স্বাক্ষর সাতক্ষীরায় দুই সন্তান হাত্যার পর মায়ের আত্মহত্যার চেষ্টাসহ তিন জনের অস্বাভাবিক মৃত্যু টমেটো ফেলে মহাসড়ক অবরোধ আ. লীগের কর্মসূচিতে অংশ নিলে কী হবে জানালেন প্রেস সচিব এখন শেখ হাসিনা পাশের দেশ থেকে কর্মসূচির ঘোষণা দিচ্ছেন : রিজভী

মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব, রয়েছে নানা চ্যালেঞ্জ

#

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪,  10:55 AM

news image

টাকার অবমূল্যায়ন, রিজার্ভ সংকটের কারণে আমদানিতে সীমাবদ্ধতা, জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি, বাজারের অব্যবস্থাপনা, করপোরেট মুনাফা বৃদ্ধির তাগিদসহ নানা কারণে দুই বছর ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে পিষ্ট সাধারণ মানুষ। সরকারের কোনো পদক্ষেপেই জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। খাদ্যপণ্যের উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে ‘চিড়েচ্যাপ্টা’ হচ্ছেন ভোক্তারা। বিশেষ করে দরিদ্র, নিম্ন-মধ্যবিত্ত মানুষের জীবন যাপন দিন দিন আরও কঠিন হয়ে উঠছে। সরকার বলছে, লাগামহীন উচ্চ মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে আসতে সময় লাগবে আরও এক বছর। যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যমূল্য কমতে থাকায় মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে সরকারকে নানামুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।

তথ্য বলছে, বাংলাদেশে দুই বছরের বেশি সময় ধরে টানা উচ্চ মূল্যস্ফীতি রয়েছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারানো আওয়ামী লীগ সরকারের জনপ্রিয়তা কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ ছিল বাজারে পণ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করতে না পারা। ২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতি বেড়ে যায়। পৃথিবীর অধিকাংশ দেশ এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে মূল্যস্ফীতি কমাতে পেরেছে। কিন্তু বাংলাদেশ তার ব্যতিক্রম।

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়েই মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ অগ্রাধিকার ঘোষণা করে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত দৃশ্যমান উন্নতি দেখা যায়নি। বর্তমান সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, গত সরকারের আমলে অর্থনীতির অবস্থা অনেক খারাপ হওয়ার প্রভাব, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে টাকা ছাপিয়ে ঋণ দেওয়া, সাম্প্রতিক বন্যাসহ বিভিন্ন কারণে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে।

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশের মূল সমস্যা মূল্যস্ফীতি নয়, দ্রব্যমূল্য কমিয়ে আনা। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা গেলেও দ্রব্যের যেই পরিমাণ মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে, তা কমাতে না পারলে মানুষের দুর্ভোগ কমবে না। বিশ্ববাজারে পণ্যমূল্য অনেকটাই কমে এসেছে। এখন বাংলাদেশে বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখতে পারলে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। তবে এ ক্ষেত্রে সরকারকে নানামুখী চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে।

তিনি বলেন, বাজারে কিছু টাকা ছাড়া হয়েছে, সেগুলোকে দ্রুতই তুলে নিতে হবে। এটা স্থায়ী হলে মূল্যস্ফীতির ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। আর দীর্ঘদিন থেকেই আমাদের বাজারে প্রতিযোগিতা অনুপস্থিত। বিশেষ করে ভোগ্যপণ্যের বাজার কয়েকটি ব্যবসায়ী গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে। তারা যদি সিন্ডিকেট বা সরবরাহে ঝামেলা করে, তাহলে মূল্যস্ফীতিতে সমস্যা তৈরি হতে পারে। এজন্য সরকারকে বিষয়টির দিকে নজর রাখতে হবে। আগামী বোরো মৌসুমে খাদ্যপণ্যগুলো ঠিকভাবে ঘরে তোলা গেলে বাজার নিয়ন্ত্রণ সহজ হবে বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ।

এই মুহূর্তে দেশের প্রধান সমস্যা অর্থনৈতিক। আর অর্থনৈতিক সমস্যাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় উচ্চ মূল্যস্ফীতি। কয়েক বছর ধরে চলতে থাকা ধারাবাহিক উচ্চ মূল্যস্ফীতির চাপের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে দেশের সাধারণ মানুষ। ভোগান্তিতে থাকা সাধারণ মানুষের মতোই বর্তমান সরকারের কাছে অন্যতম চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ। এজন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় কিছু পণ্যে শুল্কছাড়সহ বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। আগের সরকারও নীতি সুদহার বাড়ানোসহ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছিল। তবে বাস্তবতা বলছে, শিগগির নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে না মূল্যস্ফীতি।

দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতির এমন উদ্বেগের কথা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনেও উঠে এসেছে। সরকারি হিসাবে, গত নভেম্বরে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১১ দশমিক ৩৮ শতাংশ। খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১৩ দশমিক ৩৮ শতাংশ। আর শহরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি আরও বেশি, যা ১৪ দশমিক ৬৩ শতাংশ। বিবিএসের হিসাবে, গত এক বছর ধরে গড় মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের বেশি। এত উচ্চহারে মূল্যস্ফীতি এই মুহূর্তে খুব কম দেশেই আছে।

তবে বাস্তব অবস্থা সরকারি হিসাবের চেয়ে বেশি। অর্থনীতিবিদদের অনেকে আগে থেকেই বলে আসছেন, বাস্তবে মূল্যস্ফীতির হার আরও বেশি হবে। অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত অর্থনীতির শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রতিবেদনেও একই কথা বলা হয়েছে। কমিটি বলেছে, বিবিএস যে পদ্ধতিতে মূল্যস্ফীতি নিরূপণ করে, তা সঠিক নয়। বিশেষ করে খাদ্য মূল্যস্ফীতির ক্ষেত্রে সরকারি পরিসংখ্যানের সঙ্গে বাস্তবতার ফারাক বেশি। এতে সামগ্রিক মূল্যস্ফীতির হারেও প্রভাব পড়েছে। শ্বেতপত্র কমিটি মনে করে, গত এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরে বিবিএসের প্রকাশিত মূল্যস্ফীতির হার ৯ থেকে ১১ শতাংশ হলেও তাদের হিসাবে দেশের প্রকৃত মূল্যস্ফীতির হার এখন ১৫ থেকে ১৭ শতাংশের মধ্যে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শ্বেতপত্র কমিটির হিসাবে চলতি বছরের এপ্রিলে মূল্যস্ফীতি ছিল ১৫ শতাংশ, মে মাসে ১৫ দশমিক ৩, জুনে ১৫, জুলাইয়ে ১৮ দশমিক ১, আগস্টে ১৬ দশমিক ২ ও সেপ্টেম্বরে ১৫ দশমিক ৩ শতাংশ।

উচ্চ মূল্যস্ফীতির ফলে দরিদ্র মানুষের জীবনের চরম অভিঘাত পড়ছে। এটা এক ধরনের অদৃশ্য ঘাতক। সমাজের সচ্ছল ও ধনী মানুষের ওপর এর তেমন প্রভাব না পড়লেও নিম্নআয়ের মানুষের ওপর এর প্রভাব ব্যাপক। শ্বেতপত্র কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও করোনার প্রভাবে দেশের ২৭ লাখ ৫১ হাজার মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে গিয়েছিলেন।

এদিকে, ২০২২ সালে বিশ্বের ১৯৪টি দেশের মধ্যে ১৭৯টি দেশে মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে যায়। কিন্তু পণ্যের দাম কমায় এর পর থেকে মূল্যস্ফীতির হার কমতে শুরু করে। ধারাবাহিকভাবে কমে ২০২৪ সালের জুনে বৈশ্বিক গড় মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়ায় ৫ দশমিক ৯ শতাংশ। অথচ ধারাবাহিকভাবে বাড়তে থাকা বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে ১০ শতাংশের কাছাকাছি রয়েছে। অর্থাৎ একই সময়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশে মূল্যস্ফীতি কমলেও বাংলাদেশে বেড়েছে।

সরকারের সমানে যত চ্যালেঞ্জ: দেশের চাল, ডাল, তেলসহ ভোগ্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে হাতেগোনা কয়েকটি শিল্প গ্রুপ। বিগত সরকারের আমলে এসব গ্রুপের কেউ কেউ ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য খাতে লুটপাটে নেতৃত্ব দিয়েছে। এজন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ শুরু করেছে। সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে এসব গ্রুপ ঐক্যবদ্ধ হলে পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ সরকারের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে।

এ বিষয়ে অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বলেন, দেশের ভোগ্যপণ্যের বাজার অল্প কয়েকটি ব্যবসায়ী গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে হলে বাজারে প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে যেসব ব্যবসায়ী গ্রুপ বিগত সরকারের আমলে লুটপাটে অংশ নিয়েছে, তাদের প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতিবাজদের আইনের আওতায় এনে গ্রুপগুলোকে সচল রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে সতর্কভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে সরকারকে।

তথ্য বলছে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এস আলম, সালমান এফ রহমানসহ কয়েকজন শীর্ষ ব্যবসায়ী দেশের ব্যাংক খাতের ভিত্তি ধ্বংস করে দিয়েছে। বিশেষ করে, রাষ্ট্রায়ত্ত ও শরিয়াহ ভিত্তিক ব্যাংকগুলো থেকে এমনভাবে লুটপাট করা হয়েছে যে, দেড় বছর ধরে ব্যাংকগুলোর তারল্য সংকট সামাল দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে লুটপাটের শিকার ছয় ব্যাংকের তারল্য সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ ব্যাংক ২২ হাজার কোটি টাকার বেশি ছাপিয়ে তাদের সহায়তা দিয়েছে। এটি মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বড় চ্যালেঞ্জে ফেলতে পারে বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।

এ বিষয়ে গবেষণা প্রতিষ্ঠান চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের রিসার্চ ফেলো এম হেলাল আহম্মেদ জনি বলেন, বাজারে ছাড়া টাকাগুলো দীর্ঘ সময়ের জন্য স্থায়ী হলে মূল্যস্ফীতির ওপর প্রভাব তৈরি করবে। এজন্য দ্রুত সময়ের মধ্যে দুর্বল ব্যাংকগুলোর জন্য বাজারে ছাড়া অর্থ তুলে নেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আর সরকার পরিবর্তনের পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। এটা এখন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে নেওয়া গেছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা আর উন্নতি করতে না পারলে সিন্ডিকেট, চাঁদাবাজিসহ অন্য ইস্যুগুলো নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে না, যা মূল্যস্ফীতির ওপর সরাসরি প্রভাব তৈরি করবে। এ ছাড়া বাজার মনিটরিংয়ে ভোক্তা অধিকার ও প্রতিযোগিতা কমিশনের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো আরও কার্যকর করার পরামর্শ এই অর্থনীতিবিদের।

সরকারের উদ্যোগ: অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বেশকিছু উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে প্রধান উদ্যোগ মুদ্রানীতির মাধ্যমে চাহিদা নিয়ন্ত্রণ এবং কিছু নিত্যপণ্যে শুল্কছাড় দেওয়া হয়েছে। সরকারের শেষ সময়ের দিকে মূলত আইএমএফের কাছ থেকে ঋণ নেওয়ার শর্ত হিসেবে মুদ্রানীতির সংকোচন শুরু হয়। আইএমএফের সাবেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আহসান এইচ মনসুর বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর তিন দফা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতি সুদহার বাড়ানো হয়েছে। এখন এই হার ১০ শতাংশ।

বেশকিছু নিত্যপণ্যে শুল্ক ছাড় দেওয়া হলেও তার প্রভাব পড়েনি বাজারে। অধিকাংশ নিত্যপণ্য কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ভোক্তাদের। নানা উদ্যোগ সত্ত্বেও উচ্চ মূল্যস্ফীতি কেন বাগে আসছে না, তা নিয়ে খোদ সরকারের মধ্যেই অস্বস্তি রয়েছে। সরকারের কোনো কোনো উপদেষ্টা অর্থনীতিবহির্ভূত কারণ যেমন পণ্য পরিবহনে চাঁদাবাজি কিংবা সিন্ডিকেটের কথাও বলছেন।

নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে হতাশা প্রকাশ করে অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছিলেন, বাজারে এমনভাবে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়েছে যে, ট্যাক্স কমিয়েও নিত্যপণ্যের দাম কমানো যাচ্ছে না। পণ্যের সরবরাহ ব্যবস্থায় চাঁদাবাজি বন্ধ করা যায়নি। দাম বাড়ানোর সিন্ডিকেট ভাঙা যায়নি। তিনি বলেন, মানুষ বলছে পণ্যের দাম কমছে না, অথচ এনবিআর অনেক সুবিধা দিয়েছে। ট্যাক্স কমিয়ে দিলাম, তারপরও নিত্যপণ্যের দাম কমে না। মানুষ অধৈর্য হয়ে গেছে, এটাই স্বাভাবিক।

ব্যবসায়ীরা বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দৃশ্যমান উন্নতি হয়নি। এর সঙ্গে মূল্যস্ফীতি কমানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির প্রভাবে ঋণের সুদহার অনেক বেড়েছে। অন্যদিকে ডলারের দাম বৃদ্ধি, জ্বালানি সংকট এবং ঘুষ-দুর্নীতির মতো সমস্যা রয়ে গেছে। সব মিলিয়ে কারখানার উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে, যা সরবরাহ শৃঙ্খলে সংকট তৈরি করছে। সম্প্রতি বিভিন্ন ফোরামে ব্যবসায়ী নেতাদের কেউ কেউ দাবি করছেন, মূল্যস্ফীতি কমাতে সুদহার বাড়ানোর নীতি উল্টো উৎপাদন খরচ বাড়িয়ে মূল্যস্ফীতিকেই উসকে দিচ্ছে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতি বাংলাদেশে একটি কাঠামোগত সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুধু সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি দিয়ে এর সমাধান হবে না। বাজারে পণ্যের প্রকৃত চাহিদা নিরূপণ করে পর্যাপ্ত সরবরাহের ব্যবস্থা করতে হবে। মুদ্রানীতি, রাজস্বনীতি এবং বাজার ব্যবস্থাপনা—এই তিনের যথাযথ সমন্বয় ঘটাতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, এনবিআর, ট্যারিফ কমিশন, প্রতিযোগিতা কমিশন, ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ বাজারের সঙ্গে সম্পৃক্ত সরকারি সংস্থাগুলোকে একযোগে কাজ করতে হবে। সূত্র : কালবেলা


logo

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. নজরুল ইসলাম