বাংলাদেশের জন্য আইএমএফের সাড়ে ৬৪ কোটি ডলার ছাড়ে বোর্ড সভা ৫ ফেব্রুয়ারি
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪, 2:42 PM

NL24 News
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৪, 2:42 PM

বাংলাদেশের জন্য আইএমএফের সাড়ে ৬৪ কোটি ডলার ছাড়ে বোর্ড সভা ৫ ফেব্রুয়ারি
মনজুর এ আজিজ : বাংলাদেশের জন্য চতুর্থ কিস্তিতে ৬৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার ছাড় করতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্বাহী বোর্ডের সভায় আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি উপস্থান করা হবে বলে জানা গেছে। বোর্ডের অনুমোদন পেলে ১০ ফেব্রুয়ারি তা ছাড় করা হবে বলে জানিয়েছেন আইএমএফ প্রতিনিধিদলের প্রধান ক্রিস পাপাজর্জিও। বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
সূত্রমতে, আইএমএফের সঙ্গে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচি শুরু হয় ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি। এরপর তিন কিস্তিতে সংস্থাটি থেকে প্রায় ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। চতুর্থ কিস্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারি নাগাদ ৬৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার পাওয়া যেতে পারে। ২০২৬ সাল নাগাদ পুরো অর্থ পাওয়ার কথা রয়েছে।
ক্রিস পাপাজর্জিও বলেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশের পূর্বের শর্ত পূরণের পর ফেব্রুয়ারিতে ৬৪ কোটি ৫০ লাখ ডলারে চতুর্থ ধাপে ঋণ দেবে। এ লক্ষ্যে আগামী বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি প্রস্তাবটি সংস্থাটির নির্বাহী বোর্ড সভায় রাখা হবে। পর্যালোচনা শেষে অনুমোদনের পর ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে অর্থ বিতরণ করা হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির চিত্র খুব একটা আশাব্যঞ্জক নয়, দীর্ঘদিনেও নিয়ন্ত্রণে আসছে না মূল্যস্ফীতি, যা আইএমএফের ধারণার চেয়েও অনেক বেশি।
সংস্থাটির প্রতিনিধিদলের প্রধান বলেন, বাংলাদেশকে সহায়তা দেবার বিষয়ে ইতিবাচক আইএমএফ। তবে অভ্যন্তরীণ আয় বৃদ্ধি এবং ব্যাংক খাতের সংস্কার চলমান রাখতে হবে। বাংলাদেশে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হলেও দেশটির অর্থনৈতিক কর্মকা- উল্লেখযোগ্যভাবে শ্লথ হয়ে পড়েছে। ফলে চলতি অর্থবছর শেষে প্রবৃদ্ধি ৩ দশমিক ৮ শতাংশে নেমে আসবে। তবে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনীতি চাঙা হবে বলে আমার কথা জানান তিনি। এ সময়ে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৭ শতাংশে উন্নীত হবে। একই অর্থবছর শেষে মূল্যস্ফীতি দাঁড়াবে ৫ শতাংশে।
তিনি বলেন, ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের সঙ্গে সরকারপক্ষ থেকে আরও ৩ বিলিয়ন ডলার ঋণসহায়তা চাওয়া হয়। আইএমএফ এই প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য বর্ধিত ক্রেডিট সুবিধা এবং বর্ধিত তহবিল সুবিধাব্যবস্থার অধীনে এক বিলিয়নের নিচে অর্থাৎ ৭৫ কোটি ডলার ঋণসহায়তা দেওয়া হবে।
ক্রিস পাপাজর্জিও বলেন, বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি এখনো উচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। দেশ থেকে যে অর্থ বেরিয়ে গেছে, বিশেষ করে ব্যাংক খাত থেকে যে অর্থ বিদেশে চলে গেছে, তা বিদেশি মুদ্রা রিজার্ভের ওপর চাপ তৈরি করেছে। পাশাপাশি একদিকে রাজস্ব আয় কমেছে, অন্যদিকে খরচের চাপ বেড়েছে। বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ আরও জোরদার হয়েছে আর্থিক খাতের ধকলের কারণে।
চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে গণ-আন্দোলন, বন্যা ও সংকোচনমূলক পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেছে আইএমএফ। তবে নীতি শিথিল হলে আগামী অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি বাড়ার প্রত্যাশা করছে সংস্থাটি। কঠোর মুদ্রানীতি অনুসরণ ও সরবরাহ ব্যবস্থায় উন্নতির ফলে মূল্যস্ফীতি কমবে বলেও মনে করা হচ্ছে। অবশ্য বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গভীর অনিশ্চয়তার আশঙ্কাও করেছে আইএমএফের প্রতিনিধিদল।
উল্লেখ্য চতুর্থ কিস্তি ছাড়ের আগে শর্ত বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা ও নতুন ঋণের বিষয়ে দরকষাকষি করতে গত ৩ ডিসেম্বর থেকে আইএমএফের গবেষণা বিভাগের ডেভেলপমেন্ট ম্যাক্রোইকোনমিকসের প্রধান ক্রিস পাপাজর্জিওর নেতৃত্বে ১৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল ঢাকা সফর করছেন।