ডায়াবেটিস ও যক্ষ্মার সম্পর্ক
স্বাস্থ্য ডেস্ক
২৮ নভেম্বর, ২০২৩, 11:00 AM
স্বাস্থ্য ডেস্ক
২৮ নভেম্বর, ২০২৩, 11:00 AM
ডায়াবেটিস ও যক্ষ্মার সম্পর্ক
আমাদের একটি বিশাল জনগোষ্ঠী ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। আর শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার অন্যতম একটি কারণ হলো ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র রোগ। ডায়াবেটিস রোগী যক্ষ্মায় আক্রান্ত হলে অনেক ক্ষেত্রে রোগ নির্ণয় করতে যথেষ্ট দেরি হয়ে যায়। কারণ ডায়াবেটিস রোগীদের যক্ষ্মার লক্ষণ সাধারণ যক্ষ্মারোগীদের মতো নাও হতে পারে। যদিও যক্ষ্মারোগে প্রধানত ফুসফুস আক্রান্ত হয়ে থাকে কিন্তু ডায়াবেটিস রোগীর ক্ষেত্রে ফুসফুসবহির্ভূত যক্ষ্মা আক্রান্তের হার অনেক বেশি। যক্ষ্মারোগ নির্ণয়ের অন্যতম পদ্ধতি হলো কফ পরীক্ষা করা এবং বুকের ঢ-ৎধু করা। এই দুই ক্ষেত্রে দেখা যায় অনেক সময় ঢ-ৎধু তে যক্ষ্মার লক্ষণ সঠিকভাবে প্রকাশ পায় না এবং কফের মধ্যে জীবাণু পাওয়ার হার অনেক কম।
যক্ষ্মার চিকিৎসার ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস রোগীদের বেলায় অতিরিক্ত সাবধানতার দরকার হয়। সঠিক নিয়মে পূর্ণ মাত্রায় ওষুধ সেবন করলে ডায়াবেটিস রোগীদের বেলায়ও যক্ষ্মার ওষুধ সমানভাবে কার্যকর। তবে ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ খুবই জরুরি। কারণ রক্তে শর্করার পরিমাণ বেশি হলে যক্ষ্মা বিভিন্ন অঙ্গে ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং যক্ষ্মার ওষুধ সঠিকভাবে কাজ নাও করতে পারে। সাধারণত বেশিরভাগ যক্ষ্মা রোগীর ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য ইনসুলিন প্রয়োজন হয়।
তবে যাদের রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা এতবেশি নয় এবং অন্য কোনো ডায়াবেটিসজনিত জটিলতা নেই, তাদের ক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে ইনসুলিনের মাধ্যমে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে এনে পরবর্তীতে ইনসুলিনের পরিবর্তে ডায়াবেটিসের জন্য মুখে খাওয়ার ওষুধ দেওয়া যেতে পারে। এক্ষেত্রে যক্ষ্মা এবং ডায়াবেটিসের ওষুধ একই সঙ্গে প্রয়োগ করার ফলে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হচ্ছে কিনা তার প্রতি বিশেষ লক্ষ্য রাখতে হবে।
ডায়াবেটিস একটি এমন রোগ যার দ্বারা শরীরের বেশির ভাগ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আবার যক্ষ্মাও অনেক সময় শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়তে পারে। এসব ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সাবধানতা প্রয়োজন। যেমন যদি কোনো ডায়াবেটিস ও যক্ষ্মা আক্রান্ত রোগীর বুকে পানি জমে সেক্ষেত্রে যক্ষ্মার ওষুধের সঙ্গে স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ দিতে হয় যা রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়ায়। এক্ষেত্রে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি ইনসুলিন প্রয়োজন হয়।
-লেখক: বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ, মেডিনোভা, মালিবাগ, ঢাকা।